আজ অবধি আমার বাবার হত্যার বিচার পাইনি : ড. নাজলী কিবরিয়া

প্রকাশিত: ১:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০১৭

আজ অবধি আমার বাবার হত্যার বিচার পাইনি : ড. নাজলী কিবরিয়া

Manual1 Ad Code
এক এক করে ১২বছর আমরা এই বনানী কবরস্থানে এসেছি। কিন্তু আজ অবধি আমার বাবার হত্যার বিচার পাইনি। যাদের নাম চার্জশীটে ছিল তাদের অনেকেই ধরা ছোঁয়ার বাহিরে আর যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তারাও মুক্ত। তাই বর্তমান অবস্থায় হতাশ কিবরিয়া পরিবার।’- এমনটিই জানালেন শাহ এ এম এস কিবরিয়া’র কন্যা বোস্টন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড.  নাজলী কিবরিয়া।

শুক্রবার সকাল ১০টায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ১২ তম মৃত্যু বার্ষিকীতে বনানী কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারতের পর কিবরিয়া কন্যা  ড. নাজলী কিবরিয়া আরও বলেন, আমরা চাই সরকার যতদ্রুত সম্ভব যেন অপরাধী ও মদদ দাতাকারীদেও আইনের আওতায় আনেন এবং বিচার নিশ্চিত করেন।

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার এক যুগ পূর্ণ হচ্ছে আজ শুক্রবার। তার ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল সাড়ে নয়টায় বনানী কবরস্থানে আসেন পরিবারের সদস্যরা। প্রথমে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেতারা কিবরিয়ার কবরে ফুল দিয়ে প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এরপর তার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে দোয়া করেন পরিবারের সদস্যরা। এসময় তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

Manual2 Ad Code

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা শেষে ফেরার সময় দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া ও তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী। এছাড়া মারাত্মকভাবে আহত হন হবিগঞ্জ-লাখাই আসনের বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ বেশ কয়েকজন।

Manual2 Ad Code

এ ঘটনায় হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন আব্দুল মজিদ খান। তিনি বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ। উভয় মামলায় একাধিকবার তদন্ত এবং নানা আইনী জটিলতায় এক যুগেও আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ হয়নি। এখনও পর্যন্ত মামলায় ১৭১ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৪৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বিচারের এই দীর্ঘসূত্রিতায় ওই হত্যাকাণ্ডে নিহত ৫ জনের পরিবারে শঙ্কা তৈরী হয়েছে।

Manual6 Ad Code

সর্বশেষ তদন্তে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জের মেয়র জি কে গউছসহ ৩২ জনকে আসামিভুক্ত করা হয়। এসব আসামিদের মধ্যে আরিফুল হক চৌধুরী ও জি কে গউছসহ ১০ জন উচ্চ আদালত থেকে জামিনে, ৮ জন পলাতক ও ১৪ জন কারাগারে আটক আছেন।

Manual8 Ad Code

মামলা দুটির বাদী আব্দুল মজিদ খান এমপি গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্তে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়েছে। মামলায় সাক্ষী অনেক। ইতিমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের ৪৩ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের কেউ কেউ এখনো বাকি রয়ে গেছেন। ফলে দেরি হওয়ার জন্য নিহতদের পরিবারে কিছু শংকা থাকতেই পারে।

এ ঘটনায় আহত জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির গণমাধ্যমকে বলেন, কখনও সাক্ষী হাজির হয় না, আবার কখনো আসামি হাজির না থাকায় সাক্ষ্য নিতে পারেন না বিচারক। এ পরিস্থিতির কারণে মূলত বিচার বিলম্বিত হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, শাহ এএমএস কিবরিয়া ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং দলের উপদেষ্টা মনোনীত হন। ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনেও তিনি হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর-লাখাই) আসনে বিজয়ী হন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code