উৎসবমুখর পরিবেশে সিলেট জেলা প্রেসক্লাব নির্বাচন সম্পন্ন

প্রকাশিত: ৯:৫৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪

উৎসবমুখর পরিবেশে সিলেট জেলা প্রেসক্লাব নির্বাচন সম্পন্ন

উৎসবমুখর পরিবেশে ঐতিহ্যবাহী সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলে ভোট গ্রহণ। সন্ধ্যার পর গণনা শেষে ঘোষণা করা হয় চূড়ান্ত ফলাফল।

নির্বাচনে দৈনিক আধুনিক কাগজের সম্পাদক মঈন উদ্দিন ৬৪টি ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সমকালের স্টাফ রিপোর্টার (সিলেট) ফয়সল আহমদ বাবলু পেয়েছেন ৪৫টি ভোট।

সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন দৈনিক শ্যামল সিলেটের চিফ রিপোর্টার ও বাংলানিউজ২৪ডটকম’র সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট (সিলেট) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন। তিনি পেয়েছে ৮৭টি ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দৈনিক একাত্তরের কথা’র বার্তা সম্পাদক মিসবাহ উদ্দীন আহমদ পেয়েছেন ২৪ ভোট।

সহসাধারণ সম্পাদক পদে ডেইলি সাউথ এশিয়ান টাইমস’র বিশেষ প্রতিনিধি (সিলেট) রবি কিরন সিংহ (মাইস্লাম রাজেশ) ফের নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৬১টি ভোট। তার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আনন্দ টিভি’র সিলেট প্রতিনিধি এম আর টুনু তালুকদার পেয়েছেন ৩৬টি ও দৈনিক ইত্তেফাকের নিজস্ব প্রতিবেদক (সিলেট) অমিতা সিনহা পেয়েছেন ১৩টি ভোট।

এছাড়া সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন দৈনিক শুভ প্রতিদিন’র সহকারী বার্তা সম্পাদক মো. সোহেল আহমদ সুহেল (নবীন সোহেল) (প্রাপ্ত ভোট ৮২- প্রথম), দৈনিক যুগভেরী’র স্টাফ ফটোগ্রাফার রনজিৎ কুমার সিংহ (বর্তমান) (প্রাপ্ত ভোট ৭৬- দ্বিতীয়), দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ’র সিলেট প্রতিনিধি তুহিন আহমদ (প্রাপ্ত ভোট ৭১- তৃতীয়) ও দৈনিক জাগ্রত সিলেট’র বার্তা সম্পাদক রাজীব আহমেদ রাসেল (রাজীব রাসেল) (প্রাপ্ত ভোট ৬৯- চতুর্থ)।

আরও দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দৈনিক যুগভেরীর সিনিয়র রিপোর্টার রায়হান উদ্দিন ৩৫ ও দৈনিক একাত্তরের কথার চিফ ফটো জার্নালিস্ট মো. মোহিদ হোসেন ২৭টি ভোট পেয়েছেন।

এদিকে, নির্বাচনে ৮টি পদে একক প্রার্থী থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন ৮ জন। তারা হলেন- সহ-সভাপতি (প্রথম) মনিরুজ্জামান মনির, সহ-সভাপতি (দ্বিতীয়) সজল ঘোষ, কোষাধ্যক্ষ আনন্দ সরকার, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল আহাদ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক শাহজাহান সেলিম বুলবুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. রেজাউল হক ডালিম, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক জামিল আহমদ (আহমেদ জামিল) এবং পাঠাগার সম্পাদক মো. আলী আকবর চৌধুরী কোহিনূর।

সিলেট জেলা প্রেসক্লাব নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম সামিউল আলম। বাকি দুই নির্বাচন কমিশনার ছিলেন- মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মণ ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সিলেট সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী।

ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে বর্তমান সভাপতি হাসিনা বেগম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম চৌধুরী নবেলসহ কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ক্লাবে মোট ভোটার ১১৯ জন। এরমধ্যে শনিবারের নির্বাচনে ১১১ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

নির্বাচন পরিদর্শন :
সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে ভোট চলাকালে নির্বাচন পরিদর্শনে আসেন বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংবাদিক ও পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দীকি, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমদ চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা ও শ্যামল সিলেটের সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি সামসুজ্জামান জামান, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সিলেট মহানগর শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আমির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হাফিজ মাওলানা ইমাদ উদ্দিন, মহানগর শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক

প্রভাষক বুরহান উদ্দিন, জেলা শাখার প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক হাফিজ মাওলানা সোলাইমান আহমদ শাহী এবং মহানগর শাখার স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক আরিফুর রহমান, সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান রিপন, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স’র সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়শনের (ইমজা) সভাপতি সজল ছাত্রী, সিলেট উইমেন্স জার্নালিস্ট ক্লাবের (সিইউজা) উপদেষ্টা সেলিনা চৌধুরী, বিএনপি নেতা চৌধুরী মোহাম্মদ সোহেল, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, বাসদ সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক আবু জাফর, লায়ন্স ক্লাব অব সিলেটের সভাপতি হুমায়ূন কবীর, চৈতন্য প্রকাশনীর প্রকাশক রাজিব চৌধুরী, শফিকুন নুর স্মৃতি সংসদের সদস্য সচিব সামছুল ইসলাম রুবেল, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শাহেদ আহমদ, গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আব্দুল মতিন, কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল মুন্না, সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গির আলম খায়ের এবং কবি ও সাহিত্যিক নোমান মিয়া প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ৭ ডিসেম্বর জেলা প্রেসক্লাবের নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী ১৩ ডিসেম্বর ক্লাব কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু করেন আগ্রহী প্রার্থীরা। পরবর্তী দুদিন বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মনোয়নয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়।

১৭ ডিসেম্বর বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উৎসবমূখর পরিবেশে একে একে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। এসময় ক্লাবের সদস্য এবং ভোটাররাও উপস্থিত ছিলেন। ঐতিহ্যবাহী ক্লাব কার্যালয় তখন মিলনমেলায় পরিণত হয়। ১৫ পদে ২২ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন।

পরে ১৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই ও খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়। ১৯ ডিসেম্বর বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও আপিল শুনানির সময় ধার্য্য ছিলো। এসময় দুই পদে মনোনয়ন কেনা এক প্রার্থী একটি পদ থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। আর ২০ ডিসেম্বর প্রকাশ করা হয় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা। এসময় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট