আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিপর্যয়, সিলেটের চার বিএনপি নেতাকে শোকজ

প্রকাশিত: ১০:৩৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২৫

আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিপর্যয়, সিলেটের চার বিএনপি নেতাকে শোকজ

সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপির বিপর্যয়ের কারণে দলটির জেলা ও মহানগরের শীর্ষ চার নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা নোটিশ তাঁদের কাছে পৌঁছেছে।

নোটিশ পাওয়া নেতারা হলেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমেদ চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েছ লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।

নোটিশে বিএনপির শীর্ষ চার নেতাকে বলা হয়, সম্প্রতি সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী প্যানেলকে বিজয়ী করার জন্য জেলা বা মহানগর বিএনপি যথাযথ উদ্যোগ নেয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উদাসীন ও নির্বিকার ভূমিকার জন্য নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী প্যানেলের বিপর্যয় ঘটে।

দায়িত্বহীনতার কারণে সিলেট বিএনপির চার শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না—সে বিষয়ে একটি লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এ জবাব জমা দিতে হবে।

জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েছ লোদী নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করে তাঁরা জানান, তাঁরা দলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। নির্দেশনা মেনে যথাসময়ে নোটিশের জবাব দেবেন।

এদিকে নির্বাচনে বিপর্যয়ের কারণে গত ১৯ জানুয়ারী রোববার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ফোরামের সিলেটের কমিটি বিলুপ্ত করার বিষয়টি জানানো হয়। এ ছাড়া বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে সংগঠনটি ওই দিন তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে। কমিটিকে সরেজমিন অনুসন্ধান ও ফোরামের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২৬টি পদের মধ্যে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১২টিতে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা জয় পেয়েছেন। এ ছাড়া বিএনপিপন্থী ছয়জন ও জামায়াতপন্থী পাঁচজন জয় পেয়েছেন। বাকিদের মধ্যে একজন জাসদপন্থী ও দুজনের দলীয় পরিচয় জানা যায়নি।

আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনে প্রায় প্রতিটি পদেই বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা অংশ নেন। তবে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তাঁরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন না। এতে বিএনপি ঘরানার প্রার্থীদের দলটির সমর্থক অনেক ভোটার ভোট দেননি। এ অবস্থায় বিএনপিপন্থী বেশির ভাগ আইনজীবী নির্বাচনে পরাজিত হন। তবে আওয়ামী লীগের চলমান দুঃসময়েও দলটির সমর্থক অনেক আইনজীবী জয় পেয়ে আলোচনার জন্ম দেন। যদিও নির্বাচনে জয়ী আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা বলছেন, তাঁরা দলীয় পরিচয়ে কিংবা প্যানেলে নির্বাচন করেননি। দলীয় পরিচয়ে নির্বাচিতও হননি। তাঁরা একক উদ্যোগে প্রার্থী হয়ে জয় পেয়েছেন।