ভুমিহীনদের বরাদ্দকৃত উপহারের ঘরের তালা ভেঙে অন্যদের তুলে দিলেন ইউএনও

প্রকাশিত: ৪:৩৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২

ভুমিহীনদের বরাদ্দকৃত উপহারের ঘরের তালা ভেঙে অন্যদের তুলে দিলেন ইউএনও

নেহাল আহম্মেদ প্রান্ত, আদমদীঘি (বগুড়া)

বগুড়ার সান্তাহারে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪টি পরিবারের নামে বরাদ্দকৃত ঘরের তালা ভেঙে অন্যজনকে সেই ঘরগুলো দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউএনও’র বিরুদ্ধে।

অনিয়মিত বসবাসের অজুহাতে বা কারণে এমনকি রাদ্দকৃত পরিবারের অনুপস্থিতে নোটিশ বিহীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায়ের তত্বাবধানে এমন কান্ড হয়েছে বলে জানা যায়। সান্তাহার ইউনিয়ন ছাতনী এলাকায় আশ্রয়ন প্রকল্পের ওই ঘরে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় চলছে ব্যাপক সমালোচনার ঝড়।

জানা যায়, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে গত বছরে উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন ছাতনী এলাকায় অবস্থিত প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ১৪ টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সান্তাহার ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডের ১৪ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে দলিল ও ভূমি অফিসের খারিজ করা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। এরপর থেকে সেখানে নিয়মিত বসবাস করে আসছিলেন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবাররা। তবে ৮-১০ টি পরিবার নিয়মিত বসবাস করলেও কয়েক মাস পর থেকে নানা সমস্যার কারণে মানিক হোসেন, তাঁরা বানুসহ ৪ টি পরিবার অনিয়মিতভাবে থাকতে শুরু করেন। আর তাদের অনুপস্থিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায়ের তত্বাবধানে কোনোরকম নোটিশ ছাড়াই ওই ৪ টি পারিবারের ঘরের তালা ভেঙে মালামাল বের করা হয়েছে। এরপর পূর্বের বরাদ্দকৃত পরিবারকে বঞ্চিত করে অন্য ৪ জনকে ওই ঘরটিতে বসবাসের জন্য করে দিয়েছেন তিনি (ইউএনও)। ফলে বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও বঞ্চিত করা ভুক্তভোগী ওই চার পরিবার নিজের ঘর ফিরে পেতে প্রভাবশালীদের দুয়ারে ঘুরছে।

বরাদ্দকৃত ঘরের মালিক মানিক হোসেন ও তাঁরা বানু জানান, ঘর পাবার পর থেকে নিয়মিত থাকতাম। ব্যবহারের জন্য ঘরের আসবাবপত্র সেখানে নিয়ে গেছি। কাজের জায়গা নিজ গ্রাম দমদমা থেকে এখানে দুরত্ব বেশি। সেজন্য অনিয়মিত থাকা হয়ে যায়। আর এখানে ৯ টি ওয়ার্ডের লোক বসবাস করে। একেকজন একেক রকম। কেউ নেশা করে থাকার পরিবেশ নষ্ট করছে। তবে প্রতিমাসে অন্যদের মতো কারেন্ট বিল প্রদান করি। আমাদের না বলে ঘরের তালা ভেঙে সমস্ত মালামাল বাহিরে রাখা হয়েছে। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। আমরা গৃহহীন দেখেই আমাদের নামে কাগজপত্র করে দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আইনগতভাবে ঘরের বৈধ মালিক আমরা। তবে কোন রকম ঘর বাতিল বা ছাড়তে হবে এমন নোটিশ কখনো পাইনি। এখন নিজের ঘর থেকে আমাদের জোর করে বের করে দেওয়া হলো। আমরা আবারও ঘরটিতে ফিরতে চাই।

নতুন আশ্রয় নেওয়া দুটি পরিবার অঞ্জনা ও নাজমুল হোসেন জানান, আমরা শুধু আবেদন করেছি মাত্র। ঘরের দলিল বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমরা এখনো পাইনি। এভাবে বসবাস করতে বলা হয়েছে। তাই আমাদের ঘরের আসবাবপত্র নিয়ে উঠেছি।

আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায় জানান, নির্দেশনা অনুযায়ী সকল কাজ করা হয়েছে। তাদের বরাদ্দ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। নোটিশ করার কোনো প্রয়োজন নাই। লোকের মাধ্যমে মৌখিকভাবে তাদের বলা হয়েছে। তারা থাকে না তাই এখন কিছু করার নাই।

বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, ঘরে না থাকার কারণে তাদের ঘরের তালা ভাঙা হয়েছে। তবে তাদের নোটিশ করা হয়নি। আইনগত ভাবে পূর্বের বরাদ্দ বাতিল করে নতুন বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।


তথ্যসূত্রঃ দৈনিক অধিকার


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট