কিছু প্রশ্ন-কিছু জিগ্যেস! নাকি কৌতূহল? : মাহফুজ কবির

প্রকাশিত: ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯

কিছু প্রশ্ন-কিছু জিগ্যেস! নাকি কৌতূহল? : মাহফুজ কবির
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বুধবার : দলীয় প্রচার করতে বিএনপি’র কোনো সাংগঠনিক বিধিবদ্ধ নিয়ম-কানুন নেই। বিএনপি’র রাজনৈতিক দর্শন ও আদর্শগত বিশ্বাসের মেলবন্ধন হলেই বাংলাদেশের বৈধ যেকোনো নাগরিকই তা চর্চা ও আত্মস্থ করতে পারেন এটা তার রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক অধিকার অন্যদিকে গঠনমূলক বিরোধিতা ও সমালোচনা করারও নৈতিক দায়বদ্ধতাও সমান।

যাক মূল কথা হল-প্রচারদল এটা আবার কি?
বিস্তর প্রশ্ন অনেকেরই মনে রয়েছে হয়তোবা!

প্রচারদল স্বতন্ত্র সমমনা একটি সহযোগী সংগঠন (রাজনৈতিক দল নয়) যা তার নিজস্ব গঠনতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত ও প্রতিষ্ঠিত।

সাংগঠনিক বিধিবদ্ধতায় বিএনপি’র সহিত একীভূত করবার বা পরিচয় দেবার নূন্যতমও সুযোগ উভয়ত নেই সেটা বিএনপি’র- না প্রচার দলের।

মূলত শহীদ জিয়ার আদর্শ্যিক দর্শন ও বিএনপি’র রাজনৈতিক নীতিবোধের বিশ্বাসে প্রলুব্ধ হয়ে স্ব-উদ্দ্যোগে পরিচালিত সংগঠন হলো প্রচার দল।
সাংগঠনিক ভাবে বা কারো ব্যক্তিস্বার্থে নূন্যতম যেনো প্রভাবিত না হয় কিংবা বিধিবদ্ধ সাংগঠনিক নিময়বহির্ভূত নীতিবিরুদ্ধ উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয় সেটিকে সাংগঠনিক গঠনতন্ত্র দ্বারা সুরক্ষিত ও আইনসিদ্ধ সুনিশ্চিত।
মূল রাজনৈতিক দর্শন বিএনপি’র নীতিনির্ধারক পর্যায়ের দায়িত্বরত একাধিক নেতৃত্বের পরামর্শ ও সরাসরি তত্বাবধানে উক্ত সংগঠনটিকে পরিচালিত হয়ে এসেছে, হচ্ছে বা সামনের দিনেও হবে।

ভাববার বিষয় : সকলেই যদি সরাসরি বিএনপি’র সাংগঠনিক কাঠামোগত নিয়মবদ্ধ নিয়মে একীভূত হয়ে যায় তবে সিভিলিয়ান সাপোর্টারস শক্তিরূপে বিএনপি’র পাশে কে বা কারা থাকবে?

সত্যিকারের একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে নতুনরূপে আবির্ভূত ও তা দিনে দিনে সুসংহত করার মূল উপসর্গই হল বিভিন্নার্থক শক্তিশালী কার্যকরী সিভিলিয়ান সাপোর্টারস শক্তির সুনিশ্চিত করা।
তা না’হলে কখনোই দল হিসেবে শক্তিশালী ও সুসংহত বলা যাবে না,সাময়িক জনপ্রিয়তা কিন্তু ভিন্নতর বিষয়, উপস্থিত জনপ্রিয়তা রাজনৈতিক দর্শনকে চিরস্থায়ী করার গ্যারান্টি দিতে পারেনা এক্ষেত্রে আমরা ন্যাপ-ভাষানী কিংবা জাতীয়পার্টিকে উদাহরণস্বরূপ নিতে পারি।

এক’কথায় প্রচারদল মূলত আদর্শিক স্বতন্ত্র সিভিলিয়ান সাপোর্টারস বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ চেতনায় বিশ্বাসী কট্টরপন্থী সংগঠন বলা যেতে পারে যা বিএনপি’র সহায়ক শক্তির আবর্তে স্বতন্ত্রভাবে পরিচালিত ঠিক ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি’র আরআরএস-এর খানিকটা আদলে তুলনা করলেও করতে পারেন।

এই মূহুর্তে বিএনপি’র জন্য এমনতর আরো বহু সিভিলিয়ান সাপোর্টারস সংগঠনের প্রযোজনীয়তা দারুন গুরুর্ত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
কেনোনা সাদা চোখে সমর্থকদের নিকট যদিও পরিস্কার নয় কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকগন বারংবার বলছেন জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

কেননা এসব সংগঠন যেমনটি মূল আদর্শ্যের প্রশংসামূলক কর্মকান্ডগুলোকে প্রকাশ-বিস্তার ও পক্ষালম্বন করে ঠিক তেমনি আবার গঠনমূলক শালীনতা বজায় রেখে সাংগঠনিক অসংগতি ও দূর্বলতাসমূহকে কার্যকরী আত্ম-সমালোচনার মাধ্যমে তুলে ধরে পরম বন্ধুত্বের পরিচয়ও রাখে।

কিন্তু দলীয় স্রোতে মিশে যাওয়া সংগঠন সমূহের আত্ম-সমালোচনা অথবা প্রয়োজনীয় দূর্বলতা-অসংগতি নিয়ে কথা বলবার সুযোগ সাংগঠনিক নিয়মে খানিকটা বিধিবদ্ধ থাকায় সে ভূমিকাটা পালন করাও সময় সাপেক্ষ ও তা পালনে জটিল প্রক্রিয়াগত নিয়মাদি থাকায় কাঙ্খিত সময়ে নিজেদের সংশোধন বা অসংগতিগুলোকে দূর করাটা অনেকটাই কালক্ষেপণ ও জটিল হয়ে পড়ে।

বিশেষ করে রাজনৈতিক মূল আদর্শগত শক্তিটি যখন দীর্ঘসময় ক্ষমতার বাইরে থেকে অসম লড়াই-সংগ্রামে ধাবিত থাকে তখনতো এসব কট্টরপন্থী সিভিলিয়ান সাপোর্টারস সংগঠনগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত অপরিহার্য ও গুরুর্ত্বপূর্ন হয়ে উঠে।

আমাদের বুঝতে হবে এসব সংগঠনের অনুসারীগণ বা সমর্থকরা কিন্তু ক্ষমতা ও ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের চাওয়া পাওয়ার আশায় আদর্শগত চর্চা বা লালনে আবদ্ধ হয়না, মূলত আদর্শ্যের প্রতি গভীর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা-ভালোলাগা ও দেশপ্রেম থেকেই তা লালন করে ও বহন করে।

ফলে একটি রাজনৈতিক শক্তিকে বিশেষ করে দীর্ঘদিন সময় ক্ষমতার বাইরে থাকতে হলে বা বিভিন্ন প্রতিকূলতাময় বাঁধাকে অতিক্রম্য করতে হলে এমন নিঃস্বার্থ সিভিলিয়ান সাপোর্টারস সংগঠনসমূহের প্রয়োজনীয়তা অমূল্য হয়ে দাঁড়ায়।
কারণ তাদের নিকট প্রাপ্তি -অপ্রাপ্তির অংকের হিসেবটা কখনোই বাঁধার বড় দেওয়াল হয়ে দাঁড়ায় না।

তা না হলে ভিন্নতর এর চেয়েও কম শক্তিশালী দূর্বল ভিন্ন ভিন্ন চেতনার পক্ষসমূহের সমর্থন পেতে হলে পক্ষগুলোর বিভিন্ন অনৈতিক ও আদর্শবিরোধী দাবী ও অংশীদারিত্ব মেনে নিতে হয় এক্ষেত্রে ঐক্যফ্রন্টকে উদাহরণ হিসেবে নিতে পারি।

রাজনৈতিক পরিবেশগত করণেই এই অংশীদারিত্ব নীতিবিরুদ্ধ ঐক্য তৈরি করতে বাধ্যগত হয়েছে বিএনপি যদিও
তবে নিজ আদর্শগত শক্তিশালী কয়েকটি কার্যকরী সিভিলিয়ান সাপোর্টারস সংগঠন যদি তৈরী করতে পারতো হয়তো আজ বিএনপিকে দূর্বল ও শক্তিহীন পক্ষগুলোর সাথে নীতিবিরুদ্ধ সম্পর্ক ও অন্যায্য দাবি মেনে নিতে হতো না।

একটি রাজনৈতিক শক্তির এমন নিঃস্বার্থ যতবেশি সিভিলিয়ান সংগঠন থাকবে, ততো বেশি সে শক্তিটি লড়াই -সংগ্রাম ও আদর্শগত প্রভাব বিস্তারে ও প্রতিযোগিতায় শক্তিশালী ও সমৃদ্ধশালী হবে।

কারণ এসব সংগঠনের সদস্যগণ নূন্যতম রাজনৈতিক প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি অথবা আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাশা করেনা সুতরাং দীর্ঘতর সময় ধরে অথবা অতীব প্রতিকূল সময়কে অতিক্রান্ত করতে বিপদজনক পরিস্থিতিতেও তারা একদম বিনাস্বার্থে নিজ আদর্শ্যকে নিরবিচ্ছিন্ন সমর্থন করে যায় যেটি যেকোনো আদর্শগত রাজনৈতিক শক্তির জন্যই অমূল্য সম্পদ ও নিয়ামক শক্তিও বটে।

প্রচারদল সেই নীতিবোধের নূন্যতম ব্যতিক্রমী নয়।

আশা করি প্রচারদল সম্পর্কে খানিকটা প্রাথমিক সম্যক ধারণা পেয়েছেন ইনশাআল্লাহ পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে আরো নিয়মিতভাবেই বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে।
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ -শহীদ জিয়া অমর হউক।

মাহফুজ কবির, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি -জাতীয়তাবাদী প্রচার দল-বিএনপিপি।