ওসমানীনগরে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ১১:০২ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫

ওসমানীনগরে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

সিলেটের ওসমানীনগরে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে মো. মোজাম্মেল মিয়া ওরফে মুজাম্মিল নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে রায়ে তাকে আরো একলাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও বিশেষ দায়রা জজ স্বপন কুমার সরকার এ রায় ঘোষণা করেন।

অত্র আদালতের পিপি মো. আবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত মো. মোজাম্মেল মিয়া মুজাম্মিল ওসমানীনগর উপজেলার দক্ষিণ কলারাই গ্রামের মৃত জিলু মিয়ার ছেলে।

ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে যুগনীবিলে অর্ধগলিত অবস্থায় অজ্ঞাত মরদেহ পাওয়া যায়। ওইদিন রাত ৮টার দিকে ওসমানীনগর থানার প্রাক্তণ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাঈন উদ্দিন ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র তৈরী করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করান।

সুরতহাল প্রতিবেদনে উঠে আসে নৃশংসভাবে হত্যার বর্ণনা। নিহতের মস্তক নেই, দুই স্তন, দুই বুকের মাংস বিচ্ছিন্ন, দুই পায়ের হাটুর উপরিভাগের মাংস কেটে অন্য কোথাও ফেলা হয়েছে। পুলিশ আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেও দেহের বিচ্ছিন্ন অংশগুলো পায়নি। তবে ধারণা করা হয়, মরদেহটি কোনো নারীর। পরে মরদেহ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে প্রেরণ করা হয়। এরপর ৩ ডিসেম্বর ওসমানীনগর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলা করেন।

মামলার বরাত দিয়ে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি মো. আবুল হোসেন বলেন, ক্লুলেস মামলাটির তদন্তকালে নিহতের স্বামী আসামি মো. মোজাম্মেল মিয়া ওরফে মুজাম্মিলকে গ্রেফতারপূর্বক সাক্ষিদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, তার স্ত্রী সন্ধ্যা ওরফে শাহনাজ বেগমকে খুন করে সেই স্থানটিতে (উদ্ধারস্থল)। মাথাসহ দেহের বিচ্ছিন্ন বিভিন্ন অংশ ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ফেলা হয়, যেটি তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সনাক্ত করে দেয়। এরপর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন-নিহত শাহনাজ বেগম আগে খ্রিস্টান ছিল। মৌলভীবাজার আদালতে এফিডেভিট করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। তার পিতার বাড়ির কোনো ঠিকানা নেই। পরবর্তীতে সে বাড়ি যেতে চাইলে তালাক দিয়ে যাওয়ার জন্য বলতেন। কিছুদিন পর তাকে বাড়িতে নিয়ে গেলে তার মা তাকে রাখতে চায় না, তাই ক্ষোভ থেকে তাকে হত্যা করেন তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলে মামলাটি ২০২২ সালে অত্র আদালতে স্থানান্তর হলে ১০০ নাম্বার মূলে আদালতে বিচার শুরু হয়। চার্জগঠনের পর হত্যা মামলাটিতে ২২ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন রফিক আহমদ।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট