ছাতকে ভিক্ষা না করার শপথ নিলেন ১৫জন নারী-পুরুষ ভিক্ষুক

প্রকাশিত: ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২৫

ছাতকে ভিক্ষা না করার শপথ নিলেন ১৫জন নারী-পুরুষ ভিক্ষুক

নবীর শিক্ষা’ কবিতার মতো ভিক্ষা না করার শপথ নিয়েছেন ছাতক উপজেলার পেশাদার ১৫জন নারী-পুরুষ ভিক্ষুক।

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে ভিক্ষুক পূনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত ১৫জন ব্যক্তির মাঝে সহায়ক উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে তারা এ শপথ নিলেন।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারী) বিকালে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে সমাজসেবা কর্মকর্তা শাহ মো. শফিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গরু, ছাগল, হাঁস, ভ্যানগাড়িসহ কাঁচামাল, ভ্যানগাড়িসহ চায়ের দোকানের যাবতীয় আসবাবপত্র, একটি মুদি দোকানের মালামাল, ভ্যানগাড়িসহ স্টেশনারী ও স্ন্যাকস জাতীয় পণ্য বিতরণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম।

এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মো. তরিকুল ইসলাম নবীজীর শিক্ষা করোনা ভিক্ষার বিষয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্যের পর ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করার শপথ নিলেন উপকারভোগিরা। ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে ব্যবসা করে স্বাবলম্বীর জন্য সহায়তা উপকরণ দেওয়া হয়েছে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গোয়ালগাঁও গ্রামের মৃত নুর মিয়ার স্ত্রী জয়ফুল নেছা ও কালারুকা ইউনিয়নের কালারুকা গ্রামের মৃত রাকিম আলীর স্ত্রী আলছুমা বেগমকে। তারা পেয়েছেন ৭৫টি করে দেড়শত হাঁস। উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের গোদাবাড়ি গ্রামের আজমত আলীর ছেলে নুর ইসলামকে একটি গাভী দেয়া হয়। ছাতক সদর ইউনিয়নের ব্রাক্ষনগাঁও গ্রামের আবদুন নুরের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, দক্ষিন খুরমা ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত হুছম আলীর ছেলে মখদ্দুছ আলী, জাউয়াবাজার ইউনিয়নের সাউদেরগাঁও গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন, দোলারবাজার ইউনিয়নের চিছরাওলী গ্রামের আরজ আলীর ছেলে হানিফ আলী, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের রুস্তম আলীর ছেলে জমসিদ আলীকে ৪টি করে ছাগল দেয়া হয়। এছাড়া ব্যবসা করার জন্য উত্তর খুরমা ইউনিয়নের ছোট বিহাই গ্রামের মৃত আসিদ আলীর ছেলে নুরুল আবদীন ও ভাতগাঁও ইউনিয়নের ভাতগাঁও গ্রামের মৃত রহিম উল্লার ছেলে নোয়াব আলীকে একটি করে নতূন ভ্যানগাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল দেয়া হয়। মুদির দোকানের যাবতীয় মালামাল ক্রয় করে দেয়া হয়েছে ভিক্ষুক আবদুস শহিদকে। তিনি চরমহল্লা ইউনিয়নের মৃত তাহির আলীর ছেলে।

এদিকে, সিংচাপইড় ইউনিয়নের সিংচাপইড় গ্রামের মৃত আঞ্জব আলীর স্ত্রী সুনারা বেগমকে একটি নতূন ভ্যানগাড়িসহ স্টেশনারী ও স্ন্যাকস জাতীয় পণ্য দেয়া হয়। অপরদিকে, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের লাকেশ্বর গ্রামের মৃত নসিব আলীর ছেলে উকিল আলীকে ব্যবসা করে পরিবার চালানো এবং স্ববলম্বীর জন্য দেয়া হয়েছে চা দোকানের টেবিল বেঞ্চ গ্যাসের চুলাসহ যাবতীয় মালামাল। পাশাপাশি মালামাল পরিবহন করে গন্তব্যে পৌঁছাসহ ১২জনকে নগদ দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ১১হাজার টাকা। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় কর্তৃক দেওয়া গরু-ছাগল লালন পালন এবং ব্যবসা করে প্রতিদিন আয়ের অর্থ দিয়ে পরিবার পরিচালনাসহ স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশেষ ধন্যবাদ জানান উপকারভোগিরা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ছাতক প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রনি, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ মহসীন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) মো. আল আমীনসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট