১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:২৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১০, ২০২৪
সিলেটের কানাইঘাটে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন (৬) কে হত্যা করেছে তার গৃহশিক্ষক শামীমা বেগম মার্জিয়া। এতে মার্জিয়াকে সহযোগীতা করেন তার মা। রোববার ভোরে সুমির মা আলীফজান বিবি মুনতাহার মরদেহ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন।
এসময় মুনতাহার মরদেহ কোলে করে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলার চেষ্টা করছিলেন ওই নারী। প্রায় এক সপ্তাহ মরদেহ কাঁদামাটিতে চাপা থাকায় গলে পঁচে মাথার খুলি বেরিয়ে গেছে, জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আওয়াল জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক শামীমা বেগম মার্জিয়া, তার মা আলীফজান বিবি ও আলীফজানের মা কুতুবজান বিবিকে আটক করা হয়। এই ঘটনার পর বিক্ষোব্ধ জনতা মার্জিয়ার বসতঘর গুড়িয়ে দেন। তারা মুনতাহাদের পশের বাসারই বাসিন্দা।
৭ দিন নিখোঁজ থাকার পর রোববার (১০ নভেম্বর) ভোর চারটার দিকে মুনতাহার পুঁতে ফেলা মরদেহ তুলে পুকুরের পানিতে ফেলার সময় স্থানীয়রা গৃহশিক্ষিকার মা আলিফজান বিবিকে হাতেনাতে আটক করেন। এবং শিশু মুনতাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত ৩ নভম্বের দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিলো কানাইঘাট উপজেলার এই শিশু। মুনতাহা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদলের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে। মুনতাহার নিখোঁজের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় হয়। তার সন্ধান চেয়ে দেশ-বিদেশে অনেকে পুরষ্কারও ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, ঘটনার দিন গত রোববার (৩ নভেম্বর) আমার বাড়িতে খেলা করছিল। ওইদিন শিশুটিকে ধরে নিয়ে হত্যার পর মরদেহ ঘরের পাশে খালে পুঁতে রাখা হয় কল্পনা করতে পারিনি।
তিনি আরও জানান, শামিমা বেগম মার্জিয়া মুনতাহার প্রতিবেশি ও তার গৃহশিক্ষক। একসময় ভিক্ষা করতেন মার্জিয়ার মা ও নানী। মার্জিয়াকে তার স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন। ফলে বাড়ির বাইরে গেলে মুনতাহাকে সঙ্গে নিতেন মার্জিয়া। সবাই তাকে বিশ্বাসও করতেন। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা জানা যায়নি। সম্প্রতি মার্জিয়ার পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, গত রাতেই (শনিবার) সন্দেহবশত আমরা মুনতাহার হাউস টিউটর শামীমা বেগম মার্জিয়াকে ধরে নিয়ে আসি। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হচ্ছিলো। তখন হাউস টিউটরের বাড়ির দিকে নজর রাখার জন্য রাতেই আমরা মুনতাহার পরিবারের সদস্যদের বলি। এরপর ভোররাতে মরদেহ উদ্ধারের পর তাকে আটক দেখানো হয়।
তিনি আরও বলেন, মুনতাহার মরদেহ খাল থেকে সরিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলার চেষ্টা করে। মূলত; হত্যাকারীর উদ্দেশ্য ছিল মুনতাহার মরদেহ পুকুরে ফেলে মূল ঘটনা ব্যাহত করার চেষ্টা করেছিলেন অভিযুক্তরা।
তিনি বলেন, ভোরের দিকে মুনতাহার পরিবারের সদস্যরা দেখতে পান বাড়ির পাশের একটি ছড়ার মাটি খুঁড়ে মুনতাহার মরদেহ পাশের পুকুরে ফেলে দেন ওই হাউস টিউটরের মা। সাথে সাথে আমাদের খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি এবং হাউস টিউটরের মা ও তার নানীকে ধরে নিয়ে আসি।
ওসি বলেন, আমাদের জিজ্ঞাসাবাদে হাউস টিউটর ও তার মা মুনতাহাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তবে কি কারনে হত্যা করা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। পূর্ব বিরোধের কারণে এটি হয়ে থাকতে পারে।
মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ বলেন, মরদেহ এখন ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালের মর্গে আছে।
এরআগে মুনতাহার পরিবার দাবি করে, তাকে পরিকল্পিতভাবে ‘অপহরণ’ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী দায়ের করা হয়েছিলো। ‘অপহরণকারীকে’ ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরুস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিলো।
গত ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফিরে মুনতাহা। পরে প্রতিদিনের মতো দুপুরে আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। কিন্তু বিকেলে বাড়ি না ফিরলে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D