শাবিপ্রবিতে ওরিয়েন্টেশনে চরম অব্যবস্থাপনা

প্রকাশিত: ১:০৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২৫

শাবিপ্রবিতে ওরিয়েন্টেশনে চরম অব্যবস্থাপনা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত নবীনবরণ অনুষ্ঠানে চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির বিরুদ্ধে।

জানা যায়, গত ২২ জুলাই অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটি প্রায় দুই হাজারের অধিক নবীন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও অভিভাবকের জন্য মাত্র পনের শত আসনবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম ও অডিটরিয়ামের বাইরে অল্পসংখ্যক চেয়ার দিয়েই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে দাঁড়িয়ে থেকে প্রোগ্রাম উপভোগ করেছেন। কেউ কেউ বাইরে থেকে প্লাস্টিক চেয়ার এনে অডিটোরিয়ামের দরজার সামনে বসেই নবীনবরণে অংশগ্রহণ করেছেন। এমনকি অনেকেই জায়গা না পেয়ে অনুষ্ঠান শেষ না করেই হতাশ হয়ে চলে এসেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

এমনকি নবীন বরণে প্রদর্শিত ডকুমেন্টরি নিয়েও প্রশ্ন তুলেন কেউ কেউ। অভিযোগ পাওয়া যায় ওই ডকুমেন্টরিতে স্থান পায়নি বিভিন্ন দপ্তরের পরিচিতি থেকে শুরু করে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেয়া বড় একটি অংশের। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সূচনালগ্নেই এ ধরনের বিশৃঙ্খল আয়োজন নবীন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মনে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে।

এছাড়া, সেখানে বক্তব্য দেয়ার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাবি শাখার আহ্বায়ক এবং আন্দোলনে অংশ নেয়া এক শিক্ষার্থীকে রাখা হয়। এতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শুধু নির্দিষ্ট একটি ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিদের বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তৈরি হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। শাখা শিবির, ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন, কোন বিবেচনায় তারা নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পায়। এছাড়াও তীব্র গরমের জন্য পর্যাপ্ত পানি ও বসার ব্যবস্থাও রাখে নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

অন্তত পাঁচজন নবীন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে তারা জানায়, “ছোটবেলা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এক ধরনের স্বপ্ন ও বড় ধারণা ছিল। কিন্তু আজকের অব্যবস্থাপনা সেই ভাবনাকে অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে।”

শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তোলেন, “আয়োজকরা কি জানতেন না যে আমন্ত্রিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সংখ্যা অডিটোরিয়ামের ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি? তা সত্ত্বেও কেন এমন আয়োজন করা হলো?”

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা অনেকে পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অনেকে অডিটোরিয়ামের বাইরে থেকে প্লাস্টিক চেয়ার এনে দরজার সামনে বসেছেন। অংশগ্রহণকারী অভিভাবকরাও অনেকে ভোগান্তি পোহিয়েছেন।

এ বিষয়ে ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ বদিউজ্জামান ফারুক বলেন, এটা সকল কর্তাব্যক্তিরা মিলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। দুই পর্বে নবীনবরণ হলে বিকেলে শিক্ষার্থী থাকে না। ফলে, বিকেলে একটি নীরস প্রোগ্রাম হয়। এটা আমার সিদ্ধান্ত না। আমি ভর্তি কমিটির সভাপতি হলেও আমার উপর আছেন উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ। তবে, নির্দিষ্ট সংগঠনের শিক্ষার্থীকে বক্তব্য দেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।