সিলেটের ২ কিশোরীকে কক্সবাজারে নিয়ে বিক্রির অভিযোগে স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ৩:৩৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২৫

সিলেটের ২ কিশোরীকে কক্সবাজারে নিয়ে বিক্রির অভিযোগে স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার

সিলেটের দুই কিশোরীকে কক্সবাজারে নিয়ে বিক্রি করার অভিযোগে দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় কিশোরীর মা রবিবার (২৭ এপ্রিল) দিবাগত রাতে শাহপরান থানায় মামলা করেন। পরে সোমবার ভোরে অভিযান পরিচালনা করে দুই কিশোরীর প্রতিবেশি শাহনাজ ও তার স্বামী মুরাদ আহমেদ রাজুকে গ্রেপ্তার করে শাহপরান (রহঃ) থানা পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিবেশী শাহনাজ ও তার স্বামী মুরাদ আহমেদ রাজু দুই কিশোরীকে কক্সবাজারে পাঠান। সেখানে তাদের ছেলে ইমন হোসেন ও মেয়ে পিংকি ওরফে বৃষ্টি মিলে ভিকটিমদের কক্সবাজারে দুটি হোটেলে ১৫ দিন আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে।

পরবর্তীতে দুই কিশোরী সিলেটে ফিরে এসে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। তাদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে রবিবার দিবাগত রাতে শাহপরান (রহঃ) থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে সোমবার ভোররাত সাড়ে ৪ টার দিকে অভিযান পরিচালনা করে পীরের বাজার টিকেরপাড়া এলাকা হতে মামলার প্রধান আসামি শাহনাজ ও মুরাদ আহমেদ রাজুকে গ্রেপ্তার করে।

সিলেট মহানগর পুলিশ অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গ্রেপ্তার স্বামী-স্ত্রীকে সোমবার বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য সিলেটে ফিরে এসে ওই দুই কিশোরীরা জানায়, তাদের পাশের বাড়ির এক মহিলা তাদেরকে কক্সবাজারে গার্মেন্টসে কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বললে তারা রাজি হন। গত ৭ এপ্রিল তারা ওই মহিলার সাথে কক্সবাজারে গেলে প্রথমে তার ছেলে ইমনের বাসায় উঠে গোসল ও খাওয়া দাওয়া সাড়েন। পরদিন তাদেরকে গার্মেন্টসে নেয়ার নাম করে কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে ইমন তাদেরকে সেখানে রেখে চলে আসে। তখন তারা এখানে কেন জানতে চাইলে হোটেল স্টাফরা তাদেরকে একটি কক্ষে নিয়ে বসিয়ে রাখে। তারপর সেখানে টানা ১৪ দিন তাদের উপর চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন।

এদিকে, মেয়েদের খোঁজ না পেয়ে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে গত ৯ এপ্রিল শাহপরাণ থানায় জিডি করেন অভিভাবকরা। বিষয়টি জানতে পেরে ওই মহিলা তাদেরকে সিলেটে এসে জিডি তুলে নিতে বলে এবং তার ছেলেকে বলে তাদের ছেড়ে দিতে। তখন ইমন তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে বলে ‘আর কখনো কক্সবাজারে আসবি না’। এরপর গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) তারা হোটেল থেকে বের হয়ে সিলেটে ফিরে আসে।

ওই কিশোরীরা জানান, ওই ১৪ দিন আমরা আমাদের পরিবারের সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ করতে পারিনি। আমাদেরকে ফোন হাতে দেয়া হতোনা। দিনের পর দিন হোটেলে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।

২৪ এপ্রিল বিষয়টি ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা শাহপরান থানা পুলিশকে জানালে ওই দুই কিশোরিকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী হাসপাতালের ওসিসিতে প্রেরণ করা হয়।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট