যেভাবে ফিরে এলো ত্রিপুরায় পাচার হওয়া গোয়াইনঘাটের ৪ কিশোর

প্রকাশিত: ২:২১ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৪

যেভাবে ফিরে এলো ত্রিপুরায় পাচার হওয়া গোয়াইনঘাটের ৪ কিশোর

সিলেটের গোয়াইনঘাট থেকে ঢাকায় নিয়ে গার্মেন্টেসে কাজের প্রলোভনে ৪ কিশোরকে বাড়ী থেকে নিয়ে গিয়েছিলো সাহাব উদ্দিন নামের এক প্রতারক। গার্মেন্টেসে কাজ না দিয়ে তাদেরকে ভারতের ত্রি-পুরায় পাচার করে ঐ প্রতারক। সেখানে ৪ কিশোর বিগত এক সপ্তাহ অমানবিক পরিবেশে ছিল। তাদেরকে দিয়ে ভারী কাজসহ মানষিক নির্যাতন করা হয়।

পাচার হওয়া কিশোররা হলো হাতিরখাল গ্রামের রাজু মিয়া (১৮) ও সাজু মিয়া (১৬) উভয় পিতা- দেলোয়ার হোসেন, ইমন আহমদ (১৭) পিতা- জাহাঙ্গীর আলম উরফে ভিআইপি জাহাঙ্গীর, সৌরভ (১৭) পিতা- রশিদ মিয়া।

কাজের কথা বলে নিয়ে যাওয়া কিশোরদের নিখোঁজের ঘটনায় জড়িত অপরাধী হাতিরখাল গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে মোঃ সাহাব উদ্দিন এই ৪ কিশোরকে কুমিল্লা জেলার নিকটবর্তী ভারতের আগরতলায় নিয়ে যায় এবং শ্রমিকের কাজ করায়। সেখানে নেয়ার পর তাদেরকে তাদের পরিবারের সাথে কোন যোগাযোগ করতে দেয়নি। এক সপ্তাহ পর পারিবারিকভাবে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে সে বড় অংকের মুক্তিপন দাবী করে। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হলেও তাদের ফিরিয়ে দেয়নি।

এমতাবস্থায় কিশোরদের পরিবারের পক্ষে রহিমা বেগম গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম পিপিএমকে মৌখিকভাবে অবহিত করলে গত রবিবার (৭ জুলাই) ঘটনার মূল হোতা সাহাব উদ্দিনের বাড়ীতে পুলিশ সদস্যদের পাঠান এবং কিশোরদের ফিরিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। পুলিশের মানবিক তৎপরতায় অবশেষে ৮ জুলাই সোমবার সকালে উক্ত ৪ কিশোরকে তাদের অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় প্রতারক সাহাব উদ্দিন।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকাল ৪টায় গোয়াইনঘাট থানায় কথা হয় উদ্ধার হওয়া এই কিশোরদের সাথে। থানায় তাদের সাথে আলাপকালে ফিরে আসা ৩ কিশোর জানায় স্থানীয় হাতিরখাল গ্রামের মোঃ সাহাব উদ্দিন তাদেরকে ঢাকায় নিয়ে গ্রার্মেন্টসে কাজ করার লোভ দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে কুমিল্লা হয়ে ভারতের আগরতলায় নিয়ে যায়, সেখানে আমাদের বন্ধি রাখে এবং শ্রমিকের কাজ করায়। ভারতের আগরতলা থেকে আমরা পালিয়ে আসার চেষ্টা করলেও সে আমাদের আসতে দেয়নি। পরে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়। কিন্তু তাতেও সে আমাদের ফিরিয়ে দেয়নি। পরে বিষয়টি আমাদের পরিবার থেকে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করাতে উনার আইনগত উদ্যোগে আমরা ভারতের বন্ধিদশা থেকে মুক্তি পাই।

গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম পিপিএম বলেন, ৪টি কিশোরকে পাওয়া যাচ্ছেনা পরিবারের পক্ষ থেকে এমন মৌখিক অভিযোগ দিলে বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করি। এই ঘটনার সাথে জড়িত সাহাব উদ্দিনের বাড়িতে পুলিশ পাঠাই এবং দ্রুত এসব কিশোরদের তাদের অভিভাবকদের কাছে ফিরিয়ে না দিলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলা হলে কিশোরদের ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয় জড়িত সাহাব উদ্দিন। এই জড়িত অপরাধীর বিষয়ে গভীরভাবে তদন্ত হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে অভিযোগ দেয়া হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট