বসুন্ধরার চেয়ারম্যান-এমডির বিরুদ্ধে সিলেটে সাংবাদিকের মামলা

প্রকাশিত: ৬:২৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২, ২০২৫

বসুন্ধরার চেয়ারম্যান-এমডির বিরুদ্ধে সিলেটে সাংবাদিকের মামলা

চেক প্রতারণার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং তার ছেলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে সিলেটের এক সাংবাদিক মামলা করেছেন।

গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি করেন দৈনিক কালের কণ্ঠের সাবেক সিলেট ব্যুরো প্রধান আহমেদ নূর।

মামলায় ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি গ্রহণ করে বিচারক আবুল মোমেন আসামিদের হাজিরের জন্য সমন পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই মামলাটি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন- দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রকাশক ময়নাল হোসেন চৌধুরী, সম্পাদক হাসান হাফিজ, চেক স্বাক্ষরকারী শাহেদ মুহাম্মদ আলী ও নঈম নিজাম এবং প্রতিষ্ঠান হিসেবে কালের কণ্ঠ।

নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্টের ১৩৮/১৪০ ও অন্যান্য ধারা অনুযায়ী মামলাটি করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী।

মামলার বাদী সিলেটের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আহমেদ নূর বলেন, যে প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কাজ করেছি তার বিরুদ্ধে ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য মামলা করতে হয়েছে, এটা দুঃখজনক। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে নিজের জন্য গ্লানিরও।

তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে কর্মরত সাংবাদিকদের প্রতি মিডিয়া হাউসগুলো কী ধরনের আচরণ করে এটা তার একটা বড় উদাহরণ। আমি আমার জন্য এবং আমার উত্তরসূরীদের প্রতিবাদী করতে এবং মুখ বুজে যাতে অন্যায় সহ্য না করেন তার জন্য এই আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাদী বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ থেকে প্রকাশিত দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাড়ে ১২ বছর সিনিয়র রিপোর্টার পদমর্যাদায় সিলেট অফিসের ব্যুরো প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু সংবাদপত্র ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী দীর্ঘদিনের সার্ভিস বেনিফিট পরিশোধ করতে কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করেন। একপর্যায়ে বেনিফিটের টাকা পরিশোধে সম্মত হন। কিছু টাকা পরিশোধ করেন। এ ছাড়া প্রতি মাসে একটি চেক নগদায়নের তারিখ দিয়ে গত জানুয়ারি মাসে ১০টি চেক প্রদান করেন। কিন্তু দুটি চেক অনার হলেও আটটি চেক ডিজঅনার হয়। যার অর্থের পরিমাণ ৬ লাখ ১ হাজার ৮২৪ টাকা।

বাদী আইনজীবীর মাধ্যমে উকিল নোটিস পাঠালে আসামিরা এর জবাবে শিগগিরই টাকা পরিশোধের বিষয়টি তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে জানান। কিন্তু তারপরও টাকা পরিশোধের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় মঙ্গলবার সাতটি চেক ডিজঅনারের মামলা করেন।

এরআগে গত ৫ ডিসেম্বর একই বাদী আরেকটি চেক ডিজঅনারের মামলা করেন একই আদালতে। আদালত ওই মামলায়ও আসামিদের আদালতে হাজিরের জন্য সমন পাঠিয়েছেন।

এ ব্যাপারে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, আমাদের সংবাদমাধ্যম থেকে যারা বিভিন্ন সময় চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন বা চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের পাওনা পরিশোধের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আমরা কয়েকটি কিস্তির মাধ্যমে তাদের পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছিলাম কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তা নানা সময়ে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ মন্দার সময় বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়নি। ভর্তুকি দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো চালাতে হয়েছে। মামলার বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। তবে তাদের পাওনা পরিশোধের প্রক্রিয়াটি চলমান আছে।

তিনি বলেন, যাদের পাওনা ছিল তাদের টাকা ১০টি কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছি। দুটি কিস্তি পরিশোধ হয়েছে। তৃতীয় কিস্তির টাকা আমরা সংগ্রহ করছি। সেটি খুব দ্রুত ছাড় হবে বলে আশা করি। আর যাদের চেক এক্সপায়ার হয়ে গেছে, তাদের বলা হয়েছে, অ্যাকাউন্টসে যোগাযোগ করে সময় বাড়িয়ে নিতে। অনেকে তা করেছেনও। যারা অসুস্থ ছিলেন বা যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের পাওনা আমরা এরই মধ্যে পরিশোধ করে দিয়েছি। যিনি মামলাটি করেছেন তিনিও অ্যাকাউন্টসে যোগাযোগ করে সময় বাড়িয়ে নিতে পারেন।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট