রমজানে কীভাবে শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখবেন

প্রকাশিত: ৪:০৯ অপরাহ্ণ, মে ১৩, ২০১৯

রমজানে কীভাবে শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখবেন

Manual1 Ad Code

আবারও চলে এসেছে পবিত্র মাহে রমজান। মঙ্গলবার থেকে রোজা শুরু। পুরো একমাস ধরে রোজার সময়টায় সারা বিশ্বের মুসলমানরা সেহরি থেকে ইফতারি পর্যন্ত না খেয়ে থাকবেন।

ফলে যারা রোজা রাখেন, তাদের খাবারের সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দৈনন্দিন লাইফ স্টাইলেও পরিবর্তন আসবে, যার মধ্যে রয়েছে ব্যায়ামের মতো জরুরি বিষয়। খবর বিবিসির।

Manual5 Ad Code

সারা দিন কোন খাবার বা পানি না খেয়ে ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। তার ওপর এবার রমজান হচ্ছে গরমের সময়ে, ফলে এখানেও দরকার বাড়তি সতর্কতা।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. রাঞ্জ সিং বলেছেন, এ সময় তিনটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তা হলো, এই সময়ে খাবার ও পানির বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি হালকা ব্যায়াম করতে হবে এবং যতটা বেশি সময় সম্ভব বিশ্রামে থাকতে হবে।

ঢাকার কলাবাগানের বাসিন্দা নাজমা আক্তার বলছেন, ”আমাকে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে রান্না বান্না করতে হয়, এরপর নামাজ পড়ি। এক ঘণ্টা বিশ্রামের পর বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। এরপর সারাদিন বাসায় অনেক কাজ থাকে। বাচ্চাদের আবার স্কুল থেকেও আনতে হয়। বিকেলে আবার ইফতারির প্রস্তুতি থাকে।”

Manual5 Ad Code

”ফলে অন্যান্য সময়ে সকালে বাইরে একটু হাঁটতে গেলেও এখন সেটাও হয় না। রোজা রেখে সারাদিন এতসব করে এমনিতেই খুব ক্লান্ত হয়ে থাকি।” তিনি বলছেন।

ধানমন্ডির বাসিন্দা ইব্রাহিম মুন্সী প্রতিদিন সকালে অথবা বিকালে এক ঘণ্টা করে হাঁটেন। তবে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, রোজা শুরু হলে সময় পরিবর্তন করে সন্ধ্যার পরে অথবা রাতের খাবারের পর হাঁটতে শুরু করবেন।

রোজায় ব্যায়ামের ব্যাপারে যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

Manual7 Ad Code

ঢাকার ইয়াসমিন করাচিওয়ালা’স বডি ইমেজের প্রশিক্ষক সুরঞ্জিত দে বলছেন, ”রমজানের সময় ইফতারির অন্তত এক ঘণ্টা পরে ব্যায়াম করা উচিত।” এক্ষেত্রে তারাবীহের নামাজ খুব উপকারী। ধৈর্য্য সহকারে তারাবীহের নামাজ পড়তে পারলে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কী রকম ব্যায়াম করতে হবে? এক্ষেত্রে তিনি বলেন, ”বেশি কষ্ট করতে হয় না বা লাফঝাঁপ করতে হয় না, সেরকম ব্যায়াম করতে হবে। বিশেষ করে পেটের মাসলের, হাতের বা পায়ের ব্যায়াম করা যেতে পারে। যারা ডায়াবেটিস বা নিয়মিত কাজের অংশ হিসাবে হাঁটাহাঁটি করতে চান, তাদেরও উচিত ইফতারির অন্তত এক ঘণ্টা পরে হাঁটাহাঁটি করা। ”

Manual8 Ad Code

”তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, রোজার সময় বেশি ঘাম হয় বা বুক ধড়ফড় করে এমন কোন ব্যায়াম করা যাবে না।”

তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, গরমের সময় রোজা হওয়ার কারণে দিনের বেলায় কোন ব্যায়াম না করাই ভালো। তাহলে আর পানিশূন্যতার কোন ঝুঁকি তৈরি হবে না।

ফিটনেস প্লাস বাংলাদেশের একজন প্রশিক্ষক রাফি হাসান বলছেন, রমজানের সময় আমরা সবাইকে হালকা ব্যায়াম করার পরামর্শ দেই। যেমন হাত বা পায়ের হালকা ব্যায়াম, ইয়োগা জাতীয় ব্যায়াম ইত্যাদি।

”কেউ যদি ভারী ব্যায়াম, ওজন তোলা বা সাইক্লিং করতে চান, তাদের জন্য পরামর্শ দেবো ইফতারের পর এগুলো করার জন্য।”

তবে হাঁটাহাঁটি করার মতো ব্যায়াম যেকোনো সময়েই করা যেতে পারে বলে তিনি বলছেন। “তবে বিকালে না হেঁটে বরং সকালে সেহরির পরপরই হাঁটাহাঁটির কাজটি করে ফেলতে পারলে ভালো। বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীরা বিকালে হাঁটবেন না, কারণ এ সময় রক্তে শর্করা অনেক কমে যায়।”

ব্যায়ামের সঙ্গে খাবার

রোজার সময় যারা নিয়মিতভাবে ব্যায়াম করতে চান, তাদের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই শর্করা জাতীয় খাবার রাখতে হবে। ইফতার, রাতের খাবার এবং শেষ রাতের খাবারে শর্করা জাতীয় খাবার অবশ্যই রাখতে হবে, যা থেকে দ্রুত ক্যালরি পাওয়া যাবে।

সুরঞ্জিত দে বলছেন, ইফতারে ডাবের পানি, ডিম, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার রাখতে হবে। সারাদিন রোজা থাকার পর এ জাতীয় খাবার শরীরে দ্রুত শক্তি যোগাবে।

”এরপর রাতের খাবারে ব্রাউন রাইস, চিকেন এবং সেহরি পর্যন্ত অবশ্যই তিন থেকে চার লিটার পানি খেতে হবে।”

“কেউ যদি মিষ্টি খাবার খেতে চান, তাহলে সেটি খাওয়া উচিত রাতের ব্যায়ামের পরে”, বলছেন সুরঞ্জিত দে।

ব্যায়ামের পোশাক

হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করার সময় হালকা, সুতি কাপড় পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন জিম প্রশিক্ষকরা। বিশেষ করে এমন কাপড় পড়তে হবে, যাতে শরীরে কোন টান না লাগে।

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code