ভূমিহীন ফয়জুলকে ঘর করে দিলেন এএসআই শামসুল

প্রকাশিত: ৩:৩৯ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০১৮

ভূমিহীন ফয়জুলকে ঘর করে দিলেন এএসআই শামসুল

সিলেটের সীমান্তবর্তী কানাইঘাট উপজেলায় ভূমিহীন হতদরিদ্র এক পরিবারকে ভূমির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন পুলিশের সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. শামসুল আরেফিন জিহাদ ভূঁইয়া। একই সাথে ওই ভূমিতে নিজ খরচে তৈরি করে দিয়েছেন টিনসেডের একটি ঘরও। পুলিশের এএসআই শামসুল বর্তমানে কানাইঘাট থানায় কর্মরত রয়েছেন।

উপজেলার পশ্চিম লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়নের সিঙ্গারীপার গ্রামের মৃত ছইফ উল্লাহর ছেলে ফয়জুল হক’র (৬৩) পরিবারের জন্য এ মহানুভবতার পরিচয় দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি জমির মালিককে বুঝিয়ে ভূমিহীন পরিবারটির জন্য ৫শতক জমির ব্যবস্থা করে দেন। পরে সেখানে নির্মাণ করে দেন ঘর।

হতদরিদ্র ফয়জুল হক জানান, তিন সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে তার অভাবের সংসার। দিনমজুরী করে যা পান তা দিয়ে চলে তার সংসার। বেশ ক’বছর আগে অভাবের তাড়নায় তার নিজ গৃহ বিক্রি করে দিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন গ্রামের হাজী মুহিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তির বাগানের টিলায়। সেখানে অস্থায়ী বাঁশ-বেতের ঘর তুলে থাকতেন তারা।

কিন্তু কিছুদিন আগে মুহিবুর রহমান তার বাগানটি আলী আহমদ নামের আরেক জনের কাছে বিক্রি করে দেন। তখন নতুন মালিক তাদের সেখান থেকে সরে যেতে বলেন। কিন্তু তারা নিরূপায় হওয়ায় সেখান থেকে যাচ্ছিলেন না। পরে মালিক কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পরে সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. শামসুল আরেফিন জিহাদ ভূঁইয়ার হাতে। তিনি সরজমিন তদন্তে আসলে তার অসহায়ত্বের কথা তাকে খুলে বলেন। তখন পুলিশের কর্মকর্তা জমির মালিককে বুঝিয়ে তাদের জন্য ৫শতক জমির ব্যবস্থা করে দেন। পরে সেখানে তার নিজ খরচে একটি টিনসেডের দুই কক্ষ বিশিষ্ট ঘর নির্মাণ করে দেন।

পহেলা বৈশাখের দিনে ওই পুলিশ কর্মকর্তা নতুন কাপড় আর মিষ্টি নিয়ে তাদের খোঁজ নিতে এসেছিলেন বলেও জানান ফয়জুল। এসময় তিনি এএসআই শামসুল আরেফিনের জন্য দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করেন।

এ ব্যাপারে থানার এএসআই শামসুল আরেফিন জিহাদ ভূঁইয়া জানান, একটি উচ্ছেদ অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে অসহায় পরিবারের অবস্থা দেখে আমার মনটি দুর্বল হয়ে পড়ে। ‘মানুষ মানুষের জন্য’ এই কথাটির বাস্তব রূপ দেয়ার জন্য আমি এ অসহায় দরিদ্র পরিবারের বসতি স্থাপনের জন্য একটি টিনসেডের ঘর তৈরি করে দিয়েছি। হতদরিদ্র পরিবারটির সদস্যদের মুখে হাসি ফুটাতে পেরে তিনি নিজেকে গর্বিত মনে করছেন বলেও উল্লেখ করেন। পাশাপাশি জমি দাতার প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট