৩০শে জানুয়ারি, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৫৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০২২
অবিশ্বাস্য! অকল্পনীয়! হঠাৎ করে সবকিছু ভাবলে আপনি বিশ্বাস করতে চাইবেন না। চোখ কচলে হয়তো আবার দেখবেন, গায়ে চিমটিও কাঁটবেন। নাহ! ঠিকই আছে। বিশ্বাস করতে না চাইলেও বিশ্বাস করতেই হবে। হেরে গেছে ভারত, ১ উইকেটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজ বাংলাদেশের জয়ের নায়ক। নিরাশার সাগরে হাবুডুবু খেয়েও কোনোরকমে তীরে এসে ভিড়েছে জয়ের নৌকা।
মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা স্রোতের বিপরীতে দলকে টানতে না পারলেও পেরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। যখন অনেকেই শোকগল্প লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছে, আরো একবার হতাশায় মুড়িয়ে যাবার বেদনায় বিধূর হচ্ছে, তখন নতুন করে গল্পটাকে সাজিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মোস্তাফিজকে সাথে নিয়ে ১০ম উইকেট জুটিতে রেকর্ড গড়ে ভারতের বিপক্ষে ১ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন মিরাজ।
এদিকে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও মিরপুর যেন এখনো ঘোর রহস্যে ঘেরা। শতাধিক ম্যাচ খেলেও এখনো টাইগাররা খুঁজে পাচ্ছে না এই রহস্যের কূলকিনারা। সুবাদে আজ আরো একবার বাংলাদেশকে হাবুডুবু খাইয়ে ছেড়েছে শের-ই-বাংলার মাটি। ১৮৭ রানের ছোট লক্ষ্যও যেন হয়ে উঠে দুর্বিষহ। একটা সময় মনে হচ্ছিলো বোধহয় হেরেই গেছি।
লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে ০ রানেই প্রথম উইকেট হারায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম বলেই গোল্ডেন ডাক মেরে ফিরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পরের অধ্যায়টা বিজয় আর লিটনের দাঁতে দাঁত কামড়ে ধরা লড়াইয়ের। তবে জীবন পেয়েও সদ্ব্যবহার করতে পারেননি বিজয়, দলকে বিপদে ফেলে ফিরেন পাওয়ার প্লে শেষ হবার আগেই। তার ব্যাটে আসে ১৪ রান।
পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো কাঁপতে থাকে দল। তবে অধিনায়কের মতোই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলের হাল ধরেন লিটন দাস। সাকিব আল হাসানকে সাথে নিয়ে গড়ে তুলেন ৬২ বলে ৪৭ রানের জুটি। তবে ৬১ বলে ৪৩ রান করে ওয়াশিংটন সুন্দরের শিকার হন লিটন দাস। ওয়াশিংটন সুন্দরের দ্বিতীয় শিকার সাকিব আল হাসান। দুর্দান্ত খেলতে থাকা এই অলরাউন্ডার বিরাট কোহলির দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে ফিরেন ৩৮ বলে ২৯ রান করে।
৯৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফের বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। তবে তখনো মাঠে দুই ভাইরা-ভাই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। তবে দু’জন এদিন স্রোতের বিপরীতে দলকে টানতে পারেনি। বরং স্রোতের সাথে তাল মিলিয়ে দলকে আরো পিছিয়ে দিয়েছে সময়ের সাথে সাথে। ২৩.২ ওভারে ৯৫ রান থেকে ৩৫ ওভারে ১২৮। দুজনে মিলে খেলেছেন মোট ৮০ বল, যেখান থেকে দু’জনের সংগ্রহ মোটে ৩২ রান! ছিল না কোন চার-ছক্কার মার। শুধু তাই নয়, পর পর দুই বলে দুইজন আউট হয়ে আরো ব্যাকফুটে ঠেলে দেন দলকে।
কুলদীপ সেনের অভিষেক উইকেটে পরিণত হন আফিফ হোসেন। দ্রুত ফিরেন ইবাদত ও হাসান মাহমুদও। ফলে মাত্র ৮ রানেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে শেষ উইকেট জুটিতে মোস্তাফিজকে সাথে নিয়ে ৪১ বলে ৫৪ রানের হার না মানা জুটি করে জয় এনে দেন বাংলাদেশকে। এই জয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। সেই সাথে জয় দিয়েই অধিনায়কত্বের অভিষেক হলো লিটন কুমার দাসের।
আজ তামিম ইকবালের পরিবর্তে বাংলাদেশের হয়ে টস করতে আসেন নতুন অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। বাংলাদেশের ১৫তম ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয়েছে তার। অভিষেকে টসেও জিতেছেন লিটন, যেখানে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আর ম্যাচশেষে অধিনায়ক লিটন দাসকে পাস মার্ক দেয়াই যায় নিঃসন্দেহে। যেখানে সাকিব আল হাসানকে পেয়েছেন সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে। ভারতকে মাত্র ১৮৬ রানে থামিয়ে দেয়ার পিছনে সাকিবের অবদান ৩৬/৫। ভারতের বিপক্ষে যা যেকোনো বাঁ হাতি স্পিনারের সেরা বোলিং।
অবশ্য শুরুটা করেছিলেন মেহেদী মিরাজ। ভারতের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন এই অলরাউন্ডার। ৭ রানে ফেরান শিখর ধাওয়ানকে৷ তবুও অধিনায়ক রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলির ব্যাটে পাওয়ার প্লেতেই ৪৮ রান সংগ্রহ করে বড় স্বপ্ন দেখতে থাকে ভারত। তবে সেই স্বপ্নে পানি ঢেলে দেন সাকিব। ১১তম ওভারে বল করতে এসে দুই বলের ব্যবধানে ফিরিয়ে দেন ভারতীয় ক্রিকেটের এই দুই কাণ্ডারী ব্যাটসম্যানকে। প্রথমে ২৭ রান করে ফেলা রোহিত শর্মাকে সরাসরি বোল্ড করেন, অতঃপর বিরাট কোহলিকে লিটন দাসের দারুণ ক্যাচে পরিণত করে সাজঘরের পথ দেখান সাকিব। কোহলি করেন ৯ রান।
সেখান থেকে জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন শ্রেয়াস আইয়ার ও লোকেশ রাহুল। তবে ২৪ রান করে ইবাদতের শিকার হয়ে আইয়ার ফিরে গেলে ভাঙে তাদের ৪৩ রানের জুটি। তবে এবার রাহুলের সাথে গলার কাঁটা হয়ে উঠেন ওয়াশিংটন সুন্দর। দুজনের গড়ে তুলেন মাত্র ৭৬ বলে ৬০ রানের জুটি। এবার সেই কাঁটা তুলেন সাকিব। ধীরে ধীরে ভয়ের কারণ জয়ে উঠা এই জুটি ভেঙে দলজে স্বস্তি ফিরিয়ে দেন সাকিব। তুলে নেন ওয়াশিংটন সুন্দরকে। ১৫২ রানে সুন্দর ফেরার পর ৪ রান যোগ করতেই আরো ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। যেখানে ফের একই ওভারে সাকিবের জোড়া শিকার দীপক চাহার ও শার্দুল ঠাকুর।
তবে তখনো আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন রাহুল, তবে ৪০তম ওভারে এসে রাহুলকে ফিরিয়ে সব শঙ্কা দূর করে দেন ইবাদত। ৭০ বলে ৭৩ রান করেন লোকেশ রাহুল। পরের ওভারে মোহাম্মদ সিরাজকে ফিরিয়ে শেষ উইকেটটাও নিজের করে নেন ইবাদত, মাঝে ০ রানে শাহবাজকেও ফেরান ইবাদত। ৪১.২ ওভারে ১৮৬ রানেই থেমে যায় ভারতের ইনিংস। ৪৭ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন ইবাদত।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D