ডালিম খাওয়ার যত উপকারিতা

প্রকাশিত: ৪:৩৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৬, ২০২৫

ডালিম খাওয়ার যত উপকারিতা

ডালিম; সুমিষ্ট একটি ফল। আনার, বেদানা বা ডালিম—যে নামেই ডাকুন না কেন, কমবেশি সবারই পছন্দের ফল।

ডালিমের খোসা ছাড়িয়ে প্রতিটি দানা বের করা খানিকটা শ্রমসাধ্য ও ধৈর্যের ব্যাপার বটে। তবে এর পুষ্টিগুণের কথা বিবেচনা করলে হয়তো ভাববেন, এতটুকু শ্রম দেওয়াই যায়। সংক্রমণ প্রতিরোধ, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, রক্তচাপ বশে রাখার মতো উপকারিতা আছে ডালিমে।

গবেষকেরা পুষ্টি বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, এক বাটি (১৪৪ গ্রাম) ডালিমে ৯৩ ক্যালরি শক্তি, ২ দশমিক ৩০ গ্রাম প্রোটিন, ২০ দশমিক ৮৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ০ দশমিক ১৪ গ্রাম ফ্যাট থাকে। জেনে নিন, কোন কোন উপকার পেতে প্রতিদিন এক বাটি ডালিম খাবেন।

ডালিম আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। ডালিম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে; রোগ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে; স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে; কর্মক্ষমতা বাড়ায়, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। ডালিমকে বলা হয় প্রাকৃতিক ইনসুলিন।

গবেষকরা বলছেন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এই ডালিম। সুস্থ থাকতে চাইলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, রক্তচাপ কম বা বেশি হলে নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত ডালিমের রস খেতে পারেন।

মৌসুমি রোগে ভুগেন অনেকেই। এটা হয়ে থাকে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমার কারণে। এ জন্য প্রতিদিন ডালিমের রস খেতে পারেন। কারণ, ডালিমের রসে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী গুণাগুণ আছে। রোজ ডালিম খেলে শরীরের ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়ার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

ডালিম স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, টানা চার সপ্তাহ বা প্রায় এক মাস ডালিমের রস খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে। হার্ট সার্জারি বা আলঝেইমারস ডিজিজে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ডালিম খেলে বিশেষ উপকার পাবেন। পাশাপাশি শিশুরা খেতে পারে ডালিমের রস।

ডালিম কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করেন, তাদের জন্য ডালিম হতে পারে উপকারী বন্ধু। কাজ করার আগে কিছুটা ডালিমের রস খেলে কাজে বাড়তি উদ্যম মেলে। তা ছাড়া যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাদের জন্যও বেশ উপকারী। ব্যায়াম শুরু করার ৩০ মিনিট আগে এক বাটি ডালিম খেলে পেশিতে রক্তপ্রবাহ ভালো হয়। তা ছাড়া ডালিমে আছে নাইট্রেট, যা অ্যাথলেটদের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। পাশাপাশি ডালিমে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট নানাভাবে আমাদের জন্য উপকারী।

ডালিমের রস ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। বিশেষত ফুসফুস ও স্তন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের কোনো কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ডালিমের রস সে ক্ষত সারিয়ে তুলতে পারে।

এই পাঁচ সুবিধার পাশাপাশি আরও অনেক সুবিধা পাবেন ডালিম খেলে। যেমন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি, রক্তশূন্যতা এবং হাড়ের ব্যথা কমবে; হজমশক্তি ও রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়বে। এমনকি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যও ডালিম উপকারী। বিশেষজ্ঞরা ডালিমকে বলেন প্রাকৃতিক ইনসুলিন।