৯ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:১৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০২৩
অবশেষে হারের বৃত্ত ভাঙলো বাংলাদেশ। ভারতের দিল্লিতে লঙ্কানদের হারিয়েছে টাইগাররা। টানা ছয় ম্যাচে হারের পর জয়ের মুখ দেখল দল, বাঁচিয়ে রাখল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশা।
শ্রীলঙ্কা হারিয়ে উঠে এলো পয়েন্ট টেবিলের সপ্তম স্থানে। ব্যাটে বলে দারুণ পারফরম্যান্সে ম্যাচ সেরার পুরস্কার ভাগিয়ে নিয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
সোমবার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। বায়ুদূষণের তীব্রতার মাঝেই স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও খেলা গড়ায় মাঠে। যেখানে আগে ব্যাট করে ৪৯.৩ ওভারে ২৭৯ রান করে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ যা পেরিয়ে যায় ৪১.১ ওভারে, ৩ উইকেট হাতে রেখেই।
সাকিব-শান্তরা স্বরূপে ফিরলেন বটে। তবে একটু বেশিই দেরি করে ফেললেন। বিশ্বকাপে এখন আর কিছু পাওয়ার বা হারানোর নেই। তবে গুরুত্বহীন নয়, এই জয়টা বেশি প্রয়োজন ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) ওই আসরে খেলতে হলে বিশ্বকাপে সেরা আটে থাকতে হতো বাংলাদেশকে।
তবে এদিন আরো একবার ব্যর্থ বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। বিশ্বকাপের আট ইনিংসের একটাতেও পারেনি দলকে ভালো ভীত গড়ে দিতে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬.২ ওভারে ৪১ রানেই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ তামিমকে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ উদ্বোধনী জুটি ভাঙে মাত্র ১৭ রানে। তানজিদ তামিম ফেরেন দ্বিতীয় ওভারেই, মাদুশঙ্কার শিকার হয়ে। নিশানকাকে ক্যাচ দেন ৫ বলে ৯ রান করে। একই ওভারে ফিরতে পারতেন লিটন দাসও। ক্যাচ উঠিয়ে দিলেও ডিপ-ফাইন লেগে হাত ফসকায় ফিল্ডারের।
তবে ফিরতে হয়েছে লিটনকে ওই মাদুশঙ্কার বলেই। আরো একবার দারুণ কিছুর আশা জাগিয়েও হতাশ করেছেন এই ওপেনার। পরপর দুই বলে দারুণ দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে জানান দিয়েছিলেন ভিন্ন কিছুর। তবে ২২ বলে ২৩ রানেই থামে তার দৌড়।
এরপর থেকেই সাকিব-শান্তের প্রতিরোধ। শুরুতে দেখে খেললেও সময়ের সাথে সাথে চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের ওপর। দু’জনেই ব্যাট করেন সাচ্ছন্দ্যে, তুলে নিয়েছেন ফিফটি। আসরে নাজমুল হোসেন শান্তের দ্বিতীয় ফিফটি হলেও, সাকিবের জন্য প্রথম।
সাত ইনিংস পর অর্ধশতকের দেখা পান শান্ত। এর আগে সর্বশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ফিফটি ছুঁয়েছিলেন তিনি। পরের ছয় ম্যাচে ৩০ রান আসে তার ব্যাটে। তবে আজ ছিলেন শতকের পথেই। যদিও তা হয়নি, ১০১ বলে ৯০ রানে ফিরেছেন তিনি।
শান্তর পাশাপাশি জ্বলে উঠেছেন সাকিব আল হাসানও। দারুণ ব্যাট করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ৫৬তম ফিফটি। এ নিয়ে নিজের খেলা পাঁচ বিশ্বকাপের প্রতিটিতেই পঞ্চাশের দেখা পেলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। শতকের সম্ভাবনা ছিল তারও, তবে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের বলে থামে তার দৌড়। ৬৫ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলেন সাকিব।
এরপর মুশফিক (১০) ও মিরাজ (৩) দ্রুত ফিরলেও পথ হারায়নি বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ জয় নিশ্চিত না করতে পারলেও তার ২৩ বলে ২২ রান বেশ সহায়ক হয় দলের জন্য। ৭ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে আনেন হৃদয়।
এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৩৫ রানে ৫ উইকেট হারালেও লঙ্কানরা ঘুরে দাঁড়ায় বেশ দাপটের সাথে। আসালাঙ্কার শতক যেন এনে দেয় ইনিংসের পূর্ণতা। ৪৯.৩ ওভারে অল-আউট হওয়ার আগে স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ২৭৯ রান।
এদিন প্রথম ওভারেই উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কার উদ্বোধনী জুটি ভাঙে মাত্র ৫ রানে। কুশল পেরারাকে (৪) ফেরান শরিফুল ইসলাম। তবে ওই চাপ ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ঘুরে দাঁড়ায় লঙ্কানরা।
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে পাথুম নিশাঙ্কা-কুশল মেন্ডিস জুটিতে। ৬৫ বলে ৬১ রান যোগ করেন দু’জনে। এরপর অধিনায়কের হাত ধরে ফেরে স্বস্তি। সাকিব আল হাসান ভাঙেন বিপজ্জনক হয়ে উঠা এই যুগলবন্দী। লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসকে ফেরান ৩০ বলে ১৯ রানে।
পরের ওভারে তানজিম সাকিবের প্রথম বিশ্বকাপ উইকেটে ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা পাথুম নিশাঙ্কাকে ফেরান এই পেসার। ৩৬ বলে ৪১ করে আউট হয়েছেন তিনি। ১২.৪ ওভারে ৭২ রানে তৃতীয় উইকেট পতন হয় লঙ্কানদের।
তবে এর সুবিধা নিতে পারেনি বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেট জুটিতে সাদিরা সামারাবিক্রমা ফের লঙ্কানদের এগিয়ে দেন। তবে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগে তাকে আটকান সাকিব, ৪২ বলে ৪১ রানে আউট হন তিনি। এরপরই ঘটে ক্রিকেট ইতিহাসের বিরল এক ঘটনা। যা আগে কখনো দেখেনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট।
ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ‘টাইম আউট’ হন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। নতুন ব্যাটসম্যান মাঠে নামার তিন মিনিটের মাঝে প্রথম বল মোকাবেলা করতে হয়। তবে হেলমেটে সমস্যা থাকায় তা করা হয়নি তার। স্বাভাবিকভাবেই সাকিব আল হাসান আবেদন জানান। আম্পায়ারও ঘোষণা দেন আউটের। এরপর একাধিক আবেদন করেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে ব্যর্থ হন ম্যাথিউস।
কোনো বল মোকাবেলা না করেই ম্যাথিউস আউট হলে ১৩৫ রানে ৫ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। তবে এ সুযোগও নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে আসালাঙ্কা ৭৮ রান যোগ করেন ৮৩ বলে। এখানেই পিছিয়ে যায় টাইগাররা। এরপর আসালাঙ্কা থিকসানাকে নিয়ে ৪৫ ও ২০ রান যোগ করেন চামিরাকে নিয়ে।
এর মাঝে আসালাঙ্কা তুলে নেন ওয়ানডেতে নিজের দ্বিতীয় শতক। ৪৯তম ওভারে ফেরার সময় তার নামের পাশে ছিল ১০৫ বলে ১০৮ রান। তানজিম সাকিবের তৃতীয় শিকার হন তিনি। ৩১ বলে ২২ করে করেন থিকসানা। শরিফুলও নেন দুই উইকেট।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D