‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

প্রকাশিত: ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ, জুন ৫, ২০২৫

‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ। ৯ জিলহজ ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হতে হয়। হাদিসের ভাষায়- আল-হাজ্জু আরাফাহ অর্থাৎ আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়াই হজ। এ যে বিশ্ব মুসলিমের সম্মিলন স্থল বা মিলনমেলা। লাব্বাইক ধ্বনিতে আরাফার পথে হাজিরা।

তাওবাহ-ইসতেগফার, তাকবির ও তালবিয়ায় মুখরিত থাকবে ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দান। হজে অংশগ্রহণকারীরা এক সামিয়ানায় সমবেত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।

পাঁচ দিনব্যাপী পবিত্র হজের প্রধান আনুষ্ঠানিকতার এই দিনে তালবিয়া তথা ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্‌দা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’ (আমি উপস্থিত হয়েছি হে আল্লাহ, আমি উপস্থিত হয়েছি তোমার সমীপে, তোমার কোনো শরিক নেই, পুনরায় আমি উপস্থিত হয়েছি, নিশ্চয়ই সব প্রশংসা ও সকল নিয়ামত শুধু তোমারই জন্য, সব সাম্রাজ্যও তোমার এবং তোমার কোনো শরিক নেই) ধ্বনিতে গোটা আরাফাত ময়দান প্রকম্পিত হচ্ছে।

দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ, রহমত প্রাপ্তি ও নিজেদের গোনাহ মাফের জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে অশ্রুসিক্ত নয়নে ফরিয়াদ জানাবে সমবেত ধর্মপ্রাণ মুসলমান।

পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা চলে পাঁচ দিন। গতকাল ৮ জিলহজ মিনায় অবস্থানের মাধ্যমে শুরু হয়েছে এ আনুষ্ঠানিকতা। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে মক্কা থেকে হজযাত্রীরা তাঁবুর শহর মিনার উদ্দেশে রওনা হন। তারা মক্কায় নিজ নিজ রুম থেকে ইহরাম বেঁধে মিনায় পৌঁছান। মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। গতকাল জোহর থেকে আজ ফজর পর্যন্ত (সারা দিন-সারা রাত) মিনায় অবস্থান করে মোট পাঁচ ওয়াক্ত আদায় করবেন তারা। এ ছাড়া এখানে তাকবির, তাসবিহ, দোয়া এবং কোরআন তিলাওয়াতে সময় কাটান তারা। এরপর ফজরের নামাজ পড়ে রওনা হন আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে।

মূলত আরাফাতের দিবসকে (৯ জিলহজ) ধরা হয় মূল হজ হিসেবে। আজ ভোর থেকেই হজযাত্রীরা আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। তাদের সমস্বরে উচ্চারিত ‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের আকাশ-বাতাস। দুপুরে হজের খুতবা শুনবেন তারা। তারপর এক আজানে হবে জোহর ও আসরের নামাজ। এই ময়দানেই আরাফাত পাহাড়ে দাঁড়িয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তার বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই স্মৃতি ও রীতিকে লালন করেন বিশ্বের সব মুসলিম। এদিন বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মুসলিম রোজা পালন করেন।

সূর্যাস্তের পর তারা আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করে যাত্রা করবেন মুজদালিফার পথে। সেখানে আবার তারা এক আজানে আদায় করবেন মাগরিব ও এশার নামাজ। আজ রাতে মুজদালিফায় তারা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করবেন। এ সময় তারা মুজদালিফা থেকে পাথর সংগ্রহ করবেন জামারায় প্রতীকী শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য। এরপর আগামীকাল শুক্রবার সকালে সূর্যোদয়ের পর জামারায় প্রতীকী বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। পরে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করবেন। কোরবানি করে মাথা মুণ্ডন করবেন। এহরাম খুলে পরবেন সাধারণ পোশাক। আবার কাবাঘর তাওয়াফ করবেন। সাফা-মারওয়ায় সাতবার সাঈ (চক্কর) করবেন। এরপর আবার ফিরে যাবেন মিনায়। এর পরদিন এবং তার পরদিন অর্থাৎ টানা দুই দিন দ্বিতীয় ও ছোট শয়তানকে পাথর মারার মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট