৬ দফা দাবিতে সিলেট বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ৫:৪৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২৫

৬ দফা দাবিতে সিলেট বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা

ছয় দফা দাবিতে সিলেট নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা।

এর আগে নগরীর কাজীরবাজার সংলগ্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে মিছিল সহকারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। এসময় প্লেকার্ড হাতে নানা স্লোগান দেয় তারা। পরে শহীদ মিনারের সামনে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। এতে অন্তত ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’র ডাকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেটে এই কর্মসূচি পালন করে তারা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেটেও সমাবেশ করা হচ্ছে। সমাবেশের মূল লক্ষ্য সরকারের উচ্চপর্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং যৌক্তিক দাবিগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এসময় তারা কুমিল্লায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার দাবি করেন। তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক হওয়া সত্ত্বেও এখনও সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে, গত শনিবার দুপুরে ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি পালন করে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার দুপুরে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে মিছিল করেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বেশ কিছুদিন যাবত সিলেট পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। দাবীগুলো হলো- জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা–ইন–ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।

তৃতীয় দাবি, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।

ষষ্ঠ দাবি, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস এবং ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।