সিলেটে ঘন ঘন লোডশেডিং, জনজীবনে চরম দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ৬:২৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২৪

সিলেটে ঘন ঘন লোডশেডিং, জনজীবনে চরম দুর্ভোগ

অবস্থায় যে কোনো সময় ঢাকাসহ বড় শহরগুলোয়ও লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার।

বিতরণ কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরে দিনে-রাতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় একাধিকবার বিদ্যুৎ যাওয়ার তথ্য মিলেছে। এর রেশ বিভাগীয় শহর সিলেটে পড়তে শুরু করেছে। নগর এলাকায় ধীরে ধীরে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বাড়ছে। আরো কয়েকদিন এরকম গরম অব্যাহত থাকলে এবং আনুষ্ঠানিক লোডশেডিং শুরু হলে শহরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে গত সোমবার রাত ৯টায়। এ সময় ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এর আগে গত রোববার রাতে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ছিল ১৫ হাজার ৬৬৬ মেগাওয়াট।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন জানান, গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে। খরচ বেশি হলেও তেলচালিত কেন্দ্রগুলো চালিয়ে চাহিদা মেটানো হবে। তিনি বলেন, গরম বেশি পড়ছে। এসি-ফ্যানের ব্যবহার বেড়েছে। বিদ্যুতের লোড হুট করে বেড়ে গেছে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, প্রচ- গরমে অনেক সময় সংরক্ষণের জন্য কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখতে হয়। এতেও বিদ্যুৎ উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়।

বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হাবিবুর রহমান বলেছেন, তাপপ্রবাহ কমলে লোডশেডিং কমে যাবে। তার মতে, ‘চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম থাকার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। তবে তাপপ্রবাহ কমে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। এ মুহূর্তে বোরো আবাদের অঞ্চল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছাড়া সব জায়গায় সমানভাবে লোডশেডিং হচ্ছে। গত বুধবার দুপুরে জামালপুরের ইসলামপুরে যমুনা নদীতে জেগে ওঠা চরে সৌরবিদ্যুতের প্ল্যান্ট স্থাপনের জায়গা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিভাগ এপ্রিল-মে মাসে বিদ্যুতের চাহিদা ধরেছে ১৭ হাজার ৩৮৫ মেগাওয়াট। গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোয় গড়ে উৎপাদন হচ্ছে ১৪ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট। এরপরও আড়াই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াটের ঘাটতি থাকছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস বেশি সরবরাহ করছে পেট্রোবাংলা। এখন গড়ে দিনে ১৩৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। গত মাসে সরবরাহ ছিল ১১০ থেকে ১২০ কোটি ঘনফুট। গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোয় বিদ্যুতের উৎপাদন গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট বেড়েছে। কিন্তু প্রচ- গরমে বিদ্যুতের চাহিদা তুলনামূলকভাবে বেড়ে যাওয়ায় লোডশেডিং বেশি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার গরমে গ্যাস থেকে ৬ হাজার, কয়লা থেকে প্রায় ৫ হাজার, ফার্নেস অয়েল থেকে ৫ হাজার এবং ডিজেলের মাধ্যমে ২০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। রোববার রাতে ১৫ হাজার ৬৬ মেগাওয়াট উৎপাদনের সময় গ্যাস দিয়ে ৭ হাজার ৭১৬, তেল ব্যবহারে ২ হাজার ৯৫৯ এবং কয়লা দিয়ে ৪ হাজার ৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।

পিডিবির সদস্য (বিতরণ) মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘ঢাকার বাইরে যেসব অঞ্চলে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে, সেসব এলাকা আমরা চিহ্নিত করছি। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে যেন কৃষকের সেচ কার্যক্রম ব্যাহত না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে রাজধানীসহ শহরাঞ্চলে কিছুটা লোডশেডিং করেও গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে। দু-তিনদিনের মধ্যেই গ্রামাঞ্চলের লোডশেডিং পরিস্থিতি কিছুটা কমে আসবে।’

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের জোনভিত্তিক বিদ্যুৎ চাহিদা ও সরবরাহের তথ্যে দেখা যায়, গত মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে এই বিতরণ কোম্পানিকে ১ হাজার ৭৪৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়েছে। তবে এটি সরকারি হিসাব। বাস্তবে এ সংখ্যা ২ হাজারের বেশি।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট