এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ ও ছিনতাই, দুই মামলার বিচার শুরু

প্রকাশিত: ১:৪৫ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০২২

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ ও ছিনতাই, দুই মামলার বিচার শুরু

Manual7 Ad Code

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সময়ে চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (১১ মে) দুপুরে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হকের আদালতে পুলিশের দায়ের করা ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয় বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের পিপি রাশিদা সাইদা খানম।

Manual2 Ad Code

এসময় মামলায় অভিযুক্ত আট আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারী ধর্ষন মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়। কিন্তু হাইকোর্ট আলোচিত এ ঘটনায় দায়েরকৃত দুটি মামলা একই আদালতে বিচার করার জন্য আদেশ দিলে এতদিন ধর্ষন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়নি।

Manual8 Ad Code

পিপি রাশিদা জানান, এখন দুই মামলারই একসাথে সাক্ষ্যগ্রহন শুরু হবে। তবে সাক্ষ্যগ্রহণ কবে শুরু হবে এবিষয়ে তাৎক্ষনিক আদেশ দেননি বিচারক।

এরআগে ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর ৮ জনকে আসামি করে দুটি মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আসামিরা হলেন- সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাইপাড়ার সাইফুর রহমান (২৮), হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বাগুনীপাড়ার শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫) , দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার উমেদনগরের তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), জকিগঞ্জের আটগ্রামের অর্জুন লস্কর (২৬), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুরের রবিউল ইসলাম (২৫), কানাইঘাট উপজেলার লামা দলইকান্দির মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫), সিলেট নগরীর গোলাপবাগ আবাসিক এলাকার আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল (২৬) ও বিয়ানীবাজার উপজেলার নটেশ্বর গ্রামের মিজবাউল ইসলাম রাজনকে (২৭)।

বহুল আলোচিত এই মামলায় ৫১ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে।

Manual3 Ad Code

উল্লেখ্য ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট নগরীর বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী (২৫)। করোনার কারণে বন্ধ থাকা ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর তাদের মারধর করে টাকাপয়সাও ছিনিয়ে নেয় ধর্ষকরা। ওই রাতেই নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।


মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে নববিবাহিত স্ত্রীকে প্রাইভেটকারে করে শাহপরান মাজারে বেড়াতে গিয়েছিলেন নগরের দক্ষিণ সুরমার জৈনপুর এলাকার এক যুবক। ফেরার পথে সন্ধ্যার দিকে টিলাগড়ে এমসি কলেজের মূল ফটকের সামনে থামেন তারা। এসময় কয়েকজন তরুণ এসে ওই যুবকের স্ত্রীকে ঘিরে ধরেন। একপর্যায়ে প্রাইভেটকারসহ ওই যুবককে সস্ত্রীক বালুচরে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যান তরুণরা। এরপর যুবককে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে প্রাইভেটকারের মধ্যেই ধর্ষণ করেন ৫/৬ জন। পরে এই দম্পতিকে মারধর করে তাদের কাছে থাকা টাকাপয়সা, স্বর্ণালাকার ছিনিয়ে নেন ধর্ষকরা। আটকে রাখেন প্রাইভেটকারও। ছাত্রাবাস থেকে ছাড়া পেয়ে টিলাগড় পয়েন্টে এসে পুলিশকে ফোন করেন নির্যাতিতার স্বামী। পরে পুলিশ গিয়ে ছাত্রাবাস থেকে ওই দম্পতির প্রাইভেটকার উদ্ধার করে এবং নির্যাতিতা তরুণীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান অভিযুক্তরা।

ওই রাতেই ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করে শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতার স্বামী। মামলায় আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।

মামলা দায়েরের পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও ঘটনার ৩ দিনের মধ্যে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে এজাহারভুক্ত আসামি সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম এবং সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কোনো পদে না থাকলেও গ্রেপ্তার হওয়া সকলেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত বলে স্থানীয় ও কলেজ সূত্রে জানা যায়।

Manual6 Ad Code

গ্রেপ্তারের পর তাদের প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে সকলেই ধর্ষণের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। আসামীরা সকলেই কারাগারে রয়েছেন।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code