সুনামগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, নিহত ১

প্রকাশিত: ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২৫

সুনামগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, নিহত ১

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় উভয়পক্ষের ঢিল ছুড়াছুড়িতে ১জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার (১০ মার্চ) সন্ধ্যার পরে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জামাল হোসেন ও বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের অনুসারীদের সঙ্গে উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোক্তার হোসেন ও বহিষ্কৃত যুবদল নেতা হযরত আলীর অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত মোহাম্মদ আলী (৭০) মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও শুল্ক স্টেশন থেকে দেড় মাস ধরে কয়লাবোঝাই ট্রাক নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় নেওয়া হচ্ছে। উপজেলার দাতিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হারুন মিয়া (৩০) ও তাঁর লোকজন ট্রাকপ্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। হারুন মিয়া নিজেকে ‘তারেক জিয়া প্রজন্ম দল’ নামের একটি সংগঠনের মধ্যনগর উপজেলা শাখার সাবেক সদস্যসচিব হিসেবে পরিচয় দেন।

ওই চাঁদা আদায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ নিয়ে সোমবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠক বসে। বৈঠকে হারুন মিয়ার লোকজন ও বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেনের (৪৫) লোকজনদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে দুই পক্ষের লোকজন সেখান থেকে চলে যান।

এরপর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে হারুন মিয়ার নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেলে ৪০ থেকে ৪৫ জন লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে মহিষখোলা বাজারে হামলা চালান। এ সময় মুক্তার হোসেন ও হারুন মিয়ার লোকজনদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। হামলাকারী ব্যক্তিরা মহিষখোলা বাজারে চারটি দোকান ভাঙচুর করেন। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে ঢিল ছুড়াছুড়িতে ইটের টুকরার আঘাত লাগে মোহাম্মদ আলীর। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। তখন হারুন মিয়া ও তাঁর লোকজন সেখান থেকে চলে যান। স্থানীয় লোকজন মোহাম্মদ আলীকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক পল্লিচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে মোহাম্মদ আলী মারা যান।

নিহত ব্যক্তির খালাতো ভাই সাবেক ইউপি সদস্য বাবুল মিয়া (৬০) বলেন, মোহাম্মদ আলী ভাই দিনের বেশির ভাগ সময় মহিষখোলা বাজারেই থাকতেন। হারুন মিয়ার লোকজনের হামলায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

এ সম্পর্কে উপজেলার বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন বলেন, ‘হারুন মিয়া ও তাঁর লোকজন বেশ কিছুদিন ধরে কয়লাবোঝাই ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। আমরা এতে বাধা দেওয়ায় হারুন মিয়া ও তাঁর লোকজন হামলা করেছেন। ভাঙচুর থামাতে গিয়ে হারুন মিয়া ও তাঁর লোকজনের ইটের টুকরার আঘাতে মোহাম্মদ আলীর মৃত্যু হয়েছে।’

ওই ঘটনার পর হারুন মিয়া ও তাঁর লোকজনদের কেউ এলাকায় নেই। এ জন্য তাঁদের কোনো ভাষ্য পাওয়া যায়নি।

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সজীব রহমান বলেন, অবৈধভাবে কয়লাবোঝাই ট্রাক থেকে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে ওই ঘটনা ঘটেছে। ওই বৃদ্ধ কীভাবে মারা গেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।



 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট