মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফর নিয়ে মিথ্যাচার করেছে সরকার এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, র‍্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য নিয়ে মিথ্যাচার করেছে সরকার। যা মার্কিন দূতাবাসের বিবৃতিতে প্রমাণিত হয়েছে।

বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে দলটির স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত জানাতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দলটি। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

ফখরুল বলেন, নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমরা আনন্দিত নই, এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। নিষেধাজ্ঞা আসা উচিত সরকারের বিরুদ্ধে। জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কর্মসূচির সময় আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণা করার তীব্র সমালোচনা করেন। মির্জা ফখরুল বিএনপির কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগকে কর্মসূচি না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, একই দিনে কর্মসূচি দিলে কোনো পরিস্থিতির তৈরি হলে এর দায় আওয়ামী লীগকে নিতে হবে।

বিরোধী দলকে দমন করতে ইসরাইল থেকে নজরদারির প্রযুক্তি কেনা হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট যোগাযোগের ওপর নজরদারি করার জন্য ইসরাইলি এক কোম্পানির কাছ থেকে প্রযুক্তি ক্রয় করা হয়েছে বলে দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, যা গভীর উদ্বেগের। একই সাথে সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর টেলিফোনে আড়িপাতার বিষয়ে আইন প্রণয়নের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, অনির্বাচিত সরকার তাদের অবৈধ উপায়ে দখলকৃত ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার লক্ষে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নজরদারিতে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি ক্রয় ও আড়িপাতার আইন প্রণয়ন করতে চলেছে। এই ভয়াবহ আইন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অগণতান্ত্রিক আচরণ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। অবিলম্বে এই সব প্রযুক্তি ক্রয় করা ও আইন প্রণয়নের অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সভায় গত চার বছরে ১ হাজার ২০৯টি মামলা দায়ের হওয়াতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে, এই নিবর্তনমূলক আইনের মাধ্যমে ভিন্নমত পোষণকারী ব্যক্তি, সংবাদ কর্মী, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও আটকের মাধ্যমে জনগণের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকারের ওপর মারাত্মক আঘাত করা হচ্ছে ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। নিরপরাধ ব্যক্তিদের ওপর এই আইনের অপপ্রয়োগের ফলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। অবিলম্বে এই আইনের আওতায় বন্দী ব্যক্তিদের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান।