সিলেটে গৃহবধূ সাহিনা হত্যা : পাষন্ড স্বামী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ৫:৫৮ অপরাহ্ণ, জুন ১১, ২০২২

সিলেটে গৃহবধূ সাহিনা হত্যা : পাষন্ড স্বামী গ্রেপ্তার

সিলেটের এয়ারপোর্ট থানাধীন কোনাটিলা গ্রামে গৃহবধূ সাহিনা বেগম (২১) কে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের মা মোছাঃ পরতিঙ্গা বেগম বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় এ মামলা দায়ের করেন। যার নং- ১৩/১৫৭ (তারিখ; ০৭/০৬/২০২২ইং)।

ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলার প্রধান আসামী গৃহবধুর স্বামী আব্দুল আহাদকে গ্রেপ্তার করে গত ৮ জুন তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল আহাদ কোনাটিলা গ্রামের আজিদ আলীর পুত্র।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রায় বছর খানেক আগে আসামী আব্দুল আহাদের সাথে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয় নিহত সাহিনা বেগমের। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকলোভী স্বামী ও তার পরিবার বিভিন্নভাবে যৌতুক দাবি করে আসছিল। সাহিনা বেগম যৌতুক দিতে অপরাগতা জানালে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। গত ২২ এপ্রিল পাষন্ড স্বামী আব্দুল আহাদের বাড়ি থেকে সাহিনা বেগমকে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যান মা পরতিঙ্গা বেগম। পরে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে যৌতুকের দাবিতে আর নির্যাতন করবে না মর্মে অঙ্গিকার করলে সালিশ ব্যক্তিদের পরামর্শে সাহিনাকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যান আব্দুল আহাদ। কয়েকদিন পর আবারও নির্যাতন করতে থাকে আব্দুল আহাদ ও তার বাড়ির লোকজন।

সর্বশেষ গত ৭ জুন রাত সাড়ে ১২টার দিকে মামলার ৩নং আসামীর জামাতা উসমান মিয়া ফোন দিয়ে জানান, সাহিনা বেগম আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে মেয়ের শ্বশুর বাড়ি যান পরতিঙ্গা বেগম। গিয়ে গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল আহাদের শয়ন কক্ষে লাশ দেখতে পান। নিহত সাহিনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা জখম দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।

মামলার বাদী, নিহত সাহিনা বেগমের মা পরতিঙ্গা বেগমের দাবি, তার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, যৌতুক না দেয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ওই দিনই এয়ারপোর্ট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা রেকর্ড করে। মামলার আসামীরা হলেন, সাহিনার স্বামী আব্দুল আহাদ, দেবর আলহাজ উদ্দিন, শ্বশুর আজিদ আলী, শ্বাশুরী দিলারা বেগম সহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জন।

পাষন্ড স্বামী আব্দুল আহাদকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের পর আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এদিকে সাহিনা ‘হত্যাকারীদের’ গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে রবিবার (১২ জুন) সকাল ১১টায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে।