কানাইঘাটে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবী হত্যা

প্রকাশিত: ৬:১১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৫, ২০২৫

কানাইঘাটে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবী হত্যা

সিলেটের কানাইঘাটে এক গৃহবধূর গলায় ওড়না প্যাঁচানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। নিহত ঐ গৃহবধূ পৌরসভার বায়মপুর লক্ষীপুর গ্রামের ফয়ছল আহমদের স্ত্রী ফাতিমা বেগম ওরফে ফুলন (২২)। এ ঘটনার পরপরই ফাতিমা বেগমের স্বামী ফয়ছল আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যরা দুই বছরের শিশু কন্যাকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।

নিহতের পিত্রালয়ের স্বজনের দাবী, ফাতিমা বেগম ফুলন আত্মহত্যা করেনি, তাকে স্বামীর বাড়ির লোকজন হত্যা করে ঘটনা ধামাচাপা দিতে লাশের গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়েছে।

নিহত ফাতিমার পিতা বাউরভাগ ২য় খন্ড গ্রামের ফারুক আহমদ জানান, শনিবার (৪ জানুযারী) বিকেল ৩টার দিকে ফাতিমার ননদ মাসুমা বেগম তাকে ফোন দিয়ে বলে ফাতিমা বেগম ওরফে ফুলন গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। সাথে সাথে ফারুক আহমদ পরিবারের লোকজন নিয়ে মেয়ের স্বামীর বাড়িতে গেলে ফাতিমার স্বামী ফয়ছল আহমদ, তার শ্বশুড় নুর উদ্দিন ওরফে কুটই, শ্বাশুড়ী সিদ্দেকা বেগম, ননদ মাসুমা বেগম এবং দুই বছরের শিশু মেয়ে নাজিরা বেগমকে বাড়িতে পাননি। ঘটনা জানাজানি হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন বলে প্রতিবেশিরা জানান।

খবর পেয়ে কানাইঘাট থানার এসআই দুর্গা কুমার দেব একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে টিনশেডের ঘরের ভিতরে তীরের সাথে ফাতিমা বেগম ফুলনের ওড়না প্যাচানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

ফাতিমা বেগমের ভাই জীবান আহমদ ও চাচা শামীম আহমদ জানান, স্বামী ও শ্বাশুড়ী প্রায়ই যৌতুকের টাকার জন্য ফাতিমাকে মারপিট নির্যাতন করতো। যৌতুকের টাকা দিয়ে ফয়ছল আহমদ নেশা করে, কোন কাজকর্ম করে না। ঘটনার দিন শনিবার দুপুরে ফাতিমা বেগম তার ছোট ভাই জীবান আহমদকে ফোন দিয়ে বলে তার স্বামী ও শ্বাশুড়ীকে ৮ হাজার টাকা দেয়ার জন্য। টাকা না দিতে পারলে তাকে মারপিট নির্যাতন করবে।

তারা আরো অভিযোগ করেন, যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী সহ তার পরিবারের লোকজন মিলে ফাতিমাকে হত্যা করে লাশ তীরের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে স্বামী সহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান তারা।

কানাইঘাট থানার এসআই দুর্গা কুমার দেব জানান, আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফাতিমার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছেন। এ সময় তার স্বামীর বাড়ির লোকজন কেউ বাড়িতে ছিল না। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট