রোহিঙ্গা নির্যাতনের বর্ণনা শুনে স্তম্ভিত মার্কিন দূত

প্রকাশিত: ৩:০৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৬

মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা শুনে স্তম্ভিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ দূত ডেভিড স্যাপারস্টেইন।

কক্সবাজারে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত শরণার্থীশিবিরে গিয়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার কথা শুনেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আমেরিকান সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ দূত এসব কথা জানান।

ডেভিড স্যাপারস্টেইন বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার মায়ানমারের গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিলেও সবগুলো এখনো তুলে নেয়নি।

রোহিঙ্গাদের অধিকারসহ ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মানবাধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে না যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরির অংশ হিসেবে ডেভিড স্যাপারস্টেইন ভারত ও বাংলাদেশ সফরে আসেন।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ছাড়াও সরকারের জ্যেষ্ঠ কয়েকজন কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।

এ সফরের সময় রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি জানতে কক্সবাজার যান তিনি।

ডেভিড স্যাপারস্টেইন বলেন, ‘সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পর যেসব লোকজন বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন, তাদের নিজেদের মুখেই সেসব লোমহর্ষক বর্ণনা শুনেছি। ধর্ষণ, বেধড়কভাবে মারধর, লোকজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারাসহ বিভিন্ন ঘটনা আমাদের জানিয়েছেন পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা।

মূলত সীমান্তচৌকিতে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার পর এসব হয়েছে। এটাও মানতে হবে ওই হামলার পর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটা মায়ানমার সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

ওই হামলার পাল্টা জবাব দিতে নিরাপত্তা বাহিনী গ্রাম ঘিরে ফেলে অভিযান চালিয়েছে। তবে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক নিধনযজ্ঞ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লোকজনের বর্ণনা শুনে মনে হয়েছে, এসব হামলার পেছনে জোরালো ধর্মীয় উপাদান আছে। নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনের যে বর্ণনা লোকজনের কাছে শুনেছি তা চমকে যাওয়ার মতো।’

ডেভিড স্যাপারস্টেইন আরো বলেন, মায়ানমারের গণতন্ত্রের সাফল্য রাখাইন প্রদেশের সমস্যা বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয়টি সুরাহার সঙ্গে যুক্ত। পাশাপাশি সেখানকার সংখ্যালঘুদের মনে যে ক্ষত আছে, তা শুকানোর উদ্যোগ নিতে হবে। রাখাইন রাজ্যে আসলেই কী ঘটেছিল, তা দেশটির সরকারকে একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বের করতে হবে। কে ও কেনো তা ঘটিয়েছে সেটি বের করে ঘটনায় দায়ী লোকজনকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মায়ানমারের প্রতি এই আহ্বান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।