১লা জুলাই, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই আষাঢ়, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২২
বন্যার পানিতে ডুবে গেছে দেশের একটি বিরাট অঞ্চল। দিন দিন বানভাসী মানুষের সংখ্যা বাড়ছেই। বানভাসী এ মানুষেরা নানান ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত। তারা ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়সহ নানান ধরনের পেটের পীড়া, চোখ ওঠা,মশার ও সাপের উপদ্রবে দিশেহারা।
ডায়রিয়া
বন্যার সময় সবচেয়ে বেশি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায় খাবার পানি। বিশুদ্ধ পানি পান না করার দরুন হতে পারে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, আমাশয় ও হেপাটাইটিসের মতো অসুখ। এ সময় পানি অবশ্যই ফুটিয়ে পান করতে হবে। একটি পরিষ্কার পাত্রে পানি সংগ্রহ করে প্রথমেই কিছুণের জন্য রেখে দিন। তলানি পড়লে উপরের পরিষ্কার পানি আলাদা পাত্রে ঢেলে নিয়ে ফুটান। পানি ফুটতে শুরু করলে আরো ১০ মিনিট পর্যন্ত ফুটিয়ে পান করুন। তবে ছোট্ট শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের এ পানি পান না করাই ভালো। তাদের জন্য বোতলজাত পানি পান করতে হবে। ফুটানো সম্ভব না হলে কোরিনের মাধ্যমে পানি বিশুদ্ধ করা যায়। এক গ্যালন পানিতে ১ কাপের চতুর্থাংশ ব্লিচিং পাউডার বা ফিটকিরি (৪-৬% কোরিনযুক্ত) দিয়ে ভালোভাবে মেশানোর পর ৩০ মিনিট ধরে অপো করতে হবে। তলানি পরলে উপরের পরিষ্কার পানি পান করতে হবে। এছাড়া ট্যাবলেটের মাধ্যমেও পানি বিশুদ্ধ করা যায়। ১টি হ্যালোট্যাব ২০ লিটার পানিতে দিয়ে ৩০ মিনিট ধরে অপো করার পর পানি পান করতে পারেন।
সাপে কামড়
বন্যার সময়কালীন যত মৃত্যু হয় তার মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে সাপেকাটা। বন্যার সময় সাপ তাদের আবাস হারিয়ে শুকনো স্থানে মানুষের সাথে অবস্থান নেয়। এ জন্য সাপে কাটার পরিমাণ বেড়ে যায়। বিষহীন সাপে কাটলে ভয়ের কিছু নেই তবে বিষধর সাপে কাটলে রোগীকে বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে নিতে হবে। যদি সাপে কাটা স্থানে দুটি বা একটি ত চিহ্ন দেখা যায় সেই সাথে সাপে কাটা স্থানে তীব্র ব্যথা বা জ্বালা করা, স্থানটি ফুলে লাল হয়ে গেলে, রক্তিম রস রণ হলে, ঘুম ঘুম ভাব, মাথাব্যথা ও মাথা ঝিম ঝিম করা, বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া, রক্ত বমি, দুর্বলতা, একটি জিনিস দুটি দেখা, শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে বুঝতে হবে বিষধর সাপে কেটেছে। কিন্তু যদি ছোট ছোট অস্পষ্টভাবে অনেকগুলো দাঁতের চিহ্ন দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে সাপটি বিষহীন। প্রথমে সাপে কাটা রোগীকে বোঝাতে হবে ভয়ের কিছু নেই। সেই সাথে সাহস জোগাতে হবে। রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য ব্যবস্থা করতে থাকুন আর কেউ একজন প্রাথমিক সেবা প্রদান করুন। রোগীকে শুইয়ে দিয়ে যে অঙ্গে সাপ দংশন করেছে সে অঙ্গটি নড়াচড়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিতে হবে। হাড় ভেঙে গেলে যেভাবে বাঁশের কঞ্চি বা সোজা লাঠি দিয়ে ব্যান্ডেজ করা হয় সেভাবে বাঁধুন। হাত-পায়ে দংশনের েেত্র একটি মোটা কাপড় বা গামছা দিয়ে পুরো হাত-পা পেঁচিয়ে দিন বা দংশিত স্থানের ওপরে খুব শক্ত না হয় এমন করে গিট দিন। অসংখ্য শক্ত গিট দেবেন না। এতে করে দংশিত অঙ্গে পচন ধরতে পারে। দংশিত স্থান ভিজা কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার ব্যান্ডেজ বা কাপড় দিয়ে আবৃত করে রাখুন। দংশিত স্থানের আশপাশে কাটাকাটি করবেন না, সুই ফোটাবেন না, রক্ত চুষে বের করবেন না, বিভিন্ন গাছ-লতাপাতার রস, গোবর লাগাবেন না। যদি কথা বলতে বা গিলতে সমস্যা দেখা দেয় তবে কোনো কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। ওঁঝা-বৈদ্যের কাছে সময় নষ্ট না করে রোগীকে হাসপাতালে দ্রুত স্থানান্তর করুন। হাসপাতালে রোগীকে অ্যান্টিভেনাম, টিটেনাস প্রতিষেধক দিতে হবে।
চোখ ওঠা
বন্যার সময় ও পরে চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হন অনেকেই। এটা হয় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে। চোখ ওঠলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ৪-৮ ঘণ্টা পর পর অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ যেমন কোরামফেনিকল দিতে হবে। কোনো ড্রপ একবার ব্যবহার করলে অন্য কেউ তা ব্যবহার করবেন না। পরিষ্কার হাতে পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করুন। নোংরা-ময়লা পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করবেন না। চোখ ডলবেন না। অপরিষ্কার হাত চোখে লাগাবেন না। ঘুমানোর সময় যে চোখ ওঠেছে সেই কাতে ঘুমান।
লেখক : মেডিক্যাল অফিসার মেডিসিন বিভাগ
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Executive Editor : M A Malek
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01711912127
Design and developed by M-W-D