ঘুমন্ত স্ত্রীকে হত্যার পর মসজিদে নামাজে গেলেন স্বামী!

প্রকাশিত: ৭:১০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০২২

ঘুমন্ত স্ত্রীকে হত্যার পর মসজিদে নামাজে গেলেন স্বামী!

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে তহুরা বেগম নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন স্বামী জারু মিয়া। জুয়া খেলার টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা করেন বলে জানান তিনি। জারু মিয়া উপজেলার পৌর শহরের চরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাকির হোসেনের আদালতে তিনি এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আদালতের বরাত দিয়ে (ওসি) বলেন, তিনি একজন জুয়াড়ি। প্রায়ই জুয়ার টাকার জন্য তহুরা বেগমকে মারধর করতেন। এ নিয়ে তহুরা বেগমের সঙ্গে জারু মিয়ার দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় জারু মিয়া ঘুমন্ত অবস্থায় তহুরা বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে নিজেকে বাঁচাতে ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে চলে যান তিনি।

গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নবীগঞ্জ পৌর শহরের চরগাঁও গ্রামের নিজ ঘর থেকে তহুরা বেগমের (৫৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একই সাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী ও দুই ছেলেকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেন অভিযুক্ত জারু মিয়া।

শনিবার বিকেলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। এছাড়া মুচলেকা নিয়ে তার দুই ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার ভোরে ফজরের নামাজের আগেই স্ত্রীকে গলা কেটে খুন করে জারু মিয়া।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শুক্রবার সকালে নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামে বসতঘর থেকে তহুরা বেগমের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি ও নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল খয়ের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় তহুরা বেগমের স্বামী জারু মিয়াকে। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন। এ ঘটনায় তহুরা বেগম ও তার সাবেক স্বামী জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে আল-আমিন বাদী হয়ে তাকে আসামি করে মামলা করেন।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মোহাম্মদ ডালিম আহমেদ বলেন, ‘তহুরা বেগমকে হত্যা করে স্বামী জারু মিয়া প্রথমে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে কে বা কারা তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেন। কিন্তু কথার ধরনে সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় পুলিশ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের পর আজ তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।’