১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৪২ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২৪
গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি শিশুর ভেতর জন্ম নেওয়া আরেকটি শিশু অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সফলভাবে অপসারণ করেছেন একদল চিকিৎসক।
শনিবার (৬ জুলাই) সকালে ওই হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শংকর চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে চিকিৎসকদল বিরল এ অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন করেন। সার্জারির পর শিশুটি সুস্থ অবস্থায় রয়েছে।
৮ মাস বয়সী শিশুটির নাম আব্দুল্লাহ। শিশুটির বাবার নাম এমরান হোসেন। তিনি একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তার বাড়ি গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বিকেবাড়ি এলাকায়। এটি তার প্রথম সন্তান।
ডা. শংকর চন্দ্র দাস বলেন, ফিটাস ইন ফিটু একটি জন্মগত সমস্যা যা সচরাচর ঘটে না। যা প্রতি পাঁচ লাখ শিশুর জন্মে একটি শিশুতে পাওয়া যেতে পারে। সারা বিশ্ব জুড়ে এ রকম ঘটনা ঘটেছে প্রায় দুইশতেরও কম। বাস্তবে এটি হল এমন একটি অবস্থা যেখানে একটি শিশুর ভেতর আরেকটি শিশু থাকে। গর্ভাবস্থায় অনেক সময় জমজ না হয়ে এক ভ্রুণের ভেতর অন্য একটি ভ্রূণ ঢুকে যেতে পারে। দেশেও এ জাতীয় রোগীর অপারেশন হয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি। আর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ জাতীয় অস্ত্রোপচার এটিই প্রথম।
তিনি আরও বলেন, মায়ের পেটে যখন বাচ্চা আসে, অর্থাৎ অতি শুরুতে ডিম্ব নিষিক্ত হওয়ার পর কোষ বিভাজন হতে হতে সাধারণভাবে একটি বাচ্চার জন্ম হয়। কিন্তু কোষ বিভাজনের কোনো এক পর্যায়ে যদি কোষগুলো সমান দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়, তবে দুইটি জমজ বাচ্চার জন্ম হতে পারে। কিন্তু কোষগুলো অসমান দুই ভাগে ভাগ হলে বেশি কোষযুক্ত ভাগ থেকে সাধারণত একটি সুস্থ শিশু জন্ম হয় এবং কম কোষযুক্ত ভাগ থেকে অপর একটি বাচ্চা বড় হতে শুরু করে। কিন্তু ওই বাচ্চাটির সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে তৈরি হয় না। এই বাচ্চাটি পরবর্তী সময়ে সুস্থ বাচ্চাটির শরীরের ভেতর ঢুকে পড়ে এবং বেঁচে থাকার জন্য সুস্থ বাচ্চাটির দেহ থেকে রক্তনালীর মাধ্যমে খাদ্য সংগ্রহ করে। এই দ্বিতীয় বাচ্চাটিকেই বলা হয় ফিটাস ইন ফিটু।
এই ফিটাস ইন ফিটু শিশুটির সাধারণত ব্রেইন তৈরি হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেরুদণ্ডের হাড় তৈরি হয়। ক্ষুদ্র আকারে হাত-পা তৈরি হয়। অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে তৈরি হয় না। শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে এই ফিটাস ইন ফিটু শিশুটির অবস্থান হয় সুস্থ শিশুটির পেটের ভেতর। বাকি ২০ ভাগ ক্ষেত্রে শিশুটির অবস্থান হতে পারে বুকের ভিতর, তলপেটে, মাথার ভিতর, মুখের ভেতর, অন্ডকোষের ঝুলির ভেতর অথবা পায়ুপথের পেছনে। এ শিশুটির ফিটাস ইন ফিটু সেক্রোকক্সিসিজায়ায় রিজিওন এরিয়ায় এটি তার পায়ু পথের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
শিশুটির বাবা এমরান হোসেন জানান, শিশুটি গর্ভে আসার পর প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে তার আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। সেখানে শিশুটির এমন অবস্থা নির্ণয় করা যায়নি। পরে ওই হাসপাতালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে শিশুটি ভূমিষ্ঠ হলে শিশুটির পায়ুপথের কাছে একটি মাংসের পিন্ডের মতো দেখতে পান। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে শিশু সার্জারি বিশেষজ্ঞ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক শংকর চন্দ্র দাসের শরণাপন্ন হলে তিনি শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে ওই হাসপাতালেই শনিবার শিশুটির অস্ত্রোপচার করা হয়।
প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচারের সময় সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাবিব সেলিম খাজা, সার্জারি বিভিাগের সহকারী অধ্যাপক সামসুল হুদা, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মনিরুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক মইনুল হোসেন চৌধুরীসহ সার্জারি, অ্যানেস্থেশিয়া, আইসিইউ বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ উপস্থিত ছিলেন।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D