৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২১
মুহাম্মদ মিযানুর রহমান
রাসূলুল্লাহ সাঃ প্রথম জুমার খুতবা প্রদান করেন মসজিদুল কুবায়। হিজরতের প্রাক্কালে মক্কা থেকে মদিনায় আসার সময় কুবায় সোমবার, মঙ্গলবার, বুধবার এবং বৃহস্পতিবার এই চার দিন অবস্থান করেন। কুবার অধিবাসীদের জন্য তাদের মসজিদ নির্মাণ করেন।
জুমার দিন তিনি কুবা থেকে বের হন। বনি সালেম বিন আওফ গোত্রের কাছে আসতেই জুমার নামাজের সময় হয়ে গেল। সেখানকার উপত্যকায় অবস্থিত মসজিদেই তিনি জুমার নামাজ পড়লেন। এটি ছিল মসজিদে নববী নির্মাণ করার আগের জুমা আদায় এবং খুতবা প্রদান। ইতিহাসে এটাই প্রথম জুমার খুতবা হিসেবে পরিচিত।
প্রথম খুতবা : বিখ্যাত সিরাত গবেষক ইবনে ইসহাক বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: সর্বপ্রথম যে খুতবাটি দিয়েছিলেন তা আমার কাছে আবু সালাম বিন আবদুর রাহমানের সূত্রে পৌঁছেছে। তিনি মুসলমানদের সামনে দাঁড়িয়ে সর্বপ্রথম আল্লাহর প্রশংসা করলেন এবং তাঁর গুণাগুণ বর্ণনা করে বললেন, ‘হে লোক সকল! তোমরা নিজেদের মুক্তির জন্য আমল করো। আল্লাহর শপথ! তোমরা তখন অবশ্যই (পরকালের উদ্দেশে আমল করার গুরুত্ব সম্পর্কে) জানতে পারবে যখন তোমাদের কেউ (শিঙ্গায় ফুঁক দেয়ার আওয়াজ শুনে) বেহুঁশ হয়ে যাবে। সে তার ছাগলের পালকে রাখালবিহীন অবস্থায় ছেড়ে চলে যাবে। অতঃপর তার প্রভু তার সাথে কথা বলবেন, তার মাঝে ও তার প্রভুর মাঝে কোনো দোভাষী থাকবে না (সরাসরি কথা হবে) এবং তার মাঝে ও তার প্রভুর মাঝে কোনো পর্দা থাকবে না।’ আল্লাহ বলবেন, তোমার কাছে কি আমার রাসূল এসে আমার হুকুম-আহকাম পৌঁছে দেয়নি? আমি তোমাকে দুনিয়ার সম্পদ দিয়েছিলাম এবং তোমার ওপর অনুগ্রহ করেছিলাম। সুতরাং তুমি নিজের জন্য কী প্রেরণ করেছ?’ তখন সে ডান দিকে তাকাবে, বাম দিকে তাকাবে। কিন্তু সে কিছুই দেখতে পাবে না। অতঃপর সামনে তাকাবে। কিন্তু সে জাহান্নাম ছাড়া কিছুই দেখতে পাবে না।
সুতরাং যে ব্যক্তি এক টুকরা খেজুর দান করার বিনিময়ে হলেও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার সামর্থ্য রাখে সে যেন জাহান্নাম থেকে নিজেকে আত্মরক্ষা করে। আর যে ব্যক্তি তারও ক্ষমতা না রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলার মাধ্যমে হলেও জাহান্নাম থেকে বাঁচার চেষ্টা করে। কেননা, এর বিনিময়েও নেকির সংখ্যা ১ থেকে ১০ গুণ আর ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
দ্বিতীয় খুতবা : ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আমি তাঁর প্রশংসা করছি, তাঁর কাছেই সাহায্য চাই, আমরা আমাদের নফসের অকল্যাণ থেকে এবং খারাপ আমল থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। তিনি যাকে হিদায়াত করেন কেউ তাকে গোমরাহ করতে পারে না। আর যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন কেউ তাকে সঠিক পথ দেখাতে পারে না। আমি এই সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সঠিক কোনো উপাস্য নেই। তিনি এক, তার কোনো শরিক নেই। নিশ্চয়ই সর্বোত্তম কথা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব। নিশ্চয়ই ওই ব্যক্তি সফল হবে, যার অন্তরকে আল্লাহ তায়ালা কুরআনের মাধ্যমে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছেন এবং কুফরিতে লিপ্ত হওয়ার পর তাকে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় দিয়েছেন। সুতরাং মানুষের কথাগুলো বাদ দিয়ে সে আল্লাহর কালামকে বেছে নিয়েছে।
কেননা আল্লাহর কথাই হচ্ছে সর্বোত্তম কথা ও তাঁর বাণীই হচ্ছে সর্বোচ্চ বাণী। আল্লাহ যা ভালোবাসেন তোমরা তাই ভালোবাস এবং তোমাদের অন্তরসমূহকে আল্লাহর ভালোবাসা দিয়ে ভরে দাও। আল্লাহর কালামকে পাঠ করতে এবং আল্লাহকে স্মরণ করতে তোমরা ক্লান্তিবোধ করো না। তোমাদের অন্তর যেন কুরআন থেকে (কুরআন ছেড়ে দিয়ে) পাষাণ না হয়ে যায়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সব সৃষ্টি থেকে উত্তমটিই বাছাই করেন এবং তা নিজের জন্য নির্বাচন করেন।
আল্লাহ তাঁর বান্দাদের আমলসমূহ থেকে কুরআন তিলাওয়াতকে সর্বোত্তম আমল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বান্দাদের আমল থেকে তা পছন্দ করেছেন। তা সর্বোত্তম বাণী বলে ঘোষণা করেছেন এবং তার মাঝে মানুষের জন্য সব হালাল ও হারাম বিষয় বর্ণনা করেছেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো। তাঁর সাথে কোনো কিছুকে শরিক করো না এবং তাঁকে যথাযথভাবে ভয় করো। তোমরা মুখ দিয়ে যেসব কথা উচ্চারণ করে থাকো, তা থেকে সর্বোত্তম কথার মাধ্যমে আল্লাহর সত্যতার ঘোষণা প্রদান করো।
আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে পরস্পর ভালোবাসার বন্ধন রচনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গকারীকে মোটেই পছন্দ করেন না। (জাদুল মাআদ থেকে সংগৃহীত)
– প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D