ক্যান্সার আক্রান্ত মেধাবী ছাত্র ‘অর্ক’ বাঁচতে চায়

প্রকাশিত: ৮:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩, ২০১৬

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য.. একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু… মানুষ মানুষকে পণ্য করে, মানুষ মানুষকে জীবিকা করে পুরনো ইতিহাস ফিরে এলে লজ্জা কি তুমি পাবে না? ও বন্ধুৃৃৃ… ভুপেন হাজারিকার এই গানটা প্রথম শুনেছিলাম কোন একটা বাংলা ছবিতে। কিন্তু গানটা যে কত সত্য তা আমরা অনুভব করি প্রতিনিয়ত। তাই না চাইতেও দেখা যায় আমরা অনেক মানুষকে ভালবাসি এবং তাদের জন্য কিছু করতে অন্তর থেকে সাড়া পাই। ‘তাই বলি- মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য.. একটু সহানুভুতি কী অর্ক পেতে পারে না, ও বন্ধুরা…’
মূল কথায় আসি। নাম: সেন্টু রঞ্জন দাস অর্ক। রাজধানী ঢাকার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ২য় বর্ষের (৪৪তম আবর্তন) মেধাবী শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসজুড়ে রয়েছে সবুজের সমাহার, যেন শ্যামল বাংলার অধিক শ্যামল অংশটি এখানে। পুরো ক্যাম্পাসের ভূমিতেও রয়েছে বিচিত্রতা। কোথাও উঁচু, আবার কোথও নিচু কিংবা সমতল। রয়েছে ছোট ছোট পাহাড়ের মতো বেশকিছু উঁচু জায়গা। লাল মৃত্তিকার এ ক্যাম্পাসের পরিবেশ ও নৈসর্গিক দৃশ্য খুবই চমৎকার। ক্যাম্পাসের চারপাশে রয়েছে লোকপ্রশাসন কেন্দ্র, ডেইরি ফার্ম আর স্মৃতিসৌধের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এসবের মাঝে আঁকাবাঁকা রাস্তা আর সবুজে ঘেরা ৭০০ একরের আবাসিক ক্যাম্পাস। আর্কের এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব কিছুতেই বিচরণ করার কথা। মনোযোগ দিয়ে ক্লাশ করার কথা, বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠার কথা, জীবনের লক্ষ্য অর্জনে নিজেকে প্রস্তুত করে গড়ে তুলার কথা। ঠিক সেই সময়ে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে প্রকৃতির নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে সে আজ হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সাথে সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তার শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধি ক্যান্সার (Lymphocyte Rich Classical Hodgkin Lymphoma)। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অর্কের উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে প্রায় পঁয়ত্রিশ (৩৫) লক্ষ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু পিতৃহীন এই ছেলেটির পরিবারের একার পক্ষে এই খরচ বহন করা সম্ভব নয়।
তাই বলে কি সদা হাস্যোজ্জ্বল, অসীম দৃঢ় মানসিকতা সম্পন্ন অর্ক হার মানবে তার নিয়তির কাছে? এই পরাজয়ের গøানি কি শুধু তার একার হবে? না, বরং তার দায়ভার আমাদের প্রত্যেকের উপর-ই বর্তাবে।
২ অক্টোবর রোববার যখন খোজ-খবর নিতে মোবাইল ফোনে কথা বলেছিলাম। অর্ক তখন অসহায়ের মত কান্নাঁ ভেজা কণ্ঠে বলেছিলো- বন্ধু আমি কী আর সুস্থ হবো-না? পারবনা মায়ের স্বপ্ন পুরণ করতে? ছোট ভাইয়ের পড়ালেখার ও বোনের বিয়ের খরচ যোগাতে? আগের মত গ্রামের নদীর পারে বসে তদের সাথে আড্ডা দিতে? জাহাঙ্গীরনগরের সবুজ চত্বরে বিচরণ করতে? বলেছিলো- বন্ধু আমার পড়ালেখা শেষ করতে আর মাত্র দু’বছর সময় লাগে। আমি কী পারবনা- পড়ালেখা শেষ করে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব, দেশ ও দেশের মানুষের পাশে দাড়াতে? মৃত বাবার স্বপ্ন পুরণ করতে?।
অর্কের বাবার স্বপ্ন ছিল সে ডাক্তার হয়ে পরিবারের হাল ধরবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়- ২০১৩ সালে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ না পাওয়ার খবর শোনে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান বাবা সুবুদ রঞ্জন দাস। বড় ভাই বেকার হওয়ায় এরপর থেকেই পরিবারের দায়িত্বটাও বর্তায় অর্কের কাঁধে। টিউশনি করে নিজের ও পরিবারের খরচ যুগিয়ে ভালোই চলছিল। কিন্তু ভাগ্যদেবী কাছে অসহায় অর্ক।
অর্কের চাওয়াটা কি খুব বেশি কিছু? সে চায় মায়ের স্বপ্ন পূরণ করে এই পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকতে, জাহাঙ্গীরনগরের সবুজ চত্বরে বিচরণ করতে, পরিবারের হাল ধরতে। আমরা কি পারি না এই সামান্য চাওয়াকে বাস্তবে রূপদানে সহযোগিতা করতে? অবশ্যই পারি। আমাদেরকে পারতেই হবে। আর তাই সবার কাছেই প্রত্যাশা- একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু ঠেকাতে আপনাদের সহযোগিতার হাতটি বাড়িয়ে দিন। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রয়াস-ই পারে অর্ককে একটি সুস্থ, স্বাভাবিক জীবন উপহার দিয়ে আবার আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনতে, পুনরায় তাকে স্বপ্নের পথে জাল বিস্তার করা শেখাতে।
সেন্টু রঞ্জন দাস অর্ক সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কলাইয়া গ্রামের মৃত সুবুদ রঞ্জন দাসের ছেলে। তিন ভাই-এক বোনের মধ্যে অর্ক দ্বিতীয়। বড় ভাই সিন্ধু রঞ্জন দাস বেকার। ছোট ভাই বিপ্টু রঞ্জন দাস সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজের ইন্টার প্রথমবর্ষের ছাত্র। ছোট বোন হেপি রাণী দাস বেশির ভাগ সময়ই অসুস্থ থাকে। মা গৃহীনি।
অর্ক ২০১১ সাথে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে ও সিলেট এমসি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে কৃতিত্বের সহিত পাস করে।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা: বিকাশ নম্বর: ১. ০১৯২১৭২৯৩৯৯ (পার্সোনাল) ২. ০১৭২২৮৯৯৭১৫ (পার্সোনাল) ৩. ০১৯২৮৪০১২৬০ (পার্সোনাল), অথবা
ডাচ বাংলা মোবাইল একাউন্ট নং ০১৭৭৫১৩১১৩১১, ব্যাংক একাউন্ট: Name of the Account: MD. Abdul Jalil, Account No: ১৮৬.১০৫.৯২৩৬ ((Dutch-Bangla Bank Ltd.)
যে কোন প্রয়োজনে: ১. তানজিল (৪১তম আবর্তন-ফার্মেসি)- ০১৭২২৮৯৯৭১৫। ২. আব্দুল জলিল (৪২তম আবর্তন-ফার্মেসি)- ০১৯২৯৬৭৬৯৮৯। ৩. আফরা নাওয়ার (৪২তম আবর্তন-ফার্মেসি)- ০১৮৫০০৬৭০৬৩। ৪. তাসনিম হক নওমি (৪২তম আবর্তন-ফার্মেসি)- ০১৭৮১৪৪৮৯৭৪। ৫. হৃদয় কুমার দে (৪৪তম আবর্তন-ফার্মেসি)- ০১৭৭১৮৯৩৮৭৮। ৬. ইয়াহ্ইয়া মারুফ (সাংবাদিক)-০১৭৩২৪৭২৪৭৪।
লেখক: সেন্টু রঞ্জন দাস অর্কের বন্ধু, দৈনিক উত্তরপূর্বের স্টাফ রিপোর্টার।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট