খরচ কম হওয়ায় টাকা ফেরত পাচ্ছেন সরকারী হাজিরা

প্রকাশিত: ১০:৩২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২৫

খরচ কম হওয়ায় টাকা ফেরত পাচ্ছেন সরকারী হাজিরা

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ সম্পন্ন করা ৪ হাজার ৯৭৮ জন হাজী কে ৮ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ১৮৩ টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

রোববার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

উপদেষ্টা জানান, একজন হাজি সর্বনিম্ন ৫ হাজার ৩১৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫৩ হাজার ৬২৪ টাকা পর্যন্ত ফেরত পাবেন। বাড়িভাড়া ও সার্ভিস চার্জ কিছু ক্ষেত্রে নির্ধারিত দরের চেয়ে কম হওয়ায় হজ প্যাকেজের কিছু অর্থ উদ্বৃত্ত হয়েছে। এই উদ্বৃত্ত অর্থ সরাসরি হাজিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ফেরত দেওয়া হবে।

সাধারণ হজ প্যাকেজ-১ অনুযায়ী, চার ও ছয় নম্বর বাড়িতে অবস্থানকারী পূর্ণ প্যাকেজের হাজিরা ৫ হাজার ৩১৫ টাকা করে ফেরত পাবেন। চার নম্বর বাড়ির শর্ট প্যাকেজের হাজিরা পাবেন ২৩ হাজার ২৭ টাকা করে। পাঁচ নম্বর বাড়ির পূর্ণ প্যাকেজের হাজিরা পাবেন ১৩ হাজার ৫৭০ টাকা। শর্ট প্যাকেজে পাঁচ ও ছয় নম্বর বাড়িতে কাউকে রাখা হয়নি।

সাধারণ হজ প্যাকেজ-২ এর আওতায় এক নম্বর বাড়িতে অবস্থানকারী পূর্ণ প্যাকেজের হাজিরা ১৯ হাজার ১৯২ টাকা এবং শর্ট প্যাকেজের হাজিরা ৫১ হাজার ৬৯২ টাকা করে ফেরত পাবেন। দুই নম্বর বাড়ির পূর্ণ প্যাকেজের হাজিরা পাবেন ২১ হাজার ১৪২ টাকা এবং শর্ট প্যাকেজের হাজিরা পাবেন ৫৩ হাজার ৬৪২ টাকা। তিন নম্বর বাড়ির পূর্ণ প্যাকেজের হাজিরা পাবেন ২৪ হাজার ২৬২ টাকা। সেখানে শর্ট প্যাকেজে কেউ ছিলেন না।

ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, এবারের হজ ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। সৌদি সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী সময়মতো সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। হজযাত্রী নিবন্ধন, অর্থ প্রেরণ, তাঁবু বরাদ্দ, বাড়িভাড়া ও পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি, ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ও ফ্লাইট শিডিউল ঠিক রেখে হজযাত্রীদের পুনর্বণ্টন সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় প্রো-অ্যাক্টিভ অবস্থান নিয়ে কাজ করেছে এবং কোনো সংকট তৈরি হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

তিনি জানান, এবছর হজে যেতে না পারার কষ্ট কাউকে পেতে হয়নি, ফ্লাইট বিপর্যয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং কোথাও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও দেখা যায়নি। শতভাগ নিবন্ধিত হজযাত্রী হজ পালনে সক্ষম হয়েছেন।

তিনি দেশবাসীকে প্রতারণা থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন। বলেন, হজের রিফান্ড বা অন্য কোনো আর্থিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে ধর্ম মন্ত্রণালয় কখনো ফোন করে কারো কাছ থেকে বিকাশ, নগদ, রকেট নম্বর বা পিন চায় না এবং ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্যও নেয় না। কেউ যদি এ ধরনের আচরণ করে, সে প্রতারক।

উপদেষ্টা জানান, এবার হজে হারিয়ে যাওয়া হাজির সংখ্যা কমেছে। হারানো ৮৯২ জন হাজির মধ্যে ৮৯১ জনকে খুঁজে পাওয়া গেছে। এ বছর ৪৫ জন হাজি মারা গেছেন, যাদের প্রত্যেকেরই আগে থেকে বিভিন্ন জটিল রোগ ছিল।

তিনি হজ ব্যবস্থাপনাকে একটি সফল টিমওয়ার্ক হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টিম স্পিরিট নিয়ে কাজ করেছেন বলেই হজ ব্যবস্থাপনা সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আন্তরিক সহযোগিতার জন্য অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিমান, সিভিল এভিয়েশন, স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সাউদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস, হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন (হাব) এর সভাপতি ও মহাসচিবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক, অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আয়াতুল ইসলাম, হজ অনুবিভাগের যুগ্মসচিব ড. মঞ্জুরুল হক, হাব সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার ও মহাসচিব ফরিদ আহমদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট