ঈদে ঘরমুখো মানুষ সুইসাইডের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:৩০ অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০২১

ঈদে ঘরমুখো মানুষ সুইসাইডের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যেভাবে ফেরি পারাপার হয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করছে এটাকে সুইসাইড সিদ্ধান্তের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষ লকডাউনের সামান্য শিথিলতার সুযোগ নিয়ে দলবেঁধে গাদাগাদি করে স্বাস্থ্যবিধির কোনোরকম তোয়াক্কা না করে যেভাবে ফেরি পারাপারসহ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করছে তা একেবারে সুইসাইড সিদ্ধান্তের শামিল।’
সোমবার দেশের চারটি বর্ডার এলাকার বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে ভার্চুয়ালি ‘ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় করণীয়’ বিষয়াদি নিয়ে জরুরি দিক নির্দেশনামূলক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে প্রতিদিন হাজারো মানুষ মারা যাচ্ছে। ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্টটি এখন নেপালে ছড়িয়ে গিয়ে সেখানে ভয়াবহতা সৃষ্টি করেছে। এই ভ্যারিয়েন্ট এখন আমাদের দেশেও চলে এসেছে। এইরকম ক্রিটিকাল সময়ে এই ভাইরাস দেহে নিয়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষ যদি গ্রামে চলে যায়, তাহলে গ্রামে থাকা পরিবার-পরিজনসহ গ্রামবাসী গণহারে আক্রান্ত হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘শহরাঞ্চলেও মানুষ এখন বেপরোয়া চলাফেরা করছে। ঢাকাসহ দেশের বড় বড় বিভাগীয় শহরে শপিংমলসহ বিভিন্ন যানবাহনে গাদাগাদি করে মানুষ চলাফেরা করছে। এভাবে চলতে দিলে ঈদের পর দেশে ভারত, নেপালের মতো ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি বর্ডার এলাকার দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কঠোরভাবে কাজ করতে হবে। বর্ডার এলাকার ভারত যাতায়াতকারী ব্যক্তির পরিবারহ সকল মানুষকে দ্রুত ও বাধ্যতামূলক কোভিড পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। বর্ডার এলাকার কোনো যানবাহন নিজ জেলার বাইরে মুভমেন্ট যেন করতে না পারে সে ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বর্ডার এলাকার চারটি বিভাগ রংপুর, সিলেট, খুলনা ও চট্রগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, বর্ডার এলাকা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে করণীয় বিষয়াদি নিয়ে সার্বিক নির্দেশনা দেন ও তাদের মতামত শোনেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত ১৫ দিন বর্ডার এলাকায় কতজন মানুষ ভারতে যাতায়াত করেছে তার তালিকা জানতে চান।
মন্ত্রী বর্ডার এলাকায় ব্যাপক হারে কোভিড পরীক্ষা চালানোর নির্দেশনা দেন। ভারত যাতায়াতকারীদের পরিবারের সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসতে বলেন এবং বর্ডার এলাকায় যেকোনো ধরনের যানবাহন যেন এক জেলা থেকে অন্য জেলায় মুভমেন্ট করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করার জরুরি নির্দেশনা দেন।

সভায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জানান, খুলনা বিভাগীয় এলাকায় বর্তমানে ২ হাজার ৭০০ জন ভারত যাতায়াতকারী ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। তাদেরকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া ভারত থেকে বন্দর দিয়ে প্রবেশ করা ট্রাক ড্রাইভার, হেল্পারদের কোনভাবেই মুভমেন্ট করতে দেয়া হচ্ছে না। কঠোরভাবে তাদের আইসোলেশন ব্যাবস্থায় জোর দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশ থেকে ভারত যাতায়াতকারী ড্রাইভার-হেল্পারদেরকেও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, এডিজি (পরিকল্পনা) মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা, খুলনা, চট্টগ্রাম, রংপুর ও সিলেট বিভাগের রেঞ্জ ডিআইজি, বিভাগীও কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তারা আলোচনায় আরো অংশ নেন।


সূত্র : ইউএনবি


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট