দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান : শাবিতে উন্মোচন হলো বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি

প্রকাশিত: ৪:০৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০১৬

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর উন্মোচন হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গোলচত্বরের পাশে এবং উপাচার্য ভবনের সামনে (প্রশাসনিক ভবন-২) প্রায় ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রতিকৃতিটি নির্মাণ সম্পন্ন হলো। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, সংস্কৃতিকর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো।

শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ভবনের সামনে প্রতিকৃতির উন্মোচন করেন ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান।

শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমিনুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রতিকৃতি উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এবং ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইলিয়াস উদ্দীন বিশ্বাস, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক রাশেদ তালুকদার।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন- বঙ্গবন্ধু একজন রাজনৈতিক কর্মী থেকে নেতায় পরিণত হন এবং পরে বাঙালি জাতির প্রতি তাঁর অসামান্য অবদানের কারণেই তিন রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হন, যা খুব কম নেতার ভাগ্যেই জুটে থাকে। দূরদর্শী নেতৃত্ব ও প্রজ্ঞার কারণেই বঙ্গবন্ধু সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরেছিলেন। ছয় দফা উপস্থাপনের মধ্যো দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রকাশিত হয়। এর ফলেই তিনি অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন।

অনুষ্ঠানে শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসির সদস্যরা ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নানকে ফুল দিয়ে বরণ করে এবং গার্ড অব অনার প্রদান করে।

শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আমিনুল হক ভূঁইয়া বলেন- শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্থাপনের দাবি দীর্ঘদিনের। আজ দীর্ঘ দিনের এ দাবি ও লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন হলো। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গর্বিত ও আনন্দিত। ক্যাম্পাসে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির মর্যাদা ও পবিত্রতার রক্ষার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে সকলের প্রতি তিনি আহবান জানান।

প্রতিকৃতির আদ্যোপান্ত:
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিটির নকশা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শেখ নাঈম উদ্দিন দিপু।

প্রতিকৃতি নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন- প্রতিকৃতির মূল চত্বর ৪৭ ফুট বাই ২৫ ফুট। প্রতিকৃতির আকৃতি ৬ ফুট বাই ১০ ফুট।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি নির্মাণকাজের দ্বায়িত্ব পায় আফিয়া কন্সট্রাকশন লিমিটেড। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি জানায়- প্রতিকৃতিটি মাল্টিকালার করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের সিরামিক টাইলস ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিকৃতিটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বিশেষ প্রক্রিয়ায় পরীক্ষিত সিরামিক টাইলস দিয়ে প্রতিকৃতিটি নির্মাণ করা হয়। গাইডওয়াল নির্মাণসহ বেদি তৈরির কাজ দ্রুততম সময়ে নির্মাণ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ছাত্রহলের নাম ‘বঙ্গবন্ধুর’ নামে নামকরণ ও ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

শোকের মাসে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোকদিবসকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিটি দ্রুততম সময়ে নির্মাণকাজ সম্পন্ন এবং উন্মোচন করা হলো। এর আগে ২০১৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোকদিবসের অনুষ্ঠানে শাবিতে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিকৃতি স্থাপনের দাবি জানায় শাখা ছাত্রলীগ।

এ প্রসঙ্গে শাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ দৈনিক উত্তরপূর্বকে বলেন- শাবি ছাত্রলীগের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ। এটি আমাদের প্রাণের দাবি ছিল। তিনি অবিলম্বে দ্বিতীয় ছাত্রহলের নাম বঙ্গবন্ধু হল করার দাবি জানান।

সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান বলেন- আমাদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্থাপন করায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসের অংশ হতে পেরে অত্যন্ত গর্ববোধ করছি। একই সাথে তিনি দ্বিতীয় ছাত্রহলের নাম বঙ্গবন্ধুর নামে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য দ্বিতীয় ছাত্রহলের নাম দ্রুততম সময়ে বঙ্গবন্ধু হল করা হবে বলে আশ্বাস দেন। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি। এসময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট