২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৫০ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
সিলেটের কানাইঘাটে দুই সন্তানের জননী সিরিয়া বেগমকে হত্যার অভিযোগে স্বামীসহ পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং- ২১, তারিখ ২১/১০/২০১৬ইং। পুলিশ স্বামী শহীদকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরন করেছে।
মামলার বিবরনে উল্লেখ করা হয়, দেবর-ভাবীর অবৈধ সম্পর্কে বাঁধা হওয়ার কারনে পরিকল্পিত ভাবে সিরিয়া বেগমকে হত্যা করেছে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন। এমন অভিযোগ করে সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সিরিয়ার স্বামীসহ পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে দরখাস্ত মামলা দায়ের করেন সিরিয়ার ভাই আব্দুল হালিম। সিআর মামলা নং- ১৭৪/২০১৬ইং। তারিখ-০৩/১০/২০১৬ইং। আদালত তদন্ত পুর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কানাইঘাট থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কানাইঘাট উপজেলার দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউপির নিজ দলইকান্দি (গুলালপাড়া) গ্রামের ইউসুফ আলীর কন্যা সিরিয়া বেগম (২৬) কে বিগত ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর বিয়ে করেন কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোসাইনপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের পুত্র আব্দুস শহিদ (২৮)। বিয়ের পর ৪ বছর স্বামী-স্ত্রীর সুখের সংসার ছিল। এসময় তাদের ঔরষে সোহরাব হোসেন (৪) ও মেহরাব হোসেন (২) নামে দুই সন্তানের জন্ম হয়। স্বামীর ঘরে কুলের দু’সন্তান নিয়ে সিরিয়ার সুখের দিন কাটতে দেখে তা মেনে নিতে পারেনি সিরিয়ার ভাসুরের স্ত্রী ফয়জিয়া বেগম (৩০)। তার স্বামী আব্দুল মুহিত তিন বছর আগে মারা যান। তার পর থেকে ৪ সন্তান নিয়ে দেবর শহীদের পাশের রুমে থাকতেন ফয়জিয়া। এই সুযোগে ফয়জিয়া সহজে সিরিয়ার স্বামী শহিদের সাথে গড়ে তুলেন অবৈধ সম্পর্ক। তাই কারণে-অকারণে দেবর-ভাবী মিলে অমানবিক নির্যাতন ও মারপিট করতেন সিরিয়াকে। আর সিরিয়াও কুলের সন্তানের দিকে চেয়ে তা মেনে নিতেন।
সিরিয়ার ভাই আব্দুল হালিম মামলায় উল্লেখ করেন, ঘটনার আগে ফয়জিয়ার সাথে অবৈধ চলাফেরা দেখে সিরিয়া তার সৎ শাশুড়ী হাওয়ারুন বেগমকে বিষয়টি অবগত করলে সিরিয়ার বড় ভাসুর আব্দুলাহ (৪৫), দেবর সাদিকুর রহমান (২৫), ভাসুরের স্ত্রী নেহার বেগম (৩৫) সিরিয়াকে জানান, দেবর-ভাবীর সম্পর্কে তারা অবৈধ কিছু দেখছেন না। আর একজন পুরুষ ৪জন বউ রাখতে পারে। তাই ফয়জিয়াকে সিরিয়ার স্বামীর সাথে বিয়ে দেওয়া হবে বলে তারা সিরিয়াকে জানান। এরপর থেকে তারা বিভিন্ন সময় সিরিয়াকে গালিগালাজ ও মারপিট করতেন। ঘটনার তিনদিন পুর্বে রাত ২টার দিকে সিরিয়া ঘুম থেকে জেগে তার স্বামীকে না পেয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। পরে পাশের রুম থেকে স্বামী বের হয়ে আসছে দেখে চিৎকার দিলে স্বামী সহিদ তার ভাবী ফয়জিয়াকে নিয়ে সিরিয়ার মুখ চেপে ধরে তাকে মারপিট করে। পরদিন সিরিয়া পিত্রালয়ে গিয়ে তাদের কাছে ঘটনাটি জানায়।
সিরিয়ার ভাই আব্দুল হালিম জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধায় সিরিয়া তাকে মোবাইল ফোনে জানায়, স্বামী সহিদ ও ভাসুরের বউ ফয়জিয়া তাকে অশ্লীল ভাষায় গালীগালাজ করে মারপিট করেছে। পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টায় সিরিয়ার স্বামী তাকে মোবাইল ফোনে জানায় সিরিয়া ঘরের দরজা খুলছে না তুমি তাড়াতাড়ি আমাদের বাড়ীতে আসো। এতে তার বোনকে আগের দিনের মারপিটের ঘটনায় তার সন্দেহ হয়। তাই সে তার আত্নীয় স্বজনসহ কানাইঘাট থানা পুলিশ নিয়ে বোনের বাড়ীতে গিয়ে অনেক ডাকাডাকির পরও ঘরের দরজা না খুলায় পুলিশ দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় দেখা যায় গায়ের উড়নার টুকরা ও বিছনার চাদরের টুকরা দিয়ে গলায় পেছানো অবস্থায় সিরিয়া গেমের দেহ ঘরের তীরের সাথে ঝুলছে। ঘটনাটি দেখে সে (আব্দুল হালিম) সাজানো দাবী করলে বাড়ির সবাই পালিয়ে যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর সিরিয়ার স্বামী আব্দুস শহিদকে আটক করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হলে কিছু বলা যাবে না। তিনি বলেন, সিরিয়া বেগমের মৃত্যুর ঘটনাটি হত্যা না আত্বহত্যা সমুহ বিষয়টি ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর বুঝা যাবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কানাইঘাট থানার এসআই রবিউল ইসলাম জানান, নিহত সিরিয়ার পিতা-মাতার অভিযোগের ভিত্তিতে সিরিয়ার স্বামী শহিদকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত আসামীরা এ ঘটনায় জড়িত কিনা এবিষয়ে তদন্ত চলছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর সবকিছু জানা যাবে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D