অবৈধভাবে ইতালি যেতে ভূমধ্যসাগরে ঠান্ডায় জমে ২ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ১১:০৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২৫

অবৈধভাবে ইতালি যেতে ভূমধ্যসাগরে ঠান্ডায় জমে ২ জনের মৃত্যু

Manual7 Ad Code

অবৈধভাবে ইতালি যেতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় মাদারীপুরের দুই ব্যক্তি মারা গেছেন বলে জানিয়েছে তাঁদের পরিবার।

Manual2 Ad Code

নিহতরা হলেন সদর উপজেলার ধুরাইল ইউনিয়নের চর বাজিতপুর গ্রামের জাফর ব্যাপারী (৪০) ও সিরাজুল হাওলাদার (৩৫)।

পরিবারের দাবি, মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ২১ দিন আগে, তবে খবর পাওয়া গেছে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে।

স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১ সেপ্টেম্বর স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে বাড়ি ছাড়েন জাফর ও সিরাজুল। তারা ঢাকা থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছান। সেখান থেকে ১৪ অক্টোবর ইঞ্জিনচালিত একটি ছোট নৌকায় করে ইতালির উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। নৌকাটিতে ছিলেন আরও প্রায় ৫০ জন।

ভূমধ্যসাগরের মাঝপথে নৌকার তেল ফুরিয়ে গেলে সেটি সাগরে ভাসতে থাকে। এক সপ্তাহ পর ২১ অক্টোবর তীব্র শীত ও ঠান্ডায় জমে জাফর ও সিরাজুলসহ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। মানব পাচার চক্র বিষয়টি গোপন রাখলেও মঙ্গলবার রাতে নিহতদের মৃত্যুসংবাদ জানতে পারেন তাঁদের স্বজনেরা।

পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় দালাল লোকমান সরদার তাঁদের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নিরাপদে জাহাজে করে ইতালি পৌঁছে দেবেন। কিন্তু ছোট্ট একটি নৌকায় ওঠানো হয় তাঁদের। মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে লোকমান গা-ঢাকা দিয়েছেন।

Manual4 Ad Code

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে লোকমান সরদার দাবি করেন, তিনি মানব পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত নন এবং নিহতদের বিষয়েও কিছু জানেন না। তবে তাঁর ভাবি ঝর্ণা আক্তার বলেন, ‘লোকমান ভাইয়ের কোনো দোষ নেই। এলাকার লোকজন তাঁর কাছে আসে কারণ তাঁর দুই ছেলে আগে ইতালি গেছে।”

নিহত জাফরের ভাই জাকির ব্যাপারী জানান, ‘আমরা ভাবছিলাম ওরা ভালো আছে। পরে জানতে পারি, ঠান্ডায় জমে নৌকাতেই মারা গেছে দুজন। দালালকেও ধরেছিলাম, সে মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে।’

জাফরের বাবা লাল মিয়া ব্যাপারী বলেন, ‘লোকমান আমাদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছে। বলেছিল কোনো ঝামেলা হবে না। কিন্তু আমার ছেলেকে সাগরেই মরতে হলো। আমি ওই দালালের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

Manual5 Ad Code

নিহত জাফর দুই মেয়ের জনক। তাঁর স্ত্রী রুনা বেগম বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে নিয়ে এখন কীভাবে বাঁচব? সব শেষ হয়ে গেছে।”

অন্যদিকে মৃত সিরাজুলের স্ত্রী নিলুফা বেগম জানান, “আমার আড়াই বছরের সন্তান এখনো জানে না তার বাবা নেই। দালালের কারণে আমার সংসার শেষ হয়ে গেল।’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত দালালকে ধরতে অভিযান চলছে।’

তিনি সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘মানব পাচার রোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বৈধ পথে, সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিদেশে যাওয়া নিরাপদ।’


 

Manual8 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code