৫ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:১৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০২৫
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে টমটম পার্কিং নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে শ্রীমঙ্গল চৌমুহনা ও তার আশপাশ রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে ৫৬ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। রবিবার রাত ১১ টা থেকে ২টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ চলাকালে মার্কেটে আসা লোকজন ও পথচারীসহ উভয়পক্ষে প্রায় অর্ধশত আহত হয় বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় ১৫টি টমটম, ১টি প্রাইভেট কার ভাংচুর হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরে এ ঘটনায় জড়িত মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক মেয়র মহসিন মিয়া মধুসহ ১৪ জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
এসময় ওই মেয়রের বাসায় সেনাবাহিনী তল্লাসী চালিয়ে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় শহরে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা লোকজন আতংকিত হয়ে ভয়ে পালিয়ে যান ও ঈদের আনন্দ পন্ড হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শহরের হবিগঞ্জ সড়কে গদার বাজার নামক স্থানের সরকারী একটি খাস জমির একটি অংশে বিগত কয়েক মাস পূর্বে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা মহসিন মিয়া মধু বিনা লাভের বাজার খোলেন। কিন্তু পূর্বে ওই গদার বাজার ছিল টমটম চালকদের রিক্সা স্ট্যান্ড। রোববার রাত সাড়ে ১০ টায় মধু মিয়া ওই বিনা লাভের বাজার পরিদর্শনে আসলে বাজারের সামনে টমটম পার্কিং করা দেখে মধু মিয়া টমটম চালকদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এসময় টমটম এলাকার বাসিন্দা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আনার মেম্বার টমটম চালকদের পক্ষ নিয়ে মধু মিয়াকে জিজ্ঞাসা করেন গরীব লোকদের সাথে কেন অশোভন আচরণ করছেন? একপর্যায়ে ওই ইউপি সদস্যের সাথে মধু মিয়া ও তার লোকজনের বাকবিতন্ডায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে মধু মিয়ার লোকজন ওই সময় প্রায় ১৫টি টমটম ভাংচুর করেন।
এসময় মেম্বার আনার ও টমটম চালকরা ঘটনাস্থল থেকে সরে যায়।
তারপর শহরের ভানুগাছ সড়কে মধু মিয়ার লোকজন সাগর নামে এক পরিবহন শ্রমিক নেতার একটি প্রাইভেট কারও ভাংচুর করেন।
পরে টমটম চালকদের এলাকা পশ্চিম ভাড়াউড়া গ্রামে এ খবর পৌঁছলে রাতে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে শহরের দিকে কয়েক শ গ্রামবাসী হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল দিয়ে সাবেক মেয়র মধু মিয়ার বাসায় আক্রমণ করতে আসেন।
এদিকে শহরের চৌমুহনাতে পুলিশ অবস্থান নিয়ে ফাঁকা গুলি করতে থাকে। অপর দিকে মেয়রের লোকজনও শহরের স্টেশন রোড থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গ্রামবাসীর ওপরে।
একপর্যায়ে পুলিশ সরে গেলে উভয় পক্ষ মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় পক্ষে ৩৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে হাসপাতাল সূত্রে।
এসময় উপজেলার সবুজবাগ এলাকার জয় চৌধুরী নামে একজন পথচারী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে রাতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সংঘর্ষ রাত ২ টা পর্যন্ত চলে।
এসময় শহরের বিভিন্ন দোকানে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা লোকজন আতংকিত হয়ে দ্বিকবিদিক ছুটে যান। ব্যবসায়ীরা আতংকিত হয়ে দোকানপাট বন্ধ করে চলে যান।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এসময় ওই মেয়রের বাসায় সেনাবাহিনী তল্লাসী চালিয়ে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। এসময় সেনাবাহিনী মহসিন মিয়া মধু, তার ছেলে মুরাদ হোসেন সুমন, চাচাতো ভাই পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম আহমদ, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বিএনপি নেতা আলকাছ মিয়াসহ ১৩ জনকে আটক করে শ্রীমঙ্গল থানায় হস্তাস্তর করা হয়।
এসময় ওই রাতেই সেনাবাহিনীর পশ্চিম ভাড়াউড়ায় অভিযান চালিয়ে আনার মেম্বারের ছেলেকে আটক করে নিয়ে আসে।
এব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আমিনুল ইসলাম জানান, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ১৪ জনকে তাদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে এবং সোমবার বিকালে সাবেক মেয়রসহ ১৪ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, রোববার রাতে শহরে টমটম চালক, গ্রামবাসী ও সাবেক মেয়রের লোকজনের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়েছে, এতে অনেক লোকজন হতাহত হতে পারতো।
পুলিশ যখন সংঘর্ষ থামাতে পারছিলনা তখন শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও মানুষের জান মালের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনী তলব করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। বর্তমানে শহরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে বলে তিনি জানান।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D