চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে, দারিদ্রতা অনন্যার প্রতিবন্ধকতা

প্রকাশিত: ৪:৩০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২৫

চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে, দারিদ্রতা অনন্যার প্রতিবন্ধকতা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের অসহায় অসুস্থ্য অরুন কর্মকার ও কাজলী রানী সেনের মেয়ে অদম্য মেধাবী অনন্যা কর্মকার। সে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে এসএসসিতে শমশেরনগর হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। তারা এক বোনও এক ভাইয়ের মাঝে অনন্যা বড়। মেধাবী এ ছাত্রীর ইচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিকেও ভালো ফলাফল করে পরে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে একজন চিকিৎসক হয়ে অসহায় রোগীদের সেবা করতে। তবে তার বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে দারিদ্রতা।

অনন্যার বাবা অরুন কর্মকর্তার পৈত্রিকভাবে কাজ শিখে জুয়েলারী ব্যবসা করতেন। তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে নানান রোগে আাক্রান্ত হওয়ায় ও করোনা সংক্রমণকালে তার ব্যবসায় লোকসানে পড়ে এখন একেবারে বেকার হিসেবে ঘরে বসে আছেন। যখন তিনি ব্যবসা করেছিলেন তখন মেয়ে ও ছেলেকে স্থানীয় আইডিয়াল কিন্ডার গার্টেন স্কুলে পড়িয়েছেন। অভাব অনটন শুরু হলে মেয়েকে পাশের হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করেন। আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের ধার দেনায় ও সহায়তায় এ বছর মেয়ে অনন্যার এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করিয়েছিলেন। মেয়ে পড়াশোনায় ভালো বলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও নানাভাবে তাকে সহায়তা করেন। ফলে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় এ বিদ্যালয় থেকে মাত্র ২জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এর মাঝে অনন্যা অন্যতম। এখন মেয়ের ইচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিকে একটি ভালো কলেজে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করে ভালো ফলাফল করে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবে। তবে এখন মেয়ের ইচ্ছে পূরণ করতে হলে তাকে শেষ সম্ভল বসত ভিটে বিক্রি করতে হবে।

মেধাবী ছাত্রী অনন্যা কর্মকার পারিবারিক দারিদ্রতার কথা উল্লেখ করে বলে, কোন না কোনভাবে সহায়তা পেলে সে আগামী ২ বছর মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করে উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করতে পারবে। এমনকি সরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করতে পারবে।

শমশেরনগর হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরে আলম সিদ্দিক বলেন, আসলেই অনন্যা কর্মকার একজন অদম্য মেধাবী। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে সহায়তা করা উচিত। তাহলে ভবিষ্যতে সে একজন চিকিৎসক হতে পারবে।