‘নতুন সিলেট’ গড়ার লক্ষ্যে আরিফুল হক চৌধুরীর ইশতেহার ঘোষণা

প্রকাশিত: ১১:৪০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৬, ২০১৮

২৬ জুলাই ২০১৮, বৃহস্পতিবার : নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন আরিফুল হক চৌধুরী। বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন। সুরমা নদী খনন, ড্রিম টিম গঠন,বিশ্বমানের পর্যটন নগরীর পাশাপাশি পরিকল্পিত ‘নতুন সিলেট’ গড়ে তুলবেন বলে তিনি ইশতেহারে অঙ্গীকার করেন।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরীর শাহী ঈদগাহস্থ নিজের নির্বাচনী প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দফার এ ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি। ঘোষিত ইশতেহারে সিলেটের পরিকল্পনা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নতুন সিলেটে থাকবে মেট্রোরেল কিংবা টিউব (আন্ডারগ্রাউন্ড রেল)। থাকবেনা যানজট। তৈরি হবে সিলেট টাওয়ার।

‘নতুন সিলেট’ হবে পরিচ্ছন্ন উল্লেখ করে ইশতেহারে আরিফ বলেন, ‘নতুন সিলেটে’ থাকবেনা কোন তারের জঞ্জাল, তার যাবে আন্ডারগ্রাউন্ড দিয়ে। থাকবে খোলা উদ্যান। বহুতল বিশিষ্ট পার্কিং ভবন থাকবে। সবার আন্তরিকতা এবং ত্যাগের মানসিকতা থাকলে নতুন সিলেট গড়া অলীক স্বপ্ন নয় বলেও উল্লেখ করেন আরিফ।

এছাড়া ইশতেহারে আরিফ বলে, হকারদের পুনর্বাসনের লক্ষে ইতিমধ্যে অপরিকল্পিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো লালদিঘী মার্কেট ভেঙ্গে ভেলা হয়েছে। এখানে নতুন সুপরিসরে মার্কেট নির্মাণ করে হকারদের পুনর্বাসন করা হবে।

ইতিমধ্যে হকারদের তালিকা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে তাদের স্থায়ী ঠিকানা হবে। নির্বিঘ্নে তারা ব্যবসা করে অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। এছাড়াও এই মার্কেটে ইতিমধ্যে যারা বরাদ্দ নিয়েছেন তাদের জায়গা দেওয়া হবে।

আরিফ বলেন, সিলেট নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে পরীক্ষামূলকভাবে ওয়াইফাই চালুর কাজ শুরু করা হয়েছে। এক্ষেত্রে দেশের অন্যতম ইন্টারনেট প্রোভাইডার কোম্পানির সাথে আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে। আমি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হলে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে। নগরীর প্রাণ কেন্দ্রে তথ্য প্রযুক্তি ভবন গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি আরো বলেন, টাউন বাস প্রাইভেট কারের আধিক্য কমানোর লক্ষ্যে স্কুলভিত্তিক বাস চালুর পাশাপাশি রাস্তা প্রশস্তকরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে। ট্রাক টার্মিনাল চালু করা হবে এবং কদমতলী বাস টার্মিনালকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরিত করা হবে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে আরিফ বলেন, তরল বর্জ্য, ক্লিনিক্যাল বর্জ্য আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ডাম্পিং অটোক্যাপ পদ্ধতি চালু করার লক্ষে ইতিমধ্যে প্রিজম বাংলাদেশের সাথে সিসিকের চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর কাজ শুরু হয়েছে। আগামীতে নগরীর ৫টি স্থানে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার সেন্টার স্থাপন করা হবে।

তিনি বলেন, ১৮টি স্যানেটারী কক্ষ নির্মাণ পর্যায়ক্রমে নগরীর প্রতিটি বস্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে। শুধু মাত্র বস্তিবাসীর জন্য বিশেষ এ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা করা হবে। তাদের প্রশিক্ষণের জন্য মোবাইল ট্রেনিং সেন্টার চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

নির্বাচিত হলে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে স্কুলের সংখ্যা ও আওতা বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, নগরীতে ২৫ শয্যা বিশিষ্ট কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার চালু করা হবে।

নারীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আরিফ বলেন, নারীদের জন্য আলাদা একটি ট্রেনিং ইন্সটিটিউট করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। আইসিটি ভবনের পুরো একটি অংশে গড়ে তোলা হবে এই ইন্সটিটিউট। এখানে ঢাকা থেকে আইসিটি এক্সপার্টদের নিয়ে এসে নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে সিটি করপোরেশনে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, নারীদের জন্য আলাদা টাউন বাস চালু করা হবে। কর্মজীবী নারীদের সুবিধার জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার চালু করা হবে।

দক্ষিণ সুরমা এলাকাবাসীর জন্য বিশেষ নগর দেওয়া হবে উল্লেখ করে ইশতেহারে আরিফ বলেন, সিসিকের ২৫,২৬,২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যা নিরসনে মনোযোগ দেওয়া হবে। ছড়া-খাল উদ্ধারসহ রাস্তা প্রশস্ত করণ, প্রধান প্রধান সড়কে ডিভাইডার স্থাপন করা হবে।

ইশতেহার ঘোষণাকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম, সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইনসহ জোটের শরীক দলের শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট