ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট, সিলেটে র‍্যাবের অভিযানে চিকিৎসক আটক

প্রকাশিত: ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২০

ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট, সিলেটে র‍্যাবের অভিযানে চিকিৎসক আটক

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদানের অভিযোগে এ. এইচ. এম শাহ আলম নামে এক চিকিৎসককে আটক করেছে র‍্যাব-৯।

রোববার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর মধুশহীদস্থ মেডিনোভা মেডিক্যাল সার্ভিসে তাঁর চেম্বারে অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করা হয়।

এসময় তাঁকে ৪ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে তাঁকে।

শাহ আলমের রেজিস্ট্রেশন নম্বর থেকে জানা যায়, তিনি বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সনদপ্রাপ্ত একজন মেডিকেল চিকিৎসক। অথচ করোনা সার্টিফিকেটের প্যাডে নিজেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ডাক্তারের পরিচয় দিয়েছেন তিনি।

জানা যায়, নিজেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ডাক্তারের পরিচয় দিয়ে বিদেশগামীদের কাছ থেকে বড় অংকের টাকা আদায় করে নন-কোভিড প্রত্যয়নপত্র দিচ্ছিলেন এই চিকিৎসক। প্রতিটি ভুয়া সার্টিফিকেট বাবদ ৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি।

ওই সার্টিফিকেটে ডা. শাহ আলম উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে উপসর্গহীন রোগীদের করোনা পরীক্ষার সুযোগ নেই।

এছাড়া নিজেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক বলেও উল্লেখ করেছেন। যদিও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের উপ-পরিচালক হিমাংশু লাল রায় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এ নামে কোনো চিকিৎসক তাদের ওখানে নেই। প্যাডে নিজেকে ওসমানী মেডিকেলের চিকিৎসক লিখে থাকলে তিনি রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

এছাড়া ডা. শাহ আলমের বিরুদ্ধে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ, তিনি নিজেও একজন করোনা আক্রান্ত রোগী। এরপরও চেম্বারে বসে রোগী দেখেছেন।

এমন সব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে চিকিৎসক শাহ আলম বলেছেন, আমি ভুল করেছি। এমন ভুল আর হবে না। এমন নন-কোভিড সার্টিফিকেট দেয়া ঠিক হয়নি আমার। আমি ক্ষমা চাচ্ছি।


যে অভিযোগে শাহ আলম জেলে : সিলেটে সরকারি চিকিৎসকের ভুয়া পদবী ব্যবহার ও করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া সার্টিফিকেট প্রদানের অভিযোগে রবিবার সন্ধ্যায় এ. এইচ. এম শাহ আলম নামের এক চিকিৎসককে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং ৪ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। সিলেট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে অর্থদন্ড ও কারাদন্ড প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডা. শাহ আলমের কাছ থেকে করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট নেয়া ভূক্তভোগী প্রবাসী দম্পতির ভাতিজা আনোয়ার হোসেন জানান, ১০ জুলাই সন্ধ্যায় তিনি মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেসে গেলে তার চাচা-চাচীর কাউকেই পর্যবেক্ষণ না করেই নন-কোভিড সার্টিফিকেট দেন এ চিকিৎসক। তিনি জানান, এই সার্টিফিকেটে কাজ না হওয়ায় ঢাকার একটি বেসরকারি পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে নমুনা দিয়ে পরীক্ষা শেষে সনদ নিয়ে ১২ জুলাই এমিরেটস এয়ারলাইন্সে যুক্তরাষ্ট্রে যান এই দম্পতি। এ নিয়ে জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন ভার্সনে রবিবার একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। মূলত এ রিপোর্ট ও অভিযোগের ভিত্তিতেই মোবাইল কোর্ট তার চেম্বারে হানা দেয়।
শাহ আলমের বরাত দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা রায় বলেছেন, শাহ আলম তার কৃতকর্মের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি এও বলেছেন, ‘আমি ভুল করেছি। এমন ভুল আর হবে না। এমন নন-কোভিড সার্টিফিকেট দেয়া ঠিক হয়নি আমার। আমি ক্ষমা চাচ্ছি।’
এ বিষয়ে মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসের সিলেটের মহাব্যবস্থাপক এম এ মতিন মাসুক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমাদের বিপনন কর্মকর্তারা ডা. এ এইচ এম শাহ আলমকে ওসমানী মেডিকেল কলেজে কাজ করতে দেখেছেন। তাই তার কাগজপত্র আর যাচাই করা হয়নি। আর ১৬ জুলাই করোনা সংক্রমণের কথা অবগত হলেই এই চিকিৎসককে চেম্বারে আসতে নিষেধ করে দিই আমরা।



এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট