বহাল তবিয়তেই আছেন জাবিতে নিয়োগ পাওয়া ছাত্রলীগপন্থী কর্মকর্তারা

প্রকাশিত: ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০২৪

বহাল তবিয়তেই আছেন জাবিতে নিয়োগ পাওয়া ছাত্রলীগপন্থী কর্মকর্তারা

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের দুই মাসের বেশি সময়ের পরও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভিসি অফিস, রেজিস্টার অফিস সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনও বহাল তবিয়তে আছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ছাত্রলীগের সুপারিশে চাকুরী পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

তারা হলেন ডেপুটি রেজিস্টার নাহিদুর রহমান খান(টিচিং), সহকারী রেজিস্টার রাজীব চক্রবর্তী(শিক্ষা শাখা), ডেপুটি রেজিস্টার (উপাচার্যের সচিব) গৌতম বিশ্বাস, নিরাপত্তা শাখার ডেপুটি রেজিস্টার জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল, রাসেল মিঁয়া, রাশেদুল ইসলাম, কম্পোটলার সাইফুল ও রাজীব, জনসংযোগ অফিসের প্রসাশনিক অফিসার ফরহাদ হোসেন, ডেপুটি রেজিস্টার সৈয়দ আলি রেজা (শিক্ষা শাখা)।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাভার থানায় শ্রাবণ গাজী হত্যা মামলার আসামি টিচিং শাখার ডেপুটি রেজিস্টার নাহিদুর রহমান খান ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। তার বিরুদ্ধে ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগ আছে।

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার আরেক অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজীব চক্রবর্তী কাজ করেন রেজিস্টার অফিসের শিক্ষা শাখায়। তিনি ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি নিয়েছেন। ভিসির বাসায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় অভিযুক্ত জনসংযোগ কর্মকতা ফরহাদ হোসেন ছিলেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

ডেপুটি রেজিস্টার নিরাপত্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল ও খন্দকার জিন্নাহ ১৫ জুলাই রাতে শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলার সঠিক দিক নির্দেশনা দেন এবং সাবেক প্রোক্টর উপর যাতে কোন ধরনের হামলায় না পরেন তা নিশ্চিত করেন। সজল ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে স্ত্রীকে কলাতান স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে সাবেক উপাচার্য নূরুল আলমের সময়ে। এছাড়া ৫ নভেম্বর ২০১৯ দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক ভিসি ফারজানা ইসালামের বাসার সামনে তার পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচী নিলে ছাত্রলীগ তাদের পিটিয়ে সরিয়ে দেয়। এই ঘটনায় ফরাজানা ইসলামকে সহায়তা করেন সজল।

কম্পোটলার অফিসের সাইফুল ও রাজীব সাবেক উপাচার্য শরিফ এনামুল কবিরের ভাগ্নে। তারা চাকুরী বিধি লঙ্ঘন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ব্যবসা করছেন বলে অভিযোগ আছে। শিক্ষা শাখার প্রধান ডেপুটি রেজিস্টার সৈয়দ আলি রেজা আওয়ামিলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সেক্রেটারি শাহে আলম মুরাদের ভাতিজা। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে চাকুরী নেয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে কম সময়ে অফিস প্রধান হওয়ার অভিযোগ আছে।

১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হামলায় জড়িত ও ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ চুরি, নিয়োগ ও ভর্তি বানিজ্যর অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে থাকলেও কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়নি বর্তমান প্রশাসন। সাধারন শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ১৫ জুলাই রাতে বঙ্গবন্ধু হলের সামনে ও ভিসির বাসায় হামলায় জড়িতদের সংশ্লিষ্টতা খুজতে এবং শাস্তির অধীনে আনতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে যার প্রক্রিয়া এখনো চলমান।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পেয়েছিলেন অভিযুক্ত এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও তাদের স্ত্রী। বিভিন্ন সময় তারা হল ও ক্যাম্পাসে হামলায় জড়িত ছিলেন। এমনকি আন্দোলন দমনে সক্রিয় অবস্থানেও ছিলেন অভিযুক্তরা। তাই তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুতের দাবি জানান তারা।


সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট