জুলাই অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ সুফিয়ান স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়

প্রকাশিত: ২:৪৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২৪

জুলাই অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ সুফিয়ান স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়

জুলাই অভ্যুত্থানে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ সিলেটের কলেজ ছাত্র সুফিয়ান বাড়ি ফিরলেও নেই কোনো আনন্দ। পিতৃমাতৃহারা সুফিয়ানের ভবিষ্যত নিয়ে দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা, চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর টাকা না থাকায় তার শারিরিক অবস্থার অবনতির আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মিজানুর রহমান সুফিয়ান দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ গ্রামের মৃত ফজলু মিয়ার বড় ছেলে। গত ৫ আগস্ট ঢাকার উত্তরায় পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন মিজানুর রহমান সুফিয়ান (২৭)। কানের নিচ দিয়ে গুলিবিদ্ধ সুফিয়ান প্রায় ৩মাস ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে চিকিৎসক তাকে চীনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রেফার করেন। ফলে সুফিয়ানকে তার স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। পিতৃমাতৃহীন সংসারে দাদী আর চাচা-চাচীদের সেবা শুশ্রূষায় দিন কাটছে সুফিয়ানের।

গত ২৪ অক্টোবর সুফিয়ান লালাবাজারের গ্রামের বাড়ীতে এসে পৌছলে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ দেখতে আসেন। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসা সুফিয়ানের ভাঙা গলায় শুনছেন তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা। জানছেন জুলাই অভ্যুত্থানে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার কারন।

সুফিয়ানের ছোটভাই কামরান জানান, তাদের পিতা-মাতা মারা যান বিগত আড়াই বছর আগে। তখন কলেজ পড়ুয়া বড় ভাই সুফিয়ান ঢাকায় যান চাকুরীর সন্ধানে। সেখানে একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরি পান সুফিয়ান। এতিম দুই ভাই এক বোনের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে সুফিয়ান জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সুফিয়ান ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে তাদের সামনে নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকার।

আহত সুফিয়ানের চাচা লাল মিয়া জানান, তার ভাতিজা সুফিয়ান গত ৫ আগষ্ট ঢাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে মিছিলে যোগ দেন। এক পর্যায়ে ঢাকার মিছিলেই গুলিবিদ্ধ হন সুফিয়ান। পুলিশের ছোঁড়া গুলি সুফিয়ানের কানের নিচ দিয়ে এক পাশ দিয়ে নাকের ভেতর দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে সুফিয়ান মাটিতে লুঠিয়ে পড়ে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছান ঘন্টা খানেক পর। ফলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তার। ঢাকার ডেন্টাল হাসপাতালে তার অপারেশন হয়। এরপর তাকে বাঁচানো গেলেও নাক ও মুখের একটি অংশ বেঁকে যায়। ফলে চিকিৎসকরা সুফিয়ানের নাকের অভ্যন্তরের চিকিৎসার জন্য তাকে চীনে নেয়া প্রয়োজন। এ কথা জানার পর দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সুফিয়ানের স্বজনরা। চীনে নিয়ে চিকিৎসাব জন্য যে পরিমান টাকা প্রয়োজন এর কোনো প্রস্তুতিই নিতে পারছেন না তারা। ফলে সুফিয়ানের পরিবার সরকার ও বিত্তবানদের সহায়তা চায়। তাঁরা আসা করছেন, সকলের সহায়তায় আবারো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে পরিবারের একমাত্র উপার্জন সক্ষম ব্যক্তি সুফিয়ান।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট