৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২, ২০২৫
সাবেক মন্ত্রী-এমপি দ্বন্দ্বে ৪ বছর ধরে বন্ধ থাকা সিলেট-ছাতক রেলপথ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় এর অনুমোদন দেওয়া হয়।
জানা যায়, বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের সিলেট থেকে ছাতক বাজার সেকশন (মিটার গেজ ট্র্যাক) পুনর্বাসন প্রকল্পের ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
প্রকল্পের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৪টি দরপত্র জমা পড়ে। ৪টি দরপত্রই টেকনিক্যালি রেসপনসিভ বিবেচিত হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মীর আখতার হোসেন লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
এতে মোট ব্যয় হবে ২১৭ কোটি ৩৪ লাখ ৪ হাজার ৩৬৯ টাকা। প্রকল্পটি একনেক থেকে ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এই প্রকল্পের ব্যয়ের ৮০ শতাংশ ইউএস ডলার এবং ২০ শতাংশ বাংলাদেশি টাকায় পরিশোধ করা হবে।
২০২২ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট থেকে ছাতকবাজার পর্যন্ত ৩৪ কিলোমিটার রেললাইনের এমব্যাংকমেন্ট ও রেলপথ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে রেল চলাচল বন্ধ আছে। রেলপথটি পুনর্বাসন করে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করার জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।
ব্রিটিশ আমল থেকে শিল্পশহর হিসেবে ছাতকের খ্যাতি। সে সময় সিলেট থেকে ছাতক পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারিত হয়েছিল বাণিজ্যিক কারণে। এরপর পরিকল্পনা ছিল সেখান থেকে সুনামগঞ্জ জেলা শহর (তৎকালীন মহকুমা) পর্যন্ত সম্প্রসারিত করার।
আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত রেলমন্ত্রী থাকাকালে সেই পুরোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি আলোচনায় আসে। তবে রেল মন্ত্রণালয় থেকে তিনি সরে গেলে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। নতুন পরিকল্পনায় রেললাইনটি ছাতককে বাদ দিয়ে গোবিন্দগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জে নেওয়ার কথা বলা হয়। এর প্রতিবাদ জানান সেই সময়ের স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক। মন্ত্রী-এমপির দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনে দুটি পথের কথা বলা হয়েছিল। রেলওয়ের দায়িত্বশীলদের বেশির ভাগ ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জের দক্ষিণ নতুনপাড়া ও কালীপুরের মাঝের হাওর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের পক্ষে মত দিয়েছিলেন। দুই কিলোমিটার জালিয়ার হাওর এবং বাকি পথ এখনকার সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের পাশ দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সুনামগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতার কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। যৌথভাবে এই সম্ভাবতার সমীক্ষা ও নকশা প্রণয়ের কাজ করে বাংলাদেশের মজুমদার এন্টারপ্রাইজ এবং চীনের সিএইচইসি। কিন্তু এরপর আর কোনো অগ্রগতির খবর পাওয়া যায় না।
সরেজমিনে সমীক্ষা করা হলে বিদ্যমান আফজালাবাদ স্টেশন থেকে দক্ষিণ খুরমা, শান্তিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ রুটটি রেলপথ নির্মাণের জন্য সবচেয়ে উপযোগী বলে বিবেচিত হয়।
সমীক্ষায় বলা হয়- ৪৫ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার অ্যালাইনমেন্টে টপোগ্রাফিক (ভূমি) জরিপের কাজ করা হয়েছে। এই রুটে আছে ৬৬টি ছোট-বড় জলাভূমি। দক্ষিণ খুরমা, শান্তিগঞ্জে দুটি স্টেশন নির্মাণ করতে হবে। রেলপথ নির্মাণের জন্য সরাতে হবে ১২৮টি বসতবাড়ি ও অবকাঠামো। সাড়ে ১৩ হাজার গাছ কাটা পড়বে। পাঁচটি স্টেশনের জন্য ৫০ একরসহ মোট ৬১৩ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। প্রকল্পটির কাজ এরপর আর এগোয়নি।
চার বছর আগে বন্ধের পূর্বে দীর্ঘদিন ঐতিহ্যবাহী ছাতক-সিলেট রেল-যোগাযোগ জোড়াতালি দিয়ে চলে আসছিল। তবে করোনা মহামারি শুরু হলে সারা দেশের অন্যান্য রেলপথের মতো এই পথটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। করোনার পরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রেল চলাচল স্বাভাবিক হলেও ছাতক-সিলেট রেল-যোগাযোগ আর চালু হয়নি। পরে ২০২২ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ছাতক-সিলেট রেললাইনের ছাতকের অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রায় ১৩ কিলোমিটার রেললাইন লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।
ম্যধ্যখানে রেললাইন চালুর ব্যাপারে তৎপরতাও শুরু হয়। কিন্তু মন্ত্রী-এমপির (সাবেক) দ্বন্দ্বে সেই প্রক্রিয়া থেমে গিয়েছিলো।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D