আলোর মুখ দেখছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৬ লেন

প্রকাশিত: ১:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০২৪

আলোর মুখ দেখছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৬ লেন

সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ দেশের মেগা দুই প্রকল্পের ছোঁয়ায় পাল্টে যাবে এর চিত্র। পাল্টে দেয়া বৃহৎ দুই প্রকল্পের একটি হচ্ছে ঢাকা-সিলেট ৬ লেন প্রকল্প এবং অপরটি সিলেট-তামাবিল ৪ লেন প্রকল্প।

ইতিমধ্যে প্রকল্প দু’টির প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছে। ৬ লেন প্রকল্পের সিলেট অংশে কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়নার সিনো হাইড্রো ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুারো বি কর্পোরেশন, ঝিয়াংজো সিটি হাইওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (জেড. জেড. এইচ. সি) চায়না ন্যাশনাল কেমিক্যাল কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি (সিএনসিসিসি) ও তার্কিশ কোম্পানি ইএনইজেড ইতিমধ্যে সিলেট এসে প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের প্যারাইচক এলাকার পীর হাবিবুর রহমান চত্বরে মেগা দুই প্রকল্পের সংযুক্তি হবে। ঢাকার কাঁচপুর থেকে শুরু হওয়া ঢাকা-সিলেট-৬ লেন প্রকল্প সমাপ্ত হবে প্যারাইরচকের হাবিবুর রহমান চত্বরে অপরদিকে এই চত্বর থেকে খাদিম হয়ে বাঘের সড়ক দিয়ে তামাবিল স্থল বন্দরে গিয়ে সমাপ্ত হবে সিলেট-তামাবিল ৪ লেন প্রকল্প। প্যারাইরচকে নির্মিত হবে ৮৪৪ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২০ মিটার প্রস্থের একটি আরওবি বা রেলওয়ে ওভার ব্রিজ। স্থাপন করা হবে স্থানীয় যানবাহন চলাচলের জন্য সার্ভিস লেন। স্থাপথ্য শিল্পের নান্দনিক ছোঁয়ায় গড়ে উঠবে এই মহাসড়ক। সঙ্গত কারণেই পাল্টে যাবে গোটা এলাকার চিত্র। প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়ন হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটে উন্নয়নের অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হবে। ঢাকা-সিলেট ৬ লেন প্রকল্পের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ২২০ কিলোমিটার। ডিজাইন অনুযায়ী সড়কের মূল অংশের প্রস্থ ১২১ ফুট হলেও সড়কের জন্য ১৮০ থেকে ২৫০ ফুট ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। ঢাকা-সিলেট ৬ লেন প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৬ হাজার কোটি টাকা। পীর হাবিবুর রহমান চত্বর থেকে খাদিম হয়ে বাঘের সড়ক দিয়ে তামাবিল পর্যন্ত ৪ লেন বিশিষ্ট আধুনিক মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ৫৬ কিলোমিটার। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা।

মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের প্যারাইরচকে সয়েল টেস্ট কাজের উদ্বোধন করা হয়। কথা হয়, ঢাকা-সিলেট ৬ লেন প্রকল্পের সিলেট অংশের প্রজেক্ট ম্যানেজার দেবাশীষ রায়ের সঙ্গে। তিনি জানান, সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের প্যারাইরচকের পীর হাবিবুর রহমান চত্বর এলাকায় রেলওয়ের ওভারব্রিজ নির্মাণের কাজ সয়েল টেস্টের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। মহাসড়ক প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে প্রকল্প এলাকায় এসেছে। প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে দিনরাত কাজ করছে।

তিনি জানান, ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেট- ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের পীর হাবিবুর রহমান চত্বর পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের মার্চে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ১০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হওয়ায় কাজের গতি ধীর হয়ে যাচ্ছে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে দেবাশীষ রায় জানান, বিদেশি টাকার এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। ভূমি পেলে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সিলেট-তামাবিল ৪ লেন বিশিষ্ট সড়কের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. মামুন হোসেন খাঁন জানান, পীর হাবিবুর রহমান চত্বর থেকে তামাবিল স্থলবন্দর পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের কন্ট্রাক সাইন হয়ে গেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চায়না ন্যাশনাল কেমিক্যাল কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি (সিএনসিসি)। যেসব এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে সেইসব এলাকায় বিদ্যমান বৃক্ষ, কারেন্টের খুঁটি ইত্যাদি সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, প্যারাইরচক থেকে হুমায়ুন রশীদ চত্বর পর্যন্ত প্রায় ৮শ মিটার বর্তমান সড়ককে সম্প্রসারণ করা হবে স্থানীয় যানবাহন যাতায়াতের সুবিধার জন্য সার্ভিস লেন করতে। অত্যাধুনিক এই সড়কের কল্যাণে গোটা এলাকার চিত্রই পল্টে যাবে বলে তিনি জানান। বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারে কাজ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাসট্রাকচার লিমিটেড, টিসিসিএল ও আব্দুল মোনায়েম কোম্পানি।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট