৩রা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৫৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২৪
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা মুহিত মিয়ার পিতা কনদু মিয়া ৫/৬ বছর আগেও রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলে আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন। আলাদিনের চেরাগ ছিল সাবেক কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ। মুহিত মিয়া কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এর ভাগনা পরিচয়ে অবৈধ ব্যবসা করে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
জানা যায়, উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের কনদু মিয়ার ৮ শতক জমিতে শুধু ভিটে ছাড়া আর কিছুই ছিল না। তখন জীবিকার তাগিদে রিক্সা চালাতেন। বিগত সংসদ নির্বাচনে কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল আসন থেকে ৭ম বারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন উপাধ্যক্ষ ড. মো.আব্দুস শহীদ এমপি। সেই সাথে মন্ত্রী পরিষদে কৃষি মন্ত্রী হন উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ। মুহিত মিয়া কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ ও তার ভাইদের মন জয় করে হয়ে যান তাদের ভাগিনা। মুহিত মিয়া কৃষি মন্ত্রী আব্দুস শহীদের ভাগিনা হওয়ার সাথে সাথে হাতে পেয়ে যান “আলাদিনের চেরাগ”।
অনুসন্ধানে জান যায়, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে ও কৃষি মন্ত্রী আব্দুস শহীদের ভাগিনা পরিচয় দিয়ে সিলেট-আখাউড়া রেলপথের শমশেরনগর রেলস্টেশনে পাশের লালগুদামের গোডাউনের বিপরীত দিকে রেলওয়ের বিপুল পরিমাণ জায়গা জোর পূর্বক দখল করে কয়েকটি দোকান কোটা তৈরী করে ভাড়া দেন। এছাড়া ঘরোয়া পরিবেশে মসলা ও ঘি তৈরী করে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই বাজারজাত করতে শুরু করেন। এই অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমেই কয়েক বছরে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যান। রেলের জমি উদ্ধার ও অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্টানে প্রশাসনিকভাবে অভিযান করা হলে মন্ত্রীর ভাগিনা পরিচয় দেয়ায় অভিযানিক প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই চলে যেতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, মুরগীর ফিড দিয়ে হলুদ, মরিচ, ধনিয়া তৈরী করে বাজারজাত করে আসছেন। বিসমিল্লাহ মসলা মিলের মাধ্যমে মধু ব্র্যান্ড ১২ মসলা, মধু ব্র্যান্ড মিক্স মসলা, সশ, রুবি মসলা, হিরো বাটার, হিরো ঘি, হিরো ক্রিম, তীর ঘি, নুরজাহান ঘি, নুরজাহান মসলা বিভিন্ন কোম্পানির নামে প্রস্তুত করে বাজারজাত করেন।
আরো জানা যায়, শমশেরনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের শরিফ মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া মুহিতের ব্যবসায়িক পার্টনার। ব্যবসায়িক পার্টনার রাসেলের বাড়িতে ঘিসহ অন্যান্য পণ্য প্রস্তুত করা হয়। তাদের তৈরীকৃত পণ্যের বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই বাজারজাত হচ্ছে। তাদের তৈরীকৃত নিম্নমানের সামগ্রী সমুহ মৌলভীবাজার, ভানুগাছ, শ্রীমঙ্গল, নবীগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, আদমপুর সহ বিভিন্ন স্থানে এক শ্রেণীর মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদেরকে ডিলার পয়েন্ট দিয়ে পণ্য সমুহ বাজারজাত করছেন।
প্রায় ৩ বছর পূর্বে তৎকালীন কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক মুরগীর খাদ্য মিশ্রিত করে হলুদ, মরিচ, ধনিয়া জব্দ করে কারখানা সীলগালা করে দেন। পরে অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে ব্যবসাটি জমজমাট করে তুলেন। ইতিমধ্যে প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ করে কনদু মিয়ার ছোট ছেলে লেবু মিয়া পর্তুগাল ও বড় ছেলে মুমিন মিয়াকে সৌদিআরব পাঠানো হয়েছে। কনদু মিয়া রাধানগর গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি ও প্রচুর জমি জমার মালিক হয়ে যান। এসব অনিয়ম স্থানীয় মানুষ জনের চোখের সামনে ঘটলেও মুহিতের প্রভাবের কারনে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। যদিও কেউ প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেন তাদের উপর নেমে আসে হামলা-মামলার খড়গ। তাই এলাকার মানুষজন ভয়ে মুখ খুলতে পাচ্ছেনা।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলেন, মানুষের খাবারের অযোগ্য পণ্য সমুহ বাজারজাত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে মুহিত ও তার সহযোগিরা আর্থিকভাবে লাভবান হলেও মানুষজনের নানা রোগব্যাধিসহ প্রাণহানী ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই অচিরেই প্রসাশনিক ভাবে সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে রেলেওয়ের জমি উদ্ধারসহ নিন্মমানের মসলা ও ঘি এর কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মুিহত মিয়া ও তার ব্যবসায়ীক পার্টনার রাসেল মিয়ার বক্তব্য জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে তাদের ঘনিষ্টজনরা বলেন, তাদের কোন অবৈধ ব্যবসা নেই। সব কাগজপত্র ঠিক আছে। রেলওয়ের জমিও লিজ আছে। একটি কুচক্রী মহল আমাদের ব্যবসায়ীক সুনাম ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, সরেজমিন তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D