শাবি’র আবাসিক হল খুলছে আজ

প্রকাশিত: ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০২১

শাবি’র আবাসিক হল খুলছে আজ

Manual1 Ad Code

করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ ১৯ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সিলেট অঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের যেন অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে না, কবে খুলবে বিশ^বিদ্যালয়। সে প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শাবি খুলছে আজ। খুলে দেওয়া হচ্ছে আবাসিক হলসমূহ, নেওয়া হয়েছে নানা ধরণের প্রস্তুতি। আবাসিক হলগুলোও শিক্ষার্থীদেরকে বরণ করে নিতে নিয়েছে নানা পদক্ষেপ। তবে আবাসিক হলে উঠতে হলে কিংবা সশরীরে ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হলে অন্ততপক্ষে একডোজ টিকা নিতে হবে এমনটা জানিয়েছেন বিশ^বিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ।

জানা যায়, বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে বিশ^বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ভবনের আভ্যন্তরীণ সংস্করণ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া সংস্কারের পর চালু, বিশ^বিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে শিক্ষার্থীদেরকে টিকার ব্যবস্থাসহ করোনাকালে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় ছিল নানা উদ্যোগ। প্রশাসনিক জায়গা থেকে সকলেই নানা সংস্কারের কথা ও ক্যাম্পাস খোলার অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন।

Manual4 Ad Code

হলগুলো শিক্ষার্থীদেরকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন আবাসিক হলের প্রভোস্টবৃন্দ। জানিয়েছেন টয়লেট ও বাথরুম আধুনিকীকরণ, ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়া সংস্কার, হলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ নানা সংস্কারের কথা।

এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, আবাসিক হলসমূহ সংস্কার করা হয়েছে। টয়লেট ও বাথরুম আধুনিকীকরণ, ডাইনিং ও ক্যাফেটেরিয়া সংস্কার, হলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কাজ আমরা করেছি। এছাড়া শিক্ষাভবনের সংস্কার, সৌন্দর্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে আসা হয়েছে। এখন অপেক্ষায় শুধু শিক্ষার্থীদেরকে বরণ করে নেওয়ার।

সকলের জন্য টিকা নিশ্চিত করতে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সহায়তায় বিশ^বিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। এ বিষয়ে মেডিকেল সেন্টারের প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসনে বলেন, গত ১৬ অক্টোবর থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা চলবে আগামী ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত। তবে স্বশরীরে ক্লাসে উপস্থিতি কিংবা আবাসিক হলে উঠতে হলে অবশ্যই অন্তত এক ডোজ টিনা নিতে হবে নির্দেশনা জারি করেছে বিশ^বিদ্যালয়।

ক্যাম্পাসে ফিরতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ সময় ধরে ক্যাম্পাসের অনুপস্থিতির পর ক্যাম্পাস খোলার সংবাদ যেন শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বস্তি এনে দিয়েছে, এমনটা জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। আবিদ হাসান নামে বিশ^বিদ্যালয়ের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ বিশ^বিদ্যালয়। অনেক আগেই এসেছি সিলেটে। স্বশরীরে পরীক্ষাও দিয়েছি। তবে কেমন যেন বিশ^বিদ্যালয়ের আনন্দ-উচ্ছ¡াস ছিল না। বন্ধুদের সাথে আড্ডা অনেক মিস করছি। মৌসুমী মৌ নামে অনার্স ৪র্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা দিতে দিতে ‘বোর’ হয়ে গেছি। কবে খুলবে ক্যাম্পাস শুধু এই ভাবি। অবশেষে চিরচেনা ক্যাম্পাসে আবারো ফিরতে পারছি।

শিক্ষকদের মাঝেও রয়েছে ক্যাম্পাস খোলার এক অন্যরকম অনুভূতি। বিশ^বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসে নিয়মিত আসা-যাওয়া হয়। কেমন ফাঁকা শিক্ষার্থীরা ছাড়া। কেউ কোথাও আড্ডা দেয় না। তাদের নিয়ে আমাদের পথচলা, কিন্তুশিক্ষার্থী ছাড়া কেমন যেন হাহাকার করে ক্যাম্পাস। কতোদিন হয়ে গেল ক্লাসে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা নেই। যা অনেক মিন করেছি।

Manual7 Ad Code

তবে বিশ^বিদ্যালয়ে সশরীরে ক্লাস বন্ধ থাকলেও দাপ্তরিক কাজ চলমান ছিল। এতে বিশ^বিদ্যালয়ে করোনার তীব্রতার সময় ছাড়া অধিকাংশ সময়ই ক্যাম্পাসে ছিল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। করোনাকালীন সময়ে কখনো অর্ধবেলা, কখনো পূর্ণবেলা অফিস করার অভিজ্ঞতাও জানিয়েছেন বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

Manual2 Ad Code

করোনাকালে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও চলমান ছিল বিশ^বিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম। সকলের সহযোগিতায় এ বিশ^বিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। উপাচার্য বলেন, করোনাকালে আমাদের বিশ^বিদ্যালয় দেশের অন্যান্য বিশ^বিদ্যালয়গুলো থেকে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের ক্লাস-পরীক্ষা স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে শেষ করার পাশপাশি অনেক বিভাগে তাদের ফল প্রকাশও হয়ে গেছে। তাছাড়া অনার্স ১ম, ২য় ও ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস শেষ করে অনলাইনেই পরীক্ষা চলমান রয়েছে। আগামী নভেম্বরের ১ম সপ্তাহ থেকে সকল বিভাগে স্বশরীরে ক্লাস শুরু হয়ে যাবে।

সার্বিক বিষয়ে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস খুলে দিতে প্রস্তুত। বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজ করা হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাভবন ও আবাসিক হলসমূহে। হল খুলে দিতে প্রস্তুত এবং শিক্ষার্থীদেরকে বরণ করে নিতে বিভিন্ন আয়োজনে রয়েছে বলেও হল প্রভোস্টসহ প্রশাসনের সকলেই আমাকে আশ^স্ত করেছেন। এছাড়া আমাদের বিশ^বিদ্যালয়ে তেমন কোন সেশনজট নেই। আশা করি, ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হলে কোন ধরণের সেশনজট এ বিশ^বিদ্যালয়ে থাকবে না। সকলের সহযোগিতা আমরা আবার ক্যাম্পাসে ফিরতে পারবো। আমরা বিশ^বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবদিক দিয়েই রোল মডেল। তবে ক্যাম্পাস খুললে টিকা নেওয়ার পরও সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুশৃঙ্খলভাবে হলে উঠতে হবে এবং সকল নিয়ম-কানুন মেনে হলে সকলকে ক্লাসে উপস্থিত হতে হবে।

Manual1 Ad Code


এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code