অস্ট্রেলিয়ার শপিংমলে ছুরি হামলায় নিহত ৭

প্রকাশিত: ৮:৫৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৩, ২০২৪

অস্ট্রেলিয়ার শপিংমলে ছুরি হামলায় নিহত ৭

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজধানী সিডনির একটি শপিংমলে ছুরি দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন। আর পুলিশের গুলিতে হামলাকারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ৮ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বেশিরভাগের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার কিছু আগে ওয়েস্টফিল্ড শহরের শপিং মলের ছয় তলার বন্ডি জংশন সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।  হামলাকারী একজন পুরুষ এবং তাকে থামাতে পুলিশকে গুলি করতে হয়েছে।এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদিন স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার কিছু আগে হামলাকারী শপিংমলে হুডি ও শর্টস পরে প্রবেশ করে। এরপর দৌড়ে গিয়ে শিশুসহ এক নারীকে প্রথমে ছুরিকাঘাত করে। পরে হামলাকারী উদভ্রান্তের মতো শপিংমলে ছুটে বেড়িয়ে কয়েকজনকে ছুরিকাঘাত করে। পুলিশ এসে শত শত মানুষকে দোকান এবং স্টোররুমের ভিতরে লুকিয়ে থাকতে দেখে। পুলিশ হামলাকারীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু হামলাকারী সেই নির্দেশ না মানায় তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। হামলার পর পুলিশ মলটির আশপাশের এলাকায় যান চলাচল সীমিত রেখেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, ঘটনার সময় শপিং সেন্টারের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন দৌড়ে এদিক সেদিক লুকাচ্ছেন। একই সময় ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি হেলিকপ্টারও ঘটনাস্থলের ওপরে উড়তে দেখা যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হামলার সময় মলে থাকা দুই সন্তানের এক মা বলেন, আমার সামনেই লোকজনকে নির্বিচার ছুরিকাঘাত করছিলেন এক হামলাকারী। এটা ছিল স্রেফ হত্যাকাণ্ড ছিল।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, লোকজন চিৎকার করতে করতে ছোটাছুটি করছিলেন। সবাই আত্মরক্ষার জন্য এক নারী পুলিশ কর্মকর্তার পেছনে অবস্থান নেন। তখন হামলাকারী বড় একটি ছুরি নিয়ে এগিয়ে আসতে থাকেন। এরপরই গুলি চালান ওই কর্মকর্তা।

বন্ডি জংশন সেন্টারে কেনাকাটা করতে গিয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী যুবক জনি জানান, আমি তীব্র হট্টগোল শুনতে পান। পেছনে ফিরে দেখেন যে এক নারী ও তার শিশুসন্তানের ওপর হামলা হয়েছে। ছুরির আঘাতে ওই নারী আহত হয়েছিলেন। এতে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কেউ বুঝতে পারছিলেন না যে কী করবেন। ওই নারী কোনোমতে কাছের একটি দোকানের ভেতর ঢুকে পড়েন। এর পরপরই দোকানের কর্মচারীরা দরজা বন্ধ করে দেন। সেখানে থাকা কয়েকজন ক্রেতা ওই নারীর শরীর থেকে রক্তপাত বন্ধের চেষ্টা করেন। তার অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। তবে তার সন্তানের শরীরে আঘাত ততটা বেশি নয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, দেখতে পেলাম যে সবাই আমাদের দিকে ছুটে আসছেন। এরপর একটি গুলির শব্দ শুনলাম। আমার স্বামী আমাদের নিয়ে একটি দোকানে ঢুকে পড়েছিলেন। সেখানে থাকা এক নারী দোকানের দরজাগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করছিলেন। তবে সামনের দরজাটি বন্ধ করতে পারেননি। তাই আমরা দোকানের ভেতর অফিসকক্ষে ঢুকে পড়লাম। সেটি চারদিক দিয়ে বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ এসে আমাদের সেখান থেকে বের করে।

এদিকে এ ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, দুঃখজনকভাবে একাধিক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। যারা এ হামলার শিকার হয়েছেন, তাদের এবং তাদের প্রিয়জনদের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সব নাগরিকের সহমর্মিতা রয়েছে।

হামলার বিষয়ে দেশটির পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘আমাদের তদন্ত চলছে। এখন এ ব্যাপারে আর বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই।’


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট