কানাইঘাটে গর্ভবতী স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, সন্তানের মৃত্যু স্বামী আটক

প্রকাশিত: ৩:০৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২৫

কানাইঘাটে গর্ভবতী স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, সন্তানের মৃত্যু স্বামী আটক

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাবানা বেগমের (২০) শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন স্বামী হোসেন আহমদ চৌধুরী আক্তার (৪৫)। ঘটনার তিন দিন পর স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ তাঁকে আটক করেছে।

সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে কানাইঘাট উপজেলার সাতবাঁক ইউনিয়নের চরিপাড়া গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১২ জুলাই) রাত আটটার দিকে কানাইঘাটের লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কান্দলা গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর আব্দুল জব্বারের মেয়ে সাবানা বেগমের ওপর এই নির্মম হামলা চালানো হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিকভাবে কলহ চলছিল। সেদিন অসুস্থ স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে নিতে যান আক্তার। শ্বাশুড়ি তাতে বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বাড়ি থেকে বের হন এবং কিছুক্ষণ পর বাজার থেকে একটি টাইগার ড্রিংকের বোতলে করে পেট্রোল কিনে এনে ঘুমন্ত স্ত্রীর গায়ে ঢেলে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যান।

মেয়ের আর্তচিৎকারে পরিবারের সদস্য ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নেভান। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাবানা বেগমকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং সেখান থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (১৩ জুলাই) সকালে সাবানা বেগম একটি মৃত কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।



কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, স্ত্রীর গায়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগে হোসেন আহমদ চৌধুরী আক্তারকে আটক করা হয়েছে। ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘শনিবার রাতেই আমি হাসপাতালে গিয়ে সাবানার অবস্থা দেখি। পরে পুলিশকে জানানো হলে মৃত নবজাতককে দাফন করা হয়।’

স্থানীয়দের কেউ কেউ জানিয়েছেন, আক্তার দীর্ঘদিন ধরেই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং একসময় কুয়েতে ছিলেন। তবে এমন নিষ্ঠুর ঘটনার কোনো কারণ তাঁরা খুঁজে পাচ্ছেন না।

সাবানার বাবা আব্দুল জব্বার বলেন, ‘মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম ভেবে ছিলাম ভালো থাকবে। এখন সে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। আমি বিচার চাই।’


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট