৩০শে জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২
আমার স্বামী মরতে পারে না, আমার সন্তান এতিম হতে পারে না। আল্লাহ, তুমি আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দাও। কালকেই সে বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে আমার ছেলেকে বলেছিল, ধান বিক্রি করে কিছু ঋণ আছে, সেগুলো শোধ করবে আর তাকে জামা-জুতা কিনে দেবে। কোথায় গেল আমার স্বামী, কোথায় গেল আমার ছেলের বাবা, এই অবুঝ সন্তানের কী হবে এখন?’ গতকাল রোববার সকালে বাড়ির উঠানে বসে একমাত্র ছেলে আবদুল্লাহ আল মাহীকে (১৩) জড়িয়ে ধরে এভাবেই বিলাপ করছিলেন পঞ্চগড়ে নিহত বিএনপি নেতা আবদুর রশিদ আরেফিনের স্ত্রী নাসরিন আক্তার ওরফে চামেলী। শনিবার পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় রশিদ মারা যান। বিলাপের একপর্যায়ে মূর্ছা যান নাসরিন।
আবদুর রশিদ (৫০) পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি ইউনিয়নের পাথরাজ-চন্দনপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি ময়দানদিঘি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এর আগে তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
গতকাল সকালে রশিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িজুড়ে কান্নার রোল। ঘরের ভেতর বিছানায় বসিয়ে রাখা হয়েছে রশিদের মা আনোয়ারা বেগমকে (৭২)। লাশের অপেক্ষায় থাকা স্বজনদের কান্নায় চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিলেন না বাড়িতে জড়ো হওয়া প্রতিবেশীরাও। এরই মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেনসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা রশিদের বাড়িতে গিয়ে তার স্বজনদের সান্ত¡না দিচ্ছেন। কেউ কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন লাশ দাফনের।
পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আবদুর রশিদ ছিলেন দ্বিতীয়। দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় ভীমপুকুর ডাঙ্গাপাড়া নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তবে ওই বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত না হওয়ায় চার বছর ধরে একরামুল হক বিদ্যানিকেতন নামের স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। এ ছাড়া স্থানীয় পাথরাজ বাজারে একটি ওষুধের দোকানও চালাতেন তিনি। স্ত্রী, এক ছেলে ও মাকে নিয়ে সংসার তার। পৈতৃকসূত্রে পাওয়া অল্প কিছু জমিতে করতেন চাষাবাদ। এ ছাড়া বছরখানেক আগে মারা যাওয়া বড় ভাই আনোয়ার হোসেনের সংসারটিরও দেখভাল করতেন তিনি। তিনি হৃদরোগী ছিলেন। ২০১৬ সালে তার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়েছিল। আবদুর রশিদের স্ত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, ‘মাত্র ৩০ দিন আগে আমার বাবা মারা গেছেন। কয়েক দিন আগে আমি এতিম হলাম, এখন আমার ছেলে এতিম হলো। সে তো অবুঝ শিশু। গতকাল তারা বাবা-ছেলে ধান বিক্রি নিয়ে আলাপ করছিল। বাবাকে ছাড়া সে একমুহূর্ত থাকতে পারে না। ওর এখন কী হবে?
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D