১০৭তম রুশ বিপ্লব বার্ষিকীতে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের লাল পতাকা র‌্যালি

প্রকাশিত: ৬:২৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৮, ২০২৪

১০৭তম রুশ বিপ্লব বার্ষিকীতে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের লাল পতাকা র‌্যালি

শ্রমিক শ্রেণীর নেতৃত্বে পুজিঁবাদী সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব এবং বাংলাদেশের মত নয়াঔপনিবেশিক-আধাসামন্তবাদী দেশগুলোতে জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লব জয়যুক্ত করে বিশ্ববিপ্লব তথা সমাজতন্ত্র-কমিউনিজম প্রতিষ্ঠার সু-মহান লক্ষ্যে আজ পৃথিবীর সকল শোষিত মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করেন ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নেতৃবৃন্দ।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর’২৪) ১০৭ তম মহান রুশ বিপ্লব বার্ষিকীতে লাল পতাকা মিছিল করেছে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা। বিকেল ৪টায় সুরমা পয়েন্ট থেকে শুরু হওয়া লাল পতাকা র‌্যালি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশ করে।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজল, শাহপরান থানা কমিটির সভাপতি খোকন আহমদ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ (শান্ত), সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘ (রেজি নং চট্ট-২৮৫৩) সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন, বিভাগীয় কমিটির অন্যতম নেতা জাহাঙ্গীর আলম, সিলেট সদর উপজেলা স’মিল শ্রমিক সংঘ (রেজি নং চট্ট-২৮৭৪) এর সভাপতি হজর আলী, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের অন্যতম নেতা আনোয়ার হোসেন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুমিন (রাজু) সহ প্রমুখ;

বক্তারা বলেন ৭ নভেম্বর পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বহারা শ্রেণীর প্রকৃত মুক্তির প্রশ্নে শ্রমিক শ্রেণীর রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের কালজয়ী বিপ্লবী তাৎপর্যপূর্ণ দিবস। এই বিপ্লবী দিবসে শ্রমিক শ্রেণীর [রাশিয়ার কমিউনিস্ট(বলশেভিক)] পার্টির নেতৃত্বে, শ্রমিক-কৃষকের মৈত্রীর ভিত্তিতে শোষণমূলক বিশ্বব্যবস্থার বিপরীতে সর্বহারা শ্রেণীর তথা শ্রমিক-কৃষক মেহনতি মানুষের স্বার্থে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই-সংগ্রাম দুনিয়া কাপানো বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে শোষণহীন সমাজের কাল্পনিক চিন্তার বিপরীতে বাস্তব ভিত্তিক রূপ প্রতিষ্ঠিত হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের বলশেভিক পার্টির গঠন প্রক্রিয়া থেকে সকল রূপের সংশোধনবাদ-সুবিধাবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে পার্টি গড়ে উঠেছিল। আজকে ও এদেশের সংশোধনবাদীদের তৎপরতার মূল লক্ষ্য হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে, শ্রমিক শ্রেণির একনায়কতœ ও মহান কমরেড স্ট্যালিনের অবদান অস্বীকার করে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় শান্তিপূর্ণ পথে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের সাথে শ্রেণি সমন্বয় করে সুবিধা ভোগ করা। এদেশের শ্রমিক শ্রেণীর লড়াই-সংগ্রামে সাম্রাজ্যবাদ ও তাঁর এদেশীয় দালাল বুর্জোয়া শ্রেণীর হাতের পুতুল শ্রমিক সংগঠন ও নেতৃত্বের বিপরীতে শ্রমিকের স্বার্থে বিপ্লবী বিকল্প ধারার ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ শ্রমিক শ্রেনী শ্রেণীগত ও পদ্ধতিগত লড়াই-সংগ্রামে আপোসহীন, ধারাবাহিক ও নিরবিচ্ছিন্ন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।

৭১ পরবর্তী সকল সরকারের আমলেই দেশের শ্রমিক কৃষক মেহণতী মানুষ শোষণ বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছে। ধনী-গরীবের বৈষম্য উত্তরোত্তরভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। সাবেক স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলের ন্যায় বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের আমলেও শ্রমিকদের ন্যায় সংগত আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে স্বৈরাচারী পন্থায় রাষ্ট্রীয় পেটুয়া বাহিনী দিয়ে গার্মেন্স, চা শ্রমিকদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ও শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনে ছাত্র জনতার পাশাপাশি দেশের শ্রমিক-শ্রমজীবী মানুষ স্বতঃস্ফুতভাবে অংশগ্রহণ করে। নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টির কথা বললেও তা শ্রমিক-কৃষক জনগণের স্বার্থের সরকার নয়।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বর্তমান পুজিঁবাদী সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো এক বিভস যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। যা সম্প্রতি সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনায় বিশেষ করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের মদদে ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্থিনী নিরীহ জনগণের উপর হামলা তা নগ্নভাবে প্রকাশ পায়। ফিলিস্তিন, ইউক্রেন, ইয়েমেন, সুদানসহ বিশ্বের দেশে দেশে লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষ, নারী-শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। এটাই সাম্রাজ্যবাদের আসল রূপ। এই আক্রণাভিযানের মধ্য দিয়ে প্যালেস্টানের সমস্যাকে সাম্রাজ্যবাদী উভয়পক্ষ স্ব স্ব লক্ষ্যে কাজে লাগাতে সচেষ্ট। সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের স্বার্থ হাসিলে নয়াউপনিবেশিক আধাসামন্তবাদী দেশগুলোতে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে তাদের বাজার ও প্রভাব বলয়ের নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে মরিয়া হয়ে উঠেছে। প্যালেস্টাইনে আগ্রাসন, দখলদারিত্ব, ধারাবাহিক হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী মার্কিন নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদীরা এবং তাদের স্বার্থরক্ষাকারী ইসরাইল সরকার। বিশ্বের শ্রমিক শ্রেনী ও নিপীড়িত জনগণকে রুশ বিপ্লবের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সাম্রাজ্যবাদীদের অন্যায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে ন্যায় যুদ্ধ গড়ে তুলতে হবে।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট